
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে গ্রেফতার করা যথার্থ। গত মাসে সড়ক নিরাপত্তার দাবিতে ছাত্র বিক্ষোভের সময় গুজব ছড়িয়ে সহিংসতায় উসকানি দেওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি উস্কানি দিতে পেরেছেন কারণ তার সেলিব্রেটি ইমেজ রয়েছে। উস্কানির পরও তার পক্ষে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সরব তত্পরতা লক্ষ্য করা গেছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম রিয়েল ক্লিয়ার পলিটিকসে লেখা এক নিবন্ধে তিনি আরো বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দ্রুত সহিংসতায় রূপ নেয়। এই ভয়ঙ্কর পরিবর্তনের জন্য দায়ীদের অন্যতম বাংলাদেশি আলোকচিত্রী শহিদুল আলম।’ সজীব ওয়াজেদ জয় প্রকাশিত ওই নিবন্ধটি তার ফেসবুকে পোস্ট করেন।
গত ৫ আগস্ট নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় আলোকচিত্রী ও পাঠশালার প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল আলমকে। সজীব ওয়াজেদ জয় লিখেছেন, ঢাকায় দুই স্কুল শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর দুঃখভারাক্রান্ত ছাত্ররা সড়ক দখলে নিয়ে সড়ক নিরাপত্তার দাবি তুললে সরকার শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে হ্যাঁ সূচক সম্মতি দেয়। সরকার ট্রাফিক আইন জোরালো ও অনিয়ন্ত্রিত যান চালানোর দণ্ড বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিলে অল্প সময়েই বিক্ষোভ সফলতা পায়। কিন্তু বাংলাদেশের বিরোধীদলের নেতারা এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কর্মীরা কখনও কখনও ছাত্রদের পোশাক পরে ছাত্রদের বিক্ষোভের মধ্যে অনুপ্রবেশ করে। তবে বিএনপির উস্কানি বেশিদূর অগ্রসর হতে পারেনি বলেও ওই নিবন্ধে দাবি করেন জয়। নিবন্ধে জয় আরও লিখেছেন, বিএনপির সঙ্গে এই খেলায় অংশ নেন শহিদুল আলম। আর সে কারণে সঠিকভাবেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি সামাজিক ও প্রথাগত সংবাদমাধ্যম ব্যবহার করে ছাত্র মৃত্যুর ভুয়া তথ্য ছড়াতে থাকেন। আর এই তথ্য ক্ষমতাসীন দলের প্রধান কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে সহিংসতায় উস্কানি দেয়।
ওই নিবন্ধে লেখা হয়েছে, তার এই ভুয়া তথ্য ছড়ানো এবং উস্কানিমূলক বিবৃতির জন্য চালানো হামলায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এক কর্মী চিরতরে অন্ধ হওয়া ছাড়াও অনেকে আহত হয়েছেন। ভিন্নমতের কারণে পুলিশ শহিদুল আলমকে গ্রেফতার করেনি উল্লেখ করে জয় লিখেছেন, তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে সত্যিকার ক্ষতি করার উদ্দেশে দেওয়া সাম্প্রতিক বক্তব্যের জন্য। আলমের বক্তব্য একটি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকে বেআইনি সহিংসতায় পরিণত করতে সাহায্য করেছে। ওই নিবন্ধে আরও লেখা হয়েছে, তরুণ ছাত্রদের বিক্ষোভ দখলে নিয়ে তাদের জীবন ও অন্য অনেক বাংলাদেশির জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেওয়া রাজনীতি নয়, এটা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে শহিদুল আলম স্বাধীনভাবে কথা বলে গেছেন জানিয়ে জয় লিখেছেন, কখনও কখনও তিনি সরকারকে সমর্থন করেছেন আবার কখনও তিনি সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছেন। প্রতিটি ক্ষেত্রেই সরকার স্বাধীনভাবে তার মত প্রকাশের অধিকার রক্ষা করেছে। সব বাংলাদেশির জন্য এই মত প্রকাশের অধিকার রক্ষা করা হয় বলেও নিবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন। শহিদুল আলমকে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে সরকার জননিরাপত্তার কথা বিবেচনা করেছে জানিয়ে ওই নিবন্ধে লেখা হয়েছে, সরকারের এই পদক্ষেপ জরুরি ছিল। শহিদুল আলম কোন নিপীড়িত নন। তার কার্যক্রম বিপুল সংখ্যক মানুষের ক্ষতির কারণ হয়েছে। বৈশ্বিক রাজনৈতিক খবরাখবর ও নির্বাচনী জরিপ বিশ্লেষণের জন্য সুপরিচিত মার্কিন সংবাদমাধ্যম রিয়েল ক্লিয়ার পলিটিকসে লেখা ওই নিবন্ধে জয় লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে জনাকীর্ণ থিয়েটারে আগুন না থাকলে আগুন বলে চিত্কার করাও বেআইনি। আর শহিদুল আলম বাংলাদেশে একই কাজ করেছেন। আর তাকে এ অপরাধে সঠিকভাবেই অভিযুক্ত করা হয়েছে।
সজীব ওয়াজেদ জয় লিখেছেন, এই বছরে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সুতরাং কেউই বিস্মিত হবে না যে বিরোধীরা ৩ কোটি মানুষকে দারিদ্র্য মুক্ত করা ও গড় জাতীয় আয় প্রায় দ্বিগুণ করে ফেলাসহ সরকারের বিভিন্ন অর্জন থেকে জনগণের মনোযোগ ভিন্ন দিকে ধাবিত করে দিতে চাইবে। বিএনপি পুনরায় সহিংসতায় উস্কানি দেওয়ায় তিনি বিস্মিত হননি। তবে বিএনপি ও শহীদুল আলমের কার্যক্রম অগ্রহণযোগ্য ছিল। তিনি লেখেন, রাজনৈতিক দল হোক, প্রথিতযশা আলোকচিত্রী হোক আর যেই হোক না কেন অন্য মানুষের ক্ষতি করার অধিকার কারো নেই।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: