
প্রধান প্রতিবেদক :
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে অটোচালক মো. নেকবর হোসেন হত্যা মামলার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই মুলহোতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তা্র করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো,হত্যাকান্ডের মুলহোতা আপন মামা মো. জাবেদ (৩৭), তার সহযোগী মো. রেজাউল (২৭) এবং মো. শাহাজালাল (২৭)।
মঙ্গলবার ৩ অক্টোবর হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘন্টার মধ্যে সিরাজদিখান থানা পুলিশ সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করে উপজেলার বাসাইল ও বালুচর ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডের মুলহোতা মো. জাবেদ ও তার সহযোগী মো. রেজাউলকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারকৃত অপর আসামী মো. শাহাজালালকে তাদের দেয়া তথ্যে ও দেখানোমতে অত্র থানাধীন কৃষ্ণনগর এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়। এবং হত্যাকান্ডের ব্যবহৃত রশি ও অটোরিকশা উদ্ধার করে থানা পুলিশ। আজ বুধবার ৪ (অক্টোবর) সকালে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন সহকারী পুলিশ সুপার ( সিরাজদিখান সার্কেল) মোস্তাফিজুর রহমান রিফাত ।
ব্রিফিংয়ে বলা হয়, গত ২ অক্টোবর অনুমান সাড়ে ৬ টারদিকে উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের খাসকান্দী গ্রামের রেলওয়ে রাস্তার ৩৩৪ ও ৩৩৫নং পিলারের মাঝখানে রাস্তার উত্তর পাশে পানিতে ভাসমান অবস্থায় নেকবর হোসেন (২২), পিতা: মৃত শাহজাহান মিয়া, সাং-চর গুলগুলিয়া, থানা: সিরাজদিখান, জেলা: মুন্সীগঞ্জ এর মৃত দেহ পাওয়া যায়। সে পবিত্র কোরআনের হাফেজ এবং পেশায় ইজিবাইক চালক ছিলো। পুলিশ মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্নয়ের লক্ষ্যে ময়না তদন্তের জন্য মৃতদেহ মুন্সিগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে ভিকটিমের বড় ভাই মো. তোফাজ্জেল হোসেন (৩৭) বাদী হয়ে থানায় এজাহার দায়ের করিলে মামলা রুজু করা হয়।
পুলিশ মামলাটি অত্যান্ত গুরুত্বের সাথে তদন্ত পূর্বক তথ্য প্রযক্তির সহায়তায় ২৪ ঘন্টার মধ্যে ভিকটিমকে হত্যার প্রধান আসামী ভিকটিমের আপন মামা মো. জাবেদ (৩৭), পিতা-মৃত আরাফাত আলী, মাতা-মৃত গোলাপী বেগম, সাং-চর গুলগুলিয়া, থানা-সিরাজদিখান, জেলা-মুন্সীগঞ্জকে চর গুলগুলিয়া হতে ভিকটিমের কবরখোড়া অবস্থায় প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে গ্রহন ও পরে গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে এক পর্যায় তার দেখানো মতে হত্যাকাণ্ডের অপর সহযোগী আসামী যশোর জেলার মনিরামপুর থানার কাঠালতলী গ্রামের মো. আলী আকবর এর ছেলে মো. রেজাউলকে সিরাজদিখান উপজেলার চর গুলগুলিয়া গ্রামের ভাড়া বাড়ী হতে গ্রেফতার করা হয়।
আসামীদ্বয়কে জিজ্ঞাসাবাদে তাহারা প্রথমিক ভাবে স্বীকার করে যে তাহারা ভিকটিম মো.নেকবর হোসেনকে হত্যা করে তার ব্যবহৃত ইজি বাইকটি ছিনিয়ে নিয়ে অপর আসামী মো. শাহাজালাল এর কাছে বিক্রয় করেছে।
ধৃত আসামীদ্বয়ের কথামতো নারায়নগঞ্জ থেকে আসামী মো. শাহাজালালকে ভিকটিমের ব্যবহৃত ইজি বাইক সহ গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা প্রাথমিক ভাবে স্বীকার করে যে নগদ অর্থের প্রয়োজনে দুজনে মিলে পরিকল্পিতভাবে ভিকটিম মো. নেকবর হোসেনকে গলায় রশি দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তার ব্যবহৃত ইজিবাইকটি ছিনিয়ে নিয়ে আসামী মো. শাহাজালাল (২৭), পিতা-মৃত নুর ইসলাম, মাতা-মৃত শাহিনুর বেগম, সাং-কৃষ্ণনগর, থানা-সিরাজদিখান, জেলা-মুন্সীগঞ্জ এর কাছে ৩৫,০০০/-টাকায় বিক্রয় করেন।
মো. জাবেদ পেশায় ইজিবাইকের মিস্ত্রী ও অপর আসামী রেজাউল ইজি বাইকচালক এবং এই সূত্রে আসামীদের মধ্যে সু-সম্পর্ক ছিল। তাদের দেখানোমতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত রশি উদ্ধার করা হয়।আসামী শাহাজালালকে জিজ্ঞাসাবাদে তার দেয়া তথ্য ও দেখানোমতে নারায়নগঞ্জ জেলার নারায়নগঞ্জ থানাধীন ডিগ্রীরচর এলাকা হতে ছিনতাইকৃত ইজিবাইকের বিচ্ছিন্ন অংশ সমূহ উদ্ধার পূর্বক জব্দ করেন পুলিশ। উল্লেখ্য গত ১ অক্টোবর নিখোঁজের একদিন পর ২ অক্টোবর মো.নেকবর হোসেন (২২) নামের এক অটোচালকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।নিহতের বড় ভাই মো. তোফাজ্জেল হোসেন (৩৭) বাদী হয়ে থানায় এজাহার দায়ের করেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: