ঢাকা | বৃহঃস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ইস্পাত শিল্পে চীনের ভর্তুকি বিশ্ববাজারকে অস্থির করে তুলেছে

odhikarpatra | প্রকাশিত: ২৭ মে ২০২৫ ২২:১৪

odhikarpatra
প্রকাশিত: ২৭ মে ২০২৫ ২২:১৪

ইস্পাত শিল্পে চীনের ভর্তুকি বিশ্ববাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। এছাড়া শিল্পে কার্বন নিঃসরণ কমানোর (ডিকার্বনাইজেশন) বিনিয়োগকে বাধাগ্রস্ত করার পাশাপাশি সব দেশের জন্য সমান প্রতিযোগিতার সুযোগ বাধাগ্রস্ত করছে বলে জানিয়েছে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি)।


 মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে প্যারিস থেকে এএফপি জানিয়েছে, চীন বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইস্পাত উৎপাদনকারী দেশ। ২০২৪ সালে দেশটি ১ বিলিয়ন টনের বেশি ইস্পাত উৎপাদন করেছে। কিন্তু চীনের অভ্যন্তরীণ চাহিদা কমে যাওয়ায় তারা বিদেশে বেশি রপ্তানির দিকে ঝুঁকেছে।

ওইসিডি বলেছে, বিশ্ব ইস্পাত বাজার এখন 'অ বাজার সূলভ আচরণ করছে। ফলে যেসব উৎপাদক পণ্য উৎপাদনে ভর্তুকি পায় না, তারা টিকে থাকতে পারছে না। চীনের ইস্পাত ভর্তুকির হার অন্যান্য দেশের তুলনায় প্রায় পাঁচ গুণ বেশি।

২০২০ সালের পর থেকে চীনের ইস্পাত রপ্তানি দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে ২০২৪ সালে রেকর্ড ১১.৮ কোটি টনে পৌঁছেছে। অপরদিকে আমদানি প্রায় ৮০ শতাংশ কমে মাত্র ৮.৭ লাখ টনে নেমে এসেছে। 

চীনের অভ্যন্তরীণ বাজারে বিশেষ করে রিয়েল এস্টেট খাতে মন্দা থাকায় ইস্পাতের চাহিদা কমে গেছে। এর ফলে বড় বড় প্রতিষ্ঠান যেমন আংগাং স্টিল বিশাল ক্ষতির মুখে পড়েছে।

ওইসিডি’র ‘স্টিল আউটলুক ২০২৫’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের এই অতিরিক্ত রপ্তানির ফলে অন্যান্য দেশ তাদের নিজস্ব রপ্তানি কমাতে বাধ্য হচ্ছে এবং আমদানি বাড়াতে হচ্ছে। ২০২০ সাল থেকে এ পর্যন্ত ইউরোপ, জাপান, কোরিয়া, উত্তর আমেরিকা, তুরস্ক, দক্ষিণ আমেরিকা ও ওশেনিয়া সবখানে ইস্পাত আমদানি ১৩ থেকে ৭৭ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। 

চীনের সস্তা ইস্পাতের কারণে অন্য দেশগুলোর বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অনেক উন্নয়নশীল দেশ যেমন উত্তর আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া নিজেরাও অতিরিক্ত উৎপাদন সমস্যায় ভুগছে। ফলে, তারা আবার ওইসিডি দেশগুলোতে রপ্তানি করছে।

২০২৪ সালে শুধু ইস্পাত পণ্য নিয়ে ৮১টি অ্যান্টিডাম্পিং মামলা করা হয়েছে। যার ৮০ শতাংশ ছিল এশিয়ার উৎপাদকদের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশই চীনের বিরুদ্ধে।

এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র ২০২৪ সালে আমদানি করা সব ইস্পাতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। ব্রিটেনে, চীনা মালিকানাধীন একটি ইস্পাত কারখানা বন্ধের হুমকির পর জরুরি আইন করে রাষ্ট্র কারখানাটি দখল নেয়।

সস্তা ইস্পাতের কারণে পরিবেশবান্ধব কারখানায় বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। যেখানে ইস্পাত উৎপাদন বিশ্বব্যাপী মোট সিওটু নির্গমনের ৮ শতাংশের জন্য দায়ী।

ওইসিডি  বলেছে, ‘যতদিন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী অতিরিক্ত উৎপাদন ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে না আসে, ততদিন ইস্পাত শিল্প লাভজনক অবস্থায় ফিরতে পারবে না। এ সমস্যার সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জরুরি।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: