
সিরাজদিখানে শোক সভা পন্ড করে বিএনপি নেতার ভাইয়ের বিয়ের দাওয়াতে গেলেন আ'লীগ নেতা!

মোহাম্মদ রোমান হাওলাদার,সিরাজদিখান (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার কোলা ইউনিয়নের কোলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় আঙিনায় ২১ আগস্ট শুক্রবার বিকাল ৩ টায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের শাহাদাৎ বার্ষিকি ও ১৫ ই আগষ্ট জাতীর শোক দিবস উপলক্ষ্যে শোক সভার আয়োজন করে কোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ। শোক সভায় উপস্থিত থাকার জন্য কোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীকে দাওয়াতও করা হয়। ওইদিন আয়োজিত শোক সভা পন্ড করে কোলা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু তাহেরের ছোট ভাই আবু কালাম খানের বিয়ের দাওয়াতে উপস্থিত হন কোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি (ইউপি সদস্য) মো. কপাশের হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম তারন। এদিকে শোক সভায় যোগ দিতে আসা শতাধিক নেতাকর্মী বিয়ের কারণে শোক সভা পন্ড করায় চোখে মুখে ক্ষোভ নিয়ে বাড়ী ফিরে যেতে দেখা যায়। এ নিয়ে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
এদের মধ্যে অনেককেই বলতে শোনা যায়, শোক সভার চেয়ে তার কাছে বিয়েটা বড় মনে হলো। তাও আবার বিএনপি নেতার ভাইয়ের বিয়ে! যদি তিনি বিয়ে খেতেই যাবেন তাহলে শোক সভার আয়োজন না করলেও পারতেন। আর আমাদের এখানে না ডাকলেই পারতেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক
রফিকুল ইসলাম তারন ছাত্রলীগ নেতা আসিফ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি। একসময় কোলা ইউনিয়ন বিএনপির অঙ্গ সংগঠন যুবদলের দলের সভাপতি ছিলেন। তিনি ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। স্থানীয় লোকজন তাকে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চেনেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, তিনি শোক সভার আয়োজন করে নেতাকর্মীদের সাথে তামাশা করলেন। বঙ্গবন্ধুর জন্য যদি তার নূনতম মহব্বত থাকতো তাহলে তিনি বিয়ের দাওয়াত বাদ দিয়ে শোক সভাকেই প্রাধান্য দিতেন।
কোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সহ- সভাপতি জাহাঙ্গীর খান বাবু বলেন, কোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এই সম্মেলনে অনুপ্রবেশকারীদের হাতের নেতৃত্ব তুলে দেয়া হয়েছে বলে জেলাও কেন্দ্রে অভিযোগ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের নিষ্পত্তি হয়নি। কেন্দ্রের নির্দেশ উপেক্ষা করে বিএনপির দলীয় নেতাদের হাতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব তুলে দিলে এমনটাই হবে। শোকের মাস আগস্ট অথচ অনুপ্রবেশকারীদের কারণে কোলা ইউনিয়নে পালন করতে দেয়া হলো না আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের। বিএনপি-জামাত জোটের কঠিন সবাই আমারা হামলা মামলা উপেক্ষা করেও ১৫ ই আগস্ট পালন করেছি। কোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীদের আজ কোণঠাসা করে রাখা হয়েছে। আমরা কেন্দ্র ও জেলার দিকে তাকিয়ে আছি। ইনশাআল্লাহ সামনে পরিবর্তন আসবে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হাতে হারানো নেতৃত্ব তুলে দেয়া হবে। অনুপ্রবেশকারীরা বিতাড়িত হবে।
কোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম তারণ বলেন, আমি বিএনপি সভাপতি আবু তাহেরের ছোট ভাইয়ের বিয়েতে ছিলাম। সকালে সবাইকে ফোন দিয়ে না করে দিয়েছি অনুষ্ঠান হবে না। এই বৃষ্টির মধ্যে কি সাংবাদিকরা রান্না করে দিয়ে যাবে? এ কথা বলার পর তিনি রাগন্বিত কন্ঠে আরোও বলেন, কত বড় নিউজ করবেন যান করেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: