11/14/2025 প্রতিষ্ঠা হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধু এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়’
Akbar
২৬ May ২০১৯ ১৩:৫৭
ঢাকা: দক্ষ বৈমানিক, বিমান প্রকৌশলী ও মহাকাশ গবেষণায় জনবল তৈরি করতে দেশে প্রথম এভিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে সরকার। রাজধানীর আসকোনায় প্রস্তাবিত অত্যাধুনিক ও শতভাগ তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর এ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য পরিকল্পনা, অর্থ বরাদ্দ ও স্থান নির্বাচনের কাজ শেষ হয়েছে। এই পাবলিক বিশ্বদ্যিালয়টির নাম করণ করা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়’।
এ বিদ্যাপিঠে অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংসহ বিমান ও আকাশ বিজ্ঞানের প্রকৌশল, আইসিটি ও বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় পড়ানো হবে। শুরুতে তিনটি ফ্যাকাল্টির অধীনে ১০টি বিভাগ চালু করা হবে। এরই মধ্যে বিভাগগুলোর জন্য স্নাতক ও স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামের আন্তর্জাতিক মানের পাঠ্যক্রম প্রণয়ন করা হয়েছে। সম্পূর্ণ তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর বিশেষায়িত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এখন চলছে আইন তৈরির কাজ।
মন্ত্রিসভা থেকে অনুমোদন পেলেই তা আইন মন্ত্রণালয় ও ব্যয়সংক্রান্ত বিষয়ের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। নিয়মানুযায়ী, আইন ও অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পেলে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পরই আইনটির চূড়ান্তভাবে অনুমোদন ও পাসের জন্য জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হবে।
গত বছর ২৪ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় পাবলিক এভিয়েশন ইউনিভার্সিটি স্থাপনে খসড়া আইন প্রস্তুত করতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) নির্দেশনা দেয়। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী বিমানবাহিনীর প্রতিনিধিসহ ইউজিসি বঙ্গবন্ধু এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় আইনের খসড়া তৈরি করে গত বছরের ১১ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সূত্রে জানা গেছে, এটিই হচ্ছে দেশের প্রথম এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিষয়ে বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়। তাই রাজধানীর আশকোনা এলাকায় ১২ একর জমির ওপর এভিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা করা হবে। সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে ২০২৫ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ায় এবং ২০৩০ সালের মধ্যে এশিয়ার একটি অত্যাধুনিক ও নেতৃস্থানীয় উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) মো. আবদুল্লাহ আল হাসান চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী তিন জেলায় তিনটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে কাজ শুরু করেছি। খসড়া আইনটি মন্ত্রিসভায় পাস হলে পরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে জানা গেছে, বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ঢাকায় ‘বঙ্গবন্ধু এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়টি’প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরই মধ্যে এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় সম্মতি দিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসংক্রান্ত সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হলে গত বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর নীতিগত অনুমোদন দেন। একই বছরের ২৪ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় পাবলিক এভিয়েশন ইউনিভার্সিটি স্থাপনে খসড়া আইন প্রস্তুত করতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) নির্দেশনা দেয়। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী বিমানবাহিনীর প্রতিনিধিসহ ইউজিসি ‘বঙ্গবন্ধু এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়’ আইনের খসড়া তৈরি করে ২০১৮ সালের ১১ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়। পরে খসড়া আইনটি বাংলাদেশ বিমানবাহিনী পুনঃনিরীক্ষার সময় তাদের বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ দেয়।
পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি আইনসহ অন্যান্য বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে খসড়াটির পরিমার্জন ও সংযোজন-বিয়োজন করে গত বছরের ৭ মে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় পুনঃমতামতসহ খসড়াটি পাঠিয়ে দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু মূল খসড়া আইন থেকে ভাইস চ্যান্সেলরসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব বাদ দিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার ২০ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিকে ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে নিয়োগের প্রস্তাব করে মতামত দেয় মন্ত্রণালয়। গত ১০ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে বিমানবাহিনীর পরিকল্পনা শাখা ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে নতুন প্রস্তাব দেয়।
প্রস্তাবে বিভিন্ন দেশের উদাহরণ তুলে ধরে বলা হয়-পোল্যান্ড, ইউক্রেন, যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য দেশে এভিয়েশন ইউনিভার্সিটি আইন এবং পাশের দেশ ভারতের রাজীব গান্ধী ন্যাশনাল এভিয়েশন ইউনিভার্সিটি আইন (অ্যাক্ট) পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় পূনঃমতামতের সময় ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসংক্রান্ত সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হলে গত বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী এর নীতিগত অনুমোদন দেন।
কিন্তু বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় পুনঃমতামতের সময় ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগের ক্ষেত্রে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন শিক্ষককে নিয়োগের প্রস্তাব করে। এতে সংশয় দেখা দিলে তা নিয়ে এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।