10/02/2025 আওয়ামী লীগ এখনও দল হিসেবে বৈধ, শুধু কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে
odhikarpatra
১ অক্টোবর ২০২৫ ২৩:৫৮
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক সফরে আছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। সফরের ফাঁকে তিনি ডিজিটাল সংবাদমাধ্যম জিটিও’র সাংবাদিক মেহদি হাসানকে সাক্ষাৎকার দেন। সেখানে জুলাইয়ের গণ–অভ্যুত্থান, আওয়ামী লীগ সরকারের পতন, শেখ হাসিনার দেশত্যাগ, ভারতের আশ্রয়, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিতাদেশ, নির্বাচনসহ নানা বিষয়ে খোলামেলা মতামত দেন তিনি।
অধিকারপত্র ডটকমের পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারের একটি বড় অংশ হুবহু প্রশ্নোত্তর আকারে তুলে ধরা হলো।
মেহদি হাসান: বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, জিটিওতে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
অধ্যাপক ইউনূস: আমন্ত্রণের জন্য ধন্যবাদ।
মেহদি হাসান: আমাদের সর্বশেষ আলাপ হয়েছিল ২০১৭ সালে, তখন আপনি শান্তিতে নোবেলজয়ী একজন অর্থনীতিবিদ ছিলেন, কিন্তু কোনো রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে ছিলেন না। গত বছর ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার সরকার পতন ঘটে। প্রায় দুই দশক ধরে তিনি একনায়কতান্ত্রিকভাবে দেশ চালিয়েছেন এবং নানা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। তাঁর পতনের মুহূর্তে আপনার প্রতিক্রিয়া কী ছিল?
অধ্যাপক ইউনূস: সেটা ছিল অত্যন্ত রোমাঞ্চকর। আমি কল্পনাও করিনি যে এমনটা ঘটবে। খবরটা যখন এল যে তিনি দেশ ছেড়েছেন, সেটি ছিল চমকপ্রদ।
মেহদি হাসান: বিপ্লবের এক বছর পার হওয়ার পর দেশের পরিস্থিতি কেমন?
অধ্যাপক ইউনূস: মানুষের মধ্যে এখনো উত্তেজনা, আশাবাদ আছে। তবে কিছুটা হতাশাও আছে—কারণ মানুষ চায় সবকিছু দ্রুত হোক। উচ্চ প্রত্যাশা থেকেই এই হতাশা।
মেহদি হাসান: ছাত্র আন্দোলনের পর আপনাকে কেন নেতৃত্বে আনা হলো বলে মনে করেন?
অধ্যাপক ইউনূস: প্রথমে আমি রাজি হইনি। কিন্তু ছাত্ররা বলল, তারা রক্ত দিয়েছে, আত্মত্যাগ করেছে। দেশের ভবিষ্যতের জন্য কাউকে এগিয়ে আসতে হবে। তাদের সেই আহ্বানে সাড়া দিয়েই আমি দায়িত্ব নেই।
মেহদি হাসান: শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ উঠেছে। তিনি এখন ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁকে ফেরানোর বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আপনার আলোচনা হয়েছে?
অধ্যাপক ইউনূস: আমি নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁকে বলেছি, যদি রাখতেই চান, তাহলে অন্তত বাংলাদেশের বিষয়ে তাঁর হস্তক্ষেপ বন্ধ করুন। মোদি বলেছিলেন, তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না।
মেহদি হাসান: আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত করার বিষয়ে সমালোচনা হচ্ছে। অমর্ত্য সেন পর্যন্ত বলেছেন, এটা পুরোনো সরকারের ভুলের পুনরাবৃত্তি। এ সমালোচনার জবাব কী দেবেন?
অধ্যাপক ইউনূস: এটা ভুল সমালোচনা। আমরা দলটিকে নিষিদ্ধ করিনি, শুধু কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। তারা আপাতত নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না, তবে ভবিষ্যতে স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়া হতে পারে।
মেহদি হাসান: কিন্তু তাদের লাখো সমর্থক ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হবে না কি?
অধ্যাপক ইউনূস: তারা ভোট দিতে পারবে, তবে আওয়ামী লীগের প্রতীক থাকবে না। সমর্থকদের জন্য অনেক বিকল্প আছে। আওয়ামী লীগ এখনও দল হিসেবে বৈধ, শুধু কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।
চলবে পরবর্তী অংশ :........