odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Saturday, 15th November 2025, ১৫th November ২০২৫

মধুর ক্যান্টিনে সংঘর্ষের ঘটনার তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি

Akbar | প্রকাশিত: ১৪ May ২০১৯ ১৩:২০

Akbar
প্রকাশিত: ১৪ May ২০১৯ ১৩:২০

ডেস্ক, ১৪ মে (অধিকারপত্র): পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর সোমবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রলীগের দুগ্রুপের মারামারির ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। কমিটিকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন- ছাত্রলীগের নতুন কমিটির সহসভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, আইনবিষয়ক সম্পাদক ফুয়াদ হোসেন শাহাদাৎ ও তথ্য গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক পল্বব কুমার বর্মণ।

ছাত্রলীগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমবার ইফতার-পরবর্তী সময়ে মধুর ক্যান্টিনে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত ঘটনা হয়েছে, আমরা ছাত্রলীগ পরিবার তার তীব্র নিন্দা জানাই। সেই সঙ্গে ওই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির লক্ষ্যে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো।

তদন্ত কমিটিকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সরেজমিন অনুসন্ধান করে তথ্য-উপাত্তসহ প্রতিবেদন দফতর সেলে জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত দীর্ঘ নাটকীয়তা শেষে সম্মেলনের এক বছর পর সোমবার ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে বিবাহিত, অছাত্র, হত্যা ও মাদক মামলার আসামিদের পদ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পদবঞ্চিতদের।

সোমবার দুপুরের দিকে কমিটির তালিকা নিয়ে গণভবনে যান ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। তারা ৩০১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির সদস্যদের সম্পর্কে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করেন।

গণভবন থেকে বের হয়ে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী জানান, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা কমিটির অনুমোদন দিয়েছেন। এর পর ফেসবুকে কমিটি প্রকাশ করা হয়।

যদিও প্রকাশিত কমিটির ওপরে তারিখ লেখা রয়েছে ১১ মে। ফলে এ নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি তৈরি হয় প্রথম। কমিটি প্রকাশের পরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জড়ো হতে থাকে পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া নেতা-নেত্রীরা।

তারা কমিটি প্রত্যাখ্যান করে ইফতারের পূর্বেই বিক্ষোভ শুরু করেন। ওই বিক্ষোভে অংশ নেয়া নারী নেত্রীদের ওপর পদপ্রাপ্ত নেতারা হামলা করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

ছাত্রলীগের নবঘোষিত ৩০১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের একটি অংশ বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বর থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মধুর ক্যান্টিনের সামনে গেলে নতুন কমিটিতে পদ পাওয়া একজন সহসভাপতি ও দুজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে মিছিলে হামলা চালানো হয়।

লাঞ্ছিত করা হয় ডাকসুর সদস্য ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় অর্থবিষয়ক উপসম্পাদক ও ঢাবির সুফিয়া কামাল হলের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক তিলোত্তমা শিকদার এবং ডাকসুর কমনরুম ও ক্যাফেটারিয়া সম্পাদক এবং রোকেয়া হল ছাত্রলীগের সভাপতি বিএম লিপি আক্তারকে। পরে তারা সেখান থেকে বিক্ষোভ করে রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হন।

মিছিলে পদবঞ্চিত অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেয়। পদবঞ্চিত নেতারা সবাই সাবেক সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইনের অনুসারী। যাদের অধিকাংশই সর্বশেষ সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী ছিলেন। ইফতারের পর ফের মধুর ক্যান্টিনের উত্তর পাশে জড়ো হন পদবঞ্চিতরা।

সেখানে তারা কমিটি পুনর্গঠন করে সবার সমন্বয়ে তা গঠনের দাবি জানান। তারা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অবস্থান তুলে ধরবেন বলে জানান। অন্যদিকে মধুর ক্যান্টিনের দক্ষিণ পাশে ও ক্যান্টিনের বাইরে অবস্থান নেন বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা।

পরে সদ্য বিদায়ী কমিটির প্রচার সম্পাদক সাইফ উদ্দিন বাবু সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য শুরু করলে বর্তমান নেতাদের অনুসারীরা ব্যানার ছিঁড়ে নেয় এবং চেয়ার উঠিয়ে হামলা চালায়। এর পর শুরু হয় দুপক্ষের হাতাহাতি।

এ সময় বর্তমান নেতৃত্বের অনুসারীদের হামলায় আহত হন- ডাকসুর কমনরুম ও ক্যাফেটারিয়া সম্পাদক বিএম লিপি আক্তার, ক্রীড়া সম্পাদক তানভীর শাকিল, সদস্য তিলোত্তমা শিকদার, সদস্য নিপো ইসলাম তন্বী, সদ্য বিদায়ী কমিটির কর্মসূচি ও পরিকল্পনা সম্পাদক রাকিব হোসেন, রোকেয়া হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণী দিশা, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণী শায়লা।

প্রসঙ্গত গত বছরের ১১ ও ১২ মে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন ছাড়াই ছাত্রলীগের দুই দিনব্যাপী ২৯তম জাতীয় সম্মেলন শেষ হয়। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলন হয় ২৯ এপ্রিল। সম্মেলনের আড়াই মাস পর ৩১ জুলাই রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি এবং গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: