ঢাকা | বৃহঃস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২
সিরাজদিখানে

রোপা আমন ধানের বাম্পার ফলন কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক।

মো. আহসানুল ইসলাম আমিন | প্রকাশিত: ৯ নভেম্বর ২০২২ ০৩:১৬

মো. আহসানুল ইসলাম আমিন
প্রকাশিত: ৯ নভেম্বর ২০২২ ০৩:১৬

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় এবার ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলন পাওয়ায় কৃষকদের মুখে হাসির ঝিলিক লক্ষ্য করা গেছে। পাকা ধান ঘরে তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। কৃষকরা জানান, এবছর জুলাই মাসের শাঝামাঝি সময়ে কৃষকরা তাদের জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ করেন। বর্তমানে কৃষকদের জমিগুলোতে পাকা ধান বাতাসে দোল খাচ্ছে। কৃষকরা এখন পুরোদমে ধান কেটে বাড়ীতে নিয়ে ধান মাড়াই করার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কয়েকজন কৃষকের সাথে আলাপকালে তারা জানান, ভালো ফসল উৎপাদনের স্বপ্ন নিয়েই তারা এবছর জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ করেন। বর্ষার সময়টিতে নিয়মিত বৃষ্টি হওয়াতে কৃষকদেরকে তাদের জমিতে কোন প্রকার পানি দিতে হয়নি।  বর্তমানে জমিগুলোতে  রিষ্ট পুষ্ট ধান দেখে কৃষকদের মুখে হাঁসি ফুটেছে। কিছু কিছু কৃষক জমি থেকে ধান কেটে ঘরে তোলছেন। চলতি সাপ্তাহের মধ্যে কৃষকরা পাকা ধান কৃষকরা ঘরে তোলার কাজটি সম্পন্ন করবেন। রোপা আমন ধান আবাদে এবছর প্রতি হেক্টর জমি থেকে  ৪.৫ মেট্রিক টণ ধান পাচ্ছেন কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্র জানায়, এবছর সিরাজদিখানে ১৮শ হেক্টর জমিতে কৃষকরা রোপা আমান ধানের আবাদ করেছেন। যা অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি । দিন দিন এই ধানের আবাদে কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠছেন। ফলন ভালো পাওয়াতে কৃষকরা প্রতি বছর বেশি বেশি পরিমান জমিতে রোপা আমন ধান আবাদ করছেন।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, জমিগুলোতে সোনালী পাঁকা ধানে প্রকৃতিতে নতুন আল্পনা এঁকেছেন। জমিতে একবার নিরানি, সামান্য পরিমান সার ছিটানো এবং পোঁকামাকড় ধবংস করার কিনটাশক ছাড়া ধান উৎপাদনে কৃষকদের তেমন একটা খরচ লাগেনি। জমিগুলোতে ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকদের মুখে হাঁসি ফুটেছে। কৃষকরা জমি থেকে ধান কাটা, ধান মাথায় বোঝা করে বাড়ীতে নিয়ে যাওয়ার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অপরদিকে পিছিয়ে নেই কৃষক পরিবারের কৃষানীরা। তারাও ধান মাড়াই করার পর ধান শুকানো ও ধানের চিটা পরিস্কার করার কাজটি করছেন।

কৃষক আজিজুল লস্কর জানান, এবছর আবহাওয়া অনুকূলে ছিলো তাই ধানে বাম্পার ফলণ হয়েছে। জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে জমিতে ধানের আবাদ করা হয়েছিলো। এই ধানের জমি পানিতে ঢুবলেও ধান গাছের সমস্যা হয় না। তবে পেঁকে যাওয়ার পর প্রাকৃতিক দূর্যোগ ছাড়া ধান আবাদে কোন ক্ষতির সম্ভাবনা নেই বলে। তিনি আরো জানান, আধুনিক কৃষি পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষকরা উঁচু কিংবা নিচু সব ধরনের জমিতেই এবছর রোপা আমন ধানের আবাদ করেছেন। এই ধানের গাছ পানিতে ডুবে গেলেও কোন সমস্যা নেই। কৃষকরা তাদের যার যার জমির উপর নির্ভর করে বিভিন্ন জাতের ধানের বীজ বপন করেন।

ইছাপুরা এলাকার কৃষক সিরাজ মিয়া জানান, মাত্র দুই বছর আগে সিরাজদিখানে ২ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ হতো। বর্তমানে প্রায় ২০ হেক্টর জমিতে আবাদ হচ্ছে এই ধান। প্রতি বছর এই ধানের আবাদের পরিমান বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি আরো জানান, এবছর তিনি তার জমি থেকে প্রায় ৪০ মন ধান পাবেন। এছাড়াও এলাকার সকল কৃষকরা রোপা আমন ধানে বাম্পার ফলন পেয়েছে বলেও জানান তিনি।

সিরাজদিখান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মুহাম্মদ মোশারফ হোসেন জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও সিরাজদিখান উপজেলার কৃষকরা তাদের জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ করেছেন। এবছর ১৮শ হেক্টর জমিতে ধান আবাদ করা হয়েছে। কৃষকরা ইতোমধ্যে ৫শ হেক্টর জমির ধান ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি আরো জানান, প্রতি হেক্টরে কৃষকরা ধান পাচ্ছে ৪.৫ মেট্রিক টন । প্রতি বছর শুধুমাত্র সিরাজদিখানেই বেশি আবাদ হচ্ছে রোপা আমন ধান। ধানসহ যেকোন ফসল উৎপাদনে কৃষকদের কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি ।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: