
আট বছর ধরে অকেজো পড়ে থাকা জেলার খানসামা উপজেলার কালামাটিয়া নদীর ওপর নির্মিত সংযোগ সড়কহীন সেতু ভেঙে সংযোগ সড়ক স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগের অবসান হতে চলেছে।
এলাকাবাসীর দুর্ভোগের চিত্র তুলে ধরে বাসস থেকে এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ প্রকাশের পর সেতুটি ভেঙে সংযোগ সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।
দিনাজপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা প্রকৌশলী মো. আনিসুর রহমান বাসসকে বলেন, ২০১৪ সালে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতায় ৪৭ লাখ ৪২ হাজার ৭১৮ টাকা ব্যয়ে জেলার আলোকঝাড়ি ইউনিয়নের বাসুলী গ্রামে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের ৩ বছরের মধ্যেই ২০১৭ সালের বন্যায় সেতুটির এক পাশের সংযোগ সড়ক ভেঙে যায়। এর পর গত ৮ বছরে সড়ক সংযোগ মেরামত ও পুনর্গঠন করা হয়নি। ফলে ওই এলাকায় জনসাধারণ চরম দুর্ভোগের শিকার হয়।
তিনি বলেন, গত এপ্রিল মাসে এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন বাসস থেকে অনলাইনে প্রকাশিত হয়। পরে সংবাদটি বাসস এর উদ্ধৃতি দিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ব্যাপকভাবে প্রকাশিত হয়। ‘দিনাজপুরে মাঠের মধ্যে পড়ে আছে ৪৭ লাখ টাকার সেতু’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হলে বিষয়টি সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। জেলা প্রশাসন বিষয়টি দ্রুত আমলে নিলে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) সড়ক সংযোগ স্থাপন ও সেতুটি পুনঃনির্মাণের উদ্যোগ নেয়। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে স্বস্তি ও আনন্দ বিরাজ করছে।
আলোকঝাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের খবর। সংবাদ প্রকাশের দারুণ প্রভাব পড়েছে সেতু নির্মাণ ও সড়ক সংযোগ কাজে।’
স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. আব্দুল মালেক বলেন, ‘আমরা অনেক কষ্টে পারাপার হই। এবার আশার মুখ দেখতে পেয়েছি। সেতুটি হলে আমাদের দুঃখ লাঘব হবে।’
খানসামা উপজেলার প্রকৌশলী শাহ মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘কালামাটিয়া নদীর ওপর মরিয়ম বাজারের নিকট সেতুটি দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। বর্তমানে সেতুটি অপসারণের কাজ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজও দ্রুত এগিয়ে চলেছে। সেতু অপসারণ করা হলে, নতুন সেতু নির্মাণ কার্যক্রম শুরু হবে। নতুন সেতুটি আধুনিক মানসম্মত টেকসই পদ্ধতিতে নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। আশা করি নতুন সেতু নির্মাণের ফলে জনগণের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি দূর হবে।
খানসামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান সরকার বলেন, ‘সংবাদ প্রকাশের পর আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করেছি। সড়ক ও সেতু নিয়ে যে পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে, অল্প সময়ের মধ্যেই তা দৃশ্যমান হবে। সেতুটি নির্মাণ ও সড়ক সংযোগ স্থাপন করা হলে জনদুর্ভোগ থেকে ওই এলাকার মানুষ পরিত্রাণ পাবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: