09/29/2025 সাদিয়া ইসলাম মৌ: লম্বা গড়ন, মায়াবী চোখ আর আবেদনময়ী সৌন্দর্যে বাংলাদেশের নাচ-অভিনয়ের উজ্জ্বল নক্ষত্র
odhikarpatra
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২১:২০
নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা:
বাংলাদেশের বিনোদন জগতের জনপ্রিয়তম নামগুলোর একটি সাদিয়া ইসলাম মৌ। তিনি একাধারে মডেল, নৃত্যশিল্পী, অভিনেত্রী ও আবেদনময়ী তারকা। ১৯৮০-এর দশকের শেষ দিক থেকে শুরু হওয়া ক্যারিয়ার এখনও সমানতালে এগিয়ে চলছে। নাচ, ফ্যাশন ও অভিনয়ে সমান দক্ষতার কারণে তিনি হয়েছেন দর্শকের প্রিয় শিল্পী এবং দেশের সাংস্কৃতিক ভুবনের উজ্জ্বল নক্ষত্র।
ঢাকাতেই জন্ম ও বেড়ে ওঠা সাদিয়া ইসলাম মৌয়ের শৈশব কেটেছে সাংস্কৃতিক পরিবেশে। অল্প বয়সেই নৃত্যশিল্পের প্রতি গভীর আগ্রহ জন্ম নেয় তাঁর মনে। পরিবারের অনুপ্রেরণায় তিনি বিভিন্ন নৃত্যগুরুদের কাছে তালিম নেন। শাস্ত্রীয় নৃত্য, লোকনৃত্য ও আধুনিক ধারার নাচে সমান পারদর্শিতা অর্জন করেন। শিক্ষাজীবনের পাশাপাশি সংস্কৃতিচর্চা তাঁকে গড়ে তোলে বহুমাত্রিক শিল্পী হিসেবে।
১৯৮০-এর দশকের শেষ দিকে বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করে আলোচনায় আসেন মৌ। খুব দ্রুতই তিনি হয়ে ওঠেন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় মডেল। টেলিভিশন বিজ্ঞাপন, প্রিন্ট মিডিয়া ও ফ্যাশন শো—সব জায়গাতেই তাঁর স্বাভাবিক উপস্থিতি, সৌন্দর্য ও আত্মবিশ্বাস তাঁকে আলাদা পরিচিতি এনে দেয়।
তৎকালীন সময়ে মৌ ছিলেন বাংলাদেশের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম আইকন। তরুণ প্রজন্মের কাছে তিনি হয়ে ওঠেন নতুন প্রজন্মের স্টাইল আইডল।
নৃত্যই মৌয়ের মূল পরিচয়। টেলিভিশন অনুষ্ঠান, মঞ্চ পরিবেশনা এবং আন্তর্জাতিক আসরে তিনি তাঁর অনবদ্য পরিবেশনার জন্য ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন। শাস্ত্রীয় নৃত্যে ভরপুর প্রকাশভঙ্গি এবং আধুনিক নাচে তাঁর অভিনব কোরিওগ্রাফি দর্শককে করেছে মুগ্ধ।
তিনি বিশ্বাস করেন, নাচ শুধু বিনোদন নয়—এটি সংস্কৃতি সংরক্ষণের একটি মাধ্যম। সেই ভাবনা থেকেই তিনি এখনও নৃত্যচর্চা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মডেলিং ও নৃত্যের পাশাপাশি নাটকেও অভিনয় করেছেন মৌ। খ্যাতিমান নির্মাতাদের নাটকে অভিনয় করে তিনি দর্শকের প্রশংসা পেয়েছেন। তাঁর অভিনয়ে ছিল স্বাভাবিকতা, আবেগের প্রকাশ এবং চরিত্রের সঙ্গে মানানসই পরিবেশনা।
১৯৯৭ সালে সাদিয়া ইসলাম মৌ বিয়ে করেন জনপ্রিয় অভিনেতা জাহিদ হাসানকে। সুখী এই দম্পতির সংসারে রয়েছে দুই সন্তান—মেয়ে পুষ্পিতা এবং ছেলে পূর্ণো। শিল্পী পরিবার হওয়ায় তাঁদের ঘর-সংসার ভরে থাকে শিল্পচর্চা ও সংস্কৃতির আবহে।
সাদিয়া ইসলাম মৌ শুধুই প্রতিভাবান শিল্পী নন, তিনি ছিলেন ৯০-এর দশক থেকে এক আবেদনময়ী রূপসীও। মঞ্চে তাঁর ক্যারিশমাটিক উপস্থিতি, ফ্যাশন সচেতনতা ও স্বতঃস্ফূর্ত ভঙ্গি তাঁকে দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনায় রেখেছে। এখনো বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আয়োজনে তাঁর উপস্থিতি দর্শকদের কাছে বাড়তি আকর্ষণ হিসেবে বিবেচিত হয়।
বাংলাদেশের বিজ্ঞাপনশিল্প, নৃত্যাঙ্গন ও টেলিভিশন নাটকে মৌয়ের অবদান অসামান্য। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনি পেয়েছেন অসংখ্য সম্মাননা ও স্বীকৃতি। নতুন প্রজন্মের শিল্পীরা তাঁকে দেখে অনুপ্রাণিত হন।
তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে বিনোদন জগতে সমানতালে কাজ করে যাচ্ছেন সাদিয়া ইসলাম মৌ। নাচ, মডেলিং, অভিনয়—সবক্ষেত্রেই তিনি রেখে গেছেন সাফল্যের স্বাক্ষর। তাঁর দীর্ঘ পথচলা প্রমাণ করে দেয়, প্রতিভা ও অধ্যবসায় থাকলে একজন শিল্পী দীর্ঘসময় ধরে দর্শক হৃদয়ে রাজত্ব করতে পারেন।
অধিকারপত্র/ বিন