05/10/2025 তানোরে বাক প্রতিবন্ধী নাবালিকার উপর পাশবিক নির্যাতন
সারোয়ার হোসেন,তানোর প্রতিনিধি
৮ জুলাই ২০২৩ ০৫:১০
রাজশাহীর তানোরে নাবালিকা বাকপ্রতিবন্ধী (১৩)মেয়েকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে সকালে কৌশলে নিয়ে গিয়ে দিন ও রাতভর পাশবিক নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলার কলমা ইউনিয়ন( ইউপিতে) গত সোমবার সকালে নিয়ে গিয়ে রাতভর নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মেয়ের পিতা বাদী হয়ে দুই সন্তানের জনক জাহাঙ্গীর আলমকে আসামী করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তার বাড়ি কলমা ইউপি এলাকার বনগাঁগ্রামে। সে আবুল কাশেমের পুত্র।
ঘটনার পাঁচদিন অতিবাহিত হলেও থানা পুলিশের ভূমিকা একেবারেই নিরব বলে দাবি অভিযোগ কারীর। রাতভর পাশবিক নির্যাতন করে পরের দিন মঙ্গলবার বিকেলে মেম্বার মিন্টু ও মেম্বার সাজ্জাদ হোসেনের মাধ্যমে রফদফা করে মেয়েকে এনে পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হয়। এদিকে ঘটনা ধামা চাঁপা দিতে মরিয়া ইউপি সদস্য আ"লীগ নেতা সাজ্জাদ হোসেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। ফলে এমন পাশবিক ঘটনায় বিচার না পেয়ে ফুঁসে উঠেছে ভিকটিমের পরিবারসহ ইউপি বাসী।
তবে ইউপি সদস্য আ"লীগ নেতা সাজ্জাদ হোসেন জানান, সোমবার সকালে বাকপ্রতিবন্ধী নাবালক মেয়েকে তুলে নিয়ে মঙ্গলবার সকালে তাকে রেখে জাহাঙ্গীর উধাও হয়ে গেছেন। এজন্য আমি মেয়েকে মঙ্গলবার বিকেলে তার পরিবারের কাছে তুলে দেয়া হয়েছে। আপনি নাকি জাহাঙ্গীর কে সরিয়ে দিয়ে আপোষ মিমাংসা করে মেয়েকে পিতার কাছে দিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি জানান, আসলে বিচার সালিশ না মেম্বার মিন্টুসহ কয়েকজন মিলে মেয়েকে পিতার হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। থানার এস আই জাহাঙ্গীর বলেছে আপনি অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর কে পালাতে সহায়তা করেছেন প্রশ্ন করা হলে কোন সদ উত্তর না দিয়ে একই কথা বলে এড়িয়ে যান।
আরেক মেম্বার শামসুল আলম মিন্টুর কাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মেয়ের পিতার সাথে যোগাযোগ করেন সে সবকিছু জানে। আপনি ও সাজ্জাদ মেম্বার মিলে মেয়েকে তার পিতার কাছে দিয়েছেন প্রশ্ন করা হলে উত্তরে একই কথা বলেন। মেয়ের পিতার মোবাইল নম্বর চাইলে তিনি জানান আমি কাজে ব্যস্ত আছি বলে তিনিও দায় সারেন।
স্থানীয়রা জানান, জাহাঙ্গীর দুই সন্তানের পিতা, এর আগেও নারী কেলেংকারীর ঘটনা ঘটিয়েছিল। ওই সময় বিচার সালিশ না করে জেলে গেলে পুনরায় এমন অমানুবিক ঘটনা ঘটাতে পারত না। ১৩ বছরের বাকপ্রতিবন্ধী মেয়েকে দিনে রাতে নির্যাতন করবে আর থানা পুলিশ ব্যবস্থা নিবে না এটা কোন আইন। এতদিনে মামলা করে আটক করা উচিত ছিল। এভাবে ছাড়া পেলে লম্পট নারী লোভী জাহাঙ্গীর এমন ঘটনা ঘটাতেই থাকবে। কিন্তু চোখে পড়ার মত পুলিশের কোন ভূমিকা নেই। পুলিশ যদি ইচ্ছে করে গর্তের মধ্যে থাকলেও তাকে বের করতে পারবে। এমন পাশবিক অমানুবিক ঘটনার বিচার না হলে কি বলার আছে।
ভুক্তভোগীর পিতা আক্ষেপ করে বলেন, সোমবার সকালে নিয়ে গিয়ে দিনে রাতে যে নির্যাতন করেছে ভাষায় প্রকাশ করা যাবেনা। মেয়ে কথা বলতে পারেনা, তার উপর অমানুবিক মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন হয়েছে। মেম্বারেরা মেয়েকে বাড়িতে দেওয়ার পর থেকে সে ভালো ভাবে চলাফেরা ও বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না। বাকপ্রতিবন্ধী মেয়ে কখন কি করে বসে বলা মসকিল। ক্ষোভে হয় তো আত্মহত্যার মত পথও বেছে নিতে পারেন। কারন আশপাশের লোকজন মারাত্মক ঘৃনার দৃষ্টিতে দেখছেন। আমি গরীব মানুষ কি করার আছে।
অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জাহাঙ্গীর জানান, অভিযুক্তকে আটক করা যেত কিন্তু মেম্বার সাজ্জাদ ও আরেক জন পালিয়ে যেতে সহযোগীতা করেছেন। সব দায় মেম্বার সাজ্জাদের, তার জন্য আটকও করা যায়নি এবং মামলা রেকর্ড করা যায়নি। এরা কিসের জনপ্রতিনিধি আর কিসের নেতা যে অসহায়েরা বিচার পায়না। ঘটনার পাঁচদিন অতিবাহিত হয়েছে আসামী আটক বা মামলা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, অভিযুক্তকে আটক করে মামলা রেকর্ড করা হবে এবং সে কোথায় আছে কোন সংবাদ পেলে সহযোগীতা করার জন্য আহবান করেছেন তিনি।
সিনিয়র সহকারী পুলিশ গোদাগাড়ী (সার্কেল) সোহেল রানার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করলে তিনি বলেন দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল ধরনের আইন গত ব্যবস্থা নেয়া হবে।