ঢাকা | মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২
এ টি এম শামসুজ্জামান

চেয়েছিলেন একজন সাহিত্যিক হবেন হয়েগেলেন অভিনেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২৩:৫৯

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২৩:৫৯

শহীদুল ইসলাম

 

চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য আজীবন সম্মাননা পাওয়া প্রায়াত এ টি এম শামসুজ্জামান। তাঁর পুরো নাম আবু তোরাব মোহাম্মদ শামসুজ্জামান। তিনি একজন কাহিনিকার, সংলাপ রচয়িতা, চিত্রনাট্যকার, চলচ্চিত্র পরিচালক ও অভিনেতা ছিলেন।

ছাত্রজীবনে চেয়েছিলেন একজন সাহিত্যিক হবেন। এ জন্য স্কুলের সাময়িকীতে ‘অবহেলা’ শিরোনামে একটি ছোটগল্প ছাপা হয়েছিল। সেসময় গল্পটি পড়ে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ প্রশংসা করেছিলেন। রণেশ দাশগুপ্ত তাঁকে বিভিন্ন সময়ে লেখার ব্যাপারে পরামর্শদাতা হিসেবে ভূমিকা পালন করেছেন। মূলত সে সময়ের বিখ্যাত লেখক, সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ, ভাষাবিজ্ঞানী ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সত্যেন সেন, রণেশ দাশগুপ্ত প্রমুখের অনুপ্রেরণায় তিনি সাংস্কৃতিক অঙ্গনে এসেছিলেন। সুদীর্ঘ তার এই পথ চলায় ৫০ বছর অভিনয় করেছেন এ টি এম শামসুজ্জামান।

শুরুটা কছিলেন ১৯৬৫ সালে ‘ন্যায়ী জিন্দেগি’ ছবি দিয়ে , যা শেষ পর্যন্ত মুক্তি পায়নি। এ সময় এ টি এম শামসুজ্জামান ছোটখাটো চরিত্রে অভিনয় করতেন। ১৯৭৪ সালে তিনি আমজাদ হোসেন পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘নয়নমণি’তে অভিনয়ের সুযোগ পান। মন্দ লোকের চরিত্রে অভিনয় করে এ টি এম শামসুজ্জামান তাঁর অভিনয়জীবনের ‘টার্নিং পয়েন্ট’ এ পৌঁছে যান, ছবিটিও দর্শকপ্রিয়তা পায়। ফলে, পরিচালকেরাও তাঁকে একের পর এক খলনায়ক চরিত্রে নিতে থাকেন।

এ টি এম শামসুজ্জামান পরিচালিত প্রথম ছবি,  ২০০৯ সালে প্রথম পরিচালনা করেন শাবনূর-রিয়াজ জুটিকে নিয়ে ‘এবাদত’ নামের ছবিটি। ছবিটি একই সালে মুক্তি পায়। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি অসংখ্য নাটকেও অভিনয় করেছেন তিনি।

এ জন্য পেয়েছেন পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। শিল্পকলায় অবদানের জন্য ২০১৫ সালে পেয়েছেন একুশে পদক। তবে এ পর্যন্ত শতাধিক চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্যকার এবং তিন শতাধিক চলচ্চিত্রের অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান আজও তাঁর শ্রেষ্ঠ অভিনয়টি করতে পারেননি বলে আফসোস করতেন।

তিনি চেয়েছিলেন এমন অভিনয় করবেন, যাঁর জন্য বাংলাদেশের দর্শক তাঁকে সারা জীবন মনে রাখবে। তাঁর আশা ছিল, পুরোপুরি সুস্থ হয়ে আবার অভিনয়জগতে ফিরবেন। মনের মতো চরিত্রে অভিনয় করবেন। কিন্তু মহাকাল তাঁর সে ইচ্ছা পূরণ করতে দেয়নি। তিনি চলে গেছেন অনতিক্রমণীয় দূরত্বে। পারি জমালেন না ফেরার দেশে।

এত কিছু পাওয়ার পরেও একদিন অঝোরে কেঁদেছিলেন শামসুজ্জামান । বলেছিলেন, আরেক জনম যদি পেতাম, তাহলে আবারও অভিনয়জগতে আসতাম। আমার অভিনয়ে পর‌্যাপ্ত সৃষ্টিশীলতা ছিল না, যদি আরেক জনম পেতাম, তাহলে আবারও অভিনয়জগতে সৃষ্টিশীলতা আসতাম।

শহীদুল/



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: