05/15/2025 মুন্সীগঞ্জে ডাকাতির ঘটনায় সাবেক পুলিশ সদস্যসহ ১১ ডাকাত গ্রেফতার
odhikar patra
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৯:০১
নিজস্ব প্রতিবেদক :
মুন্সিগঞ্জে পৃথক ৩ ডাকাতির ঘটনায় ১১ ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর ) দুপুরে মুন্সিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মুন্সিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান আল-মামুন।
প্রেস রিলিজে বলা হয়, গত ৮ সেপ্টেম্বর সন্ধা অনুমান ৭ টা ১০ মিনিটের সময় মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার চরডুমুরিয়া বাজারের তৃষ্ণা জুয়েলার্স এর মালিক প্রবির পাল দিন শেষে বাড়ি ফেরার পথে সদর উপজেলা ভিটিহোগলা স্টিল ব্রিজের উপর আজ্ঞাতনামা ৫ জন লোক নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে প্রবীর পালের গতিরোধ করে। পরবর্তীতে তাকে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে তার মোটরসাইকেল হতে জোরপুর্বক নামানোর চেষ্টাকালে প্রবীর পাল বাধা প্রদান করলে আজ্ঞাতনামা ৫ জন ব্যাক্তি প্রবীর পালকে তার ব্যবহৃত মোটর সাইকেলের হেমলেট দিয়ে আঘাত করে তার মটরসাইকেল সহ নগদ আনুমানিক দুই লাখ টাকা এবং বিভিন্ন ধরণের আনুমানিক ৫০ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় প্রবির পাল সদর হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ শেষে গত ৯ই সেপ্টেম্বর মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করলে বিশেষ তথ্য প্রযুক্তির সহয়তায় ওই ঘটনায় জড়িত, সাবেক পুলিশ সদস্য খলিলুর রহমান, মোহাম্মদ আলী, শামীম বেপারী এবং মো. আনোয়ার হোসেনকে আটক করে পুলিশ। লুন্ঠিত স্বর্ণ কিনার দায়ে এ ঘটনায় সবি রঞ্চন নিশি ও মিঠু কর্মকারকে ভাঙ্গা ফরিদপুর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ছিনিয়ে নেওয়া মটরসাইকেলসহ ৫ ভড়ি স্বর্ণালংঙ্কার উদ্ধার করা হয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গ্রেফতারকৃত খলিলুর রহমান এর বিরুদ্ধে ২টি, মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে ৫ টি, শামীম বেপারীর বিরুদ্ধে ১টি এবং আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ২টি মামলা রয়েছে।
এদিকে, গত ২৯ জুন সদর থানার রামপাল ইউনিয়নের মিল্কিপাড়া এলাকায় মা জুয়ের্লাসের মালিক পলাশ বাড়ৈ এর কাছ থেকে ১০ ভরি স্বর্ণলংঙ্কার ও ৩ লাখ টাকা পুলিশ পরিচয়ে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে ছিনিয়ে নেয়। ঘটনায় আটক খলিলুর রহমান, মোহাম্মদ আলী ও মো. আনোয়ার হোসেন ওই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করায় তাদের স্বীকারোক্তিমতে, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলা থেকে জড়িত জুবায়ের আলম মহসিন মোল্লাকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনায় চোরাই স্বর্ণ ক্রয়ের সঙ্গে জড়িত থাকায় মানিকগঞ্জের নিরঞ্জন হালদারকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত জুবায়ের আলমের বিরুদ্ধে ৯ টি মামলা রয়েছে বলে প্রেস ব্রিফিয়ে জানানো হয়।
অপরদিকে,গত ১২ সেপ্টেম্বর জেলার শ্রীনগর থানাধীন কেয়াটখালী সংলগ্ন ঢাকা মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের পাশে সার্ভিস রোডে অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন ডাকাত ডাকাতি করাকালে জনৈক মো. আলমগীর হোসেনের গতিরোধ করে তার নিকট থেকে মোবাইল ফোন এবং নগদ আনুমানিক ১,৯০০/- টাকা সহ লুট করে। পাশাপাশি ঘটনাস্থলে উপস্থিত অন্যান্য যানবাহনের চালক ও যাত্রীদেরকেও জিম্মি করে ডাকাতি শুরু করে। ডাকাতের উপস্থিতিতে যাত্রীরা চিৎকার শুরু করলে ঘটনাস্থলে শ্রীনগর থানার রাত্রীকালীন টহল পুলিশ উপস্থিত হয়। টহল পুলিশ অজ্ঞাতনামা ডাকাতদলের সদস্যদের পালানোর রাস্তা খোঁজাখুজির একপর্যায়ে রাস্তার পার্শ্বে একজনকে অচেতন অবস্থায় পরে থাকতে দেখে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ফিংগার প্রিন্টের মাধ্যমে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির নাম পরিচয় সনাক্ত করার পর দেখা যায় তিনি আ. মালেক ও আ. আলী যার বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ, ঢাকা; শেরেবাংলা নগর, ডিএমপি; শ্রীপুর, গাজীপুর এবং গলাচিপা থানা, পটুয়াখালীতে ৪ টি ডাকাতির মামলা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা হয় যে, উক্ত মৃতব্যক্তি ডাকাত দলের একজন সদস্য। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে শ্রীনগর থানার মামলা নং-২২ তারিখ: ১২-০৯-২০২২ খ্রিষ্টাব্দ ধারা- ৩৯৫/৩৯৭ পেনাল কোড রুজু করা হয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা পুলিশ ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) পুষ্পেন দেবনাথ তথ্য প্রযুক্তি এবং গোপনীয় সংবাদের উপর ভিত্তি করে শ্রীনগর থানার দুর্ধর্ষ ডাকাত কালাম ব্যাপারী ওরফে কসাই কালামকে কেরাণীগঞ্জ থানাধীন রসুলপুর হতে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত চাপাতি, মোবাইল এবং লুণ্ঠিত মোবাইলসহ নগদ ৩,৫০০/- টাকা উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে, উক্ত অভিযুক্তের তথ্যের ভিত্তিতে মো. রফিক এবং মো. রাকিবুল ইসলাম বাবুকে কেরাণীগঞ্জ থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়। এবং তাদের হেফাজত হতে একটি ছোরা ও দুইটি মোবাইল ফোন উদ্ধারের পাশাপাশি লুণ্ঠিত নগদ ২,৫০০/- টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত মো. রফিকের বিরুদ্ধে ডিএমপি ও ঢাকা জেলায় ০২ টি মামলা এবং কালাম ব্যাপারী ওরফে কসাই কালামের বিরুদ্ধে ঢাকা, শরীয়তপুর এবং মাগুরা জেলার বিভিন্ন থানায় ৫ টি মামলা রয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, ৩টি মামলায় বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য প্রমাণের উপর ভিত্তি করে মামলার তদন্ত কার্যক্রম সমাপ্তকরত পরবর্তীতে পুলিশ রিপোর্ট দাখিল করা হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপস্) মো. আদিবুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ইয়াসিনা ফেরদৌস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মুন্সীগঞ্জ সার্কেল) মো. মিনহাজ-উল-ইসলাম, ওসি (ডিবি) আবুল কালাম আজাদ, সদর থানার (ওসি) তারিকুজ্জামান সহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।