রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী-স্থানীয়দের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধের প্রতিবাদ জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। নেতৃবৃন্দ বলেন রাবি প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে নিপীড়নের পথ সুগম হবে।

বুধবার (১৫ মার্চ) দুপুরে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট এর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল এবং সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান এক যুক্ত বিবৃতিতে এসব জানান।

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয় মুক্ত চিন্তার সূতিকাগার এবং নতুন জ্ঞান সৃষ্টির আধার। উন্মুক্ত পরিবেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারণার প্রধান শর্ত। বিভিন্ন মতের মানুষ এখানে এসে মিলিত হবে, চিন্তার আদান প্রদান করবে এমনটাই হবার কথা। তাছাড়া এ সিদ্ধান্ত ক্রমান্বয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে জনগণের মনোযোগ হতে আড়াল করবে যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে নিপীড়নের পথ সুগম হবে।

তাঁরা আরও বলেন, ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে আঁতাত ব্যতীত ক্যাম্পাসে কারো পক্ষেই কোন প্রকার অপকর্ম করা সম্ভব নয়। কাজেই কেবলমাত্র ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনে সন্ত্রাস দখলদারিত্ব রুখে দেয়া গেলেই ক্যাম্পাসকে নিরাপদ করা সম্ভব।"
ইতোমধ্যেই স্পষ্ট হয়েছে ১১ই মার্চের সংঘর্ষ ছিলো মূলত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ এবং স্থানীয় সন্ত্রাসীদের দ্বন্দ্ব। যার ফলে সাধারণ শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মাঝে চলমান বৈরিতাকে আরো উসকে দিবে বলে জানান তাঁরা।

যৌথ বিবৃতিতে তাঁরা আরও বলেন, "অতীত অভিজ্ঞতা থেকে এটা স্পষ্ট বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে জনবিচ্ছিন্ন করার প্রবণতা রাষ্ট্রের শিক্ষা বিনাশী পরিকল্পনার অংশ। শনিবারে ঘটনায় যখন বহু শিক্ষার্থী গুরুতর আহত, তখন শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে স্থায়ী নিরাপত্তা নিশ্চিতে দখলদারিত্ব মুক্ত শতভাগ আবাসন, ছাত্র প্রতিনিধি তৈরিতে রাকসু নির্বাচন, সংঘর্ষের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সহ নানান দাবি উঠে আসছে। তখন সেসব যৌক্তিক দাবিকে উপেক্ষা করে বহিরাগত নিষিদ্ধের মাধ্যমে প্রশাসন পূর্ব নির্ধারিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে পরিস্থিতির সদ্ব্যবহার করলো মাত্র।

এ সময় অবিলম্বে প্রশাসনকে বহিরাগত নিষিদ্ধের অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে সন্ত্রাস ও দখলদারিত্ব মুক্ত গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস গড়ে তোলার দাবি জানান তাঁরা। অন্যথায় শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করে এর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার হুশিয়ারি দেন।

এর আগে, গত ১৩ মার্চ (সোমবার) বিকেলে
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের অকারণে প্রবেশ ও যত্রতত্র ঘোরাফেরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।