05/05/2025 ন্যায় ভ্রষ্ট রায় ও এক নীতিহীন উকিল
gazi anowar
৩১ জানুয়ারী ২০২৩ ২৩:১৪
”মায়ের কাছে থাকবে জাপানি দুই শিশু” এই খবরটি স্তম্বিত হবার মতো। বাংলাদেশের সমাজ তথা মুসলিম সমাজ ব্যবস্থাকেই চ্যালেঞ্জ করা ও সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী একটি রায়।
১. মানব সমাজে বিয়ে ও বিচ্ছেদ একটি স্বাভাবিক ঘটনা। বিচ্ছেদের পরে বাবার কাছেই সন্তানেরা লালিত-পালিত হয়ে আসছে যদি বাবা সন্তানদেরকে ফেলে না যায়। আর মা অন্যত্র বিয়ে করে নতুন জীবন শুরু করে। এই স্বাভাবিক নিয়মে চলছে সমাজ-সংসার।
বাবার কাছেই সন্তানরা নিরাপদ থাকে। আগের ঘরের হিসেবে সন্তানরা মায়ের নতুন স্বামীর সংসারে অ্যাবিউজসহ নানা নিগ্রহের স্বীকার হয়- এরকম হাজারো প্রমান খবরে প্রকাশ পেয়েছে।
২. ইসলাম ধর্ম মতে, বিচ্ছেদের পরে স্বামীর সম্পত্তিতে স্ত্রীর কোনো মিরাস বা সম্পদের মালিকানার কোনো দাবি থাকে না। সন্তানরাও বাবার উত্তরাধিকার হিসেবে বিবেচিত।
বিচ্ছেদ পরবর্তী সময়ে সন্তানরা বালেগ বা প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া পর্যন্ত কোথায় লালিত হবে-এ রকম যে কোনো আন্ডাস্ট্যান্ডিং থাকতে পারে। এ ক্ষেত্রে ধর্মীয় কোনো বিধি-নিষেধ নেই।
৩.”মায়ের কাছে থাকবে জাপানি দুই শিশু” এই রায়টি ইসলাম ধর্ম মতে “ন্যায় ভ্রষ্ট” এবং এই রায়ের পক্ষের উকিলও নীতিহীন ব্যক্তি। যেহেতু জাপানি দুই শিশুর বাবা একজন সামর্থ্যবান মুসলিম। বাবার অধিকার ক্ষুন্ন করে সন্তানদেরকে মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়া ইসলাম এবং মানবতার চরম লঙ্ঘন।
মামলার রায়ের পরে গণমাধ্যমে দেয়া উকিলের Shishir Manir বক্তব্যটি স্বয়ং বাংলাদেশকেই অবমাননা করা হয়েছে। অর্থের লোভে হিতাহিত জ্ঞান শূন্য বক্তব্য উগরিয়ে দিয়ে বলেছেন, “সন্তানদের কল্যান বিবেচনায় সন্তানরা মায়ের কাছে থাকবেন। যেখানে তাদের শিক্ষা আছে, যেখানে তাদের জীবন আছে সেখানে তারা যাবেন। তারা তাদের হোম কান্ট্রিতে যাবেন।” এই উকিলের কথায় প্রমান হয় যে, এই দেশে শিক্ষা নেই; যারা বাস করেন তাদের জীবনও নেই।
প্রশ্ন হলো- আদালতে তাহলে লড়াইটা হয় কিসের? ন্যায়ের সঙ্গে অন্যায়ের, আইনের সঙ্গে আইনহীনতার, নাকি উন্নত দেশের সঙ্গে অনুন্নত দেশের?
আদালত কি দুই আইনজীবীর দ্বন্দ্বযুদ্ধের রিং, নাকি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পবিত্র স্থান? মান্যবর বিচারক কি দুই আইনজীবীর লড়াইয়ের রেফারি, নাকি আইনের শাসন ও ধর্মীয় রীতিনীতি প্রতিষ্ঠায় দায়বদ্ধ প্রতিষ্ঠান?
আদালত কি এ দেশের সামাজিক রীতিনীতি ও ধর্মীয় বিধান ভেঙ্গে দিতে চায়। এই রায়কে রেফারেন্স করে সামাজিক সমস্যা বাড়িয়ে দিতে চায়?