05/05/2025 গাজায় ইসরাইলি হামলায় অন্তত ২৪ জন নিহত
odhikarpatra
১ মে ২০২৫ ২২:৪৩
গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, প্রায় দুই মাস ধরে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে ইসরাইলি অবরোধের মাঝে মধ্যরাত থেকে ইসরাইলি বোমাবর্ষণে অন্তত ২৪ জন নিহত হয়েছেন।
চলতি বছরের ১৮ মার্চ ইসরাইল হামাসের সঙ্গে দুই মাসের যুদ্ধবিরতি ভেঙে ফের সামরিক অভিযান শুরু করে। ২০২৩ সালের হামাস আক্রমণ থেকে শুরু হওয়া সংঘাতেই এ যুদ্ধের সূত্রপাত।
গাজা সিটি থেকে এএফপি জানায়, গাজার দক্ষিণে খান ইউনুসের শরণার্থী শিবিরে আবু সাহলুল পরিবারের বাড়িতে ইসরাইলি বিমান হামলায় আটজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল-মুগাইয়্যির।
তিনি জানান, গাজা সিটির আল-তুফাহ্ এলাকায় শা’আফের পূর্বে আরেক হামলায় নিহত হয়েছেন আরও চারজন।
বিভিন্ন এলাকায় চালানো সাতটি পৃথক হামলায় আরও অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে একটি হামলা হয়েছিল গাজার মধ্যাঞ্চলের দেইর আল-বালাহ কাছে বাস্তুচ্যুতদের একটি তাঁবুতে।
খান ইউনুসে প্রাণঘাতী এক হামলার পর আহমেদ আবু জরকা বলেন, ‘আমরা এখানে এসে দেখি সব বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে, আর শিশুরা, নারী ও তরুণরা বোমায় ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে আছে।’
‘এভাবে কেউ থাকতে পারে না। আর নয়, আমরা ক্লান্ত। আর নয়!আমরা জানি না কীভাবে বাঁচব। এমন বেঁচে থাকার চেয়ে বরং মরে যাওয়াই ভালো।’
এএফপির তোলা ছবিতে দেখা যায়, বাসিন্দারা ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে মরদেহ উদ্ধার করছেন, যেগুলো কম্বলে মোড়া স্ট্রেচারে করে সরিয়ে নেওয়া হয়।
খান ইউনুসের নাসের হাসপাতালে আহত এক শিশুকে কাঁদতে কাঁদতে অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামিয়ে আনতে দেখা যায় উদ্ধারকর্মীদের।
হামাস-শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার জানায়, ইসরাইল ফের হামলা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ২,৩২৬ জন নিহত হয়েছেন। পুরো যুদ্ধের শুরু থেকে এ পর্যন্ত মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২,৪১৮ জনে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরাইলের পক্ষে ১,২১৮ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন বেসামরিক নাগরিক। এএফপির হিসাব অনুযায়ী, সরকারিভাবে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ সংখ্যা জানানো হয়েছে।
সেদিন হামলাকারীরা ২৫১ জনকে অপহরণ করেছিল, যাদের মধ্যে এখনো ৫৮ জন গাজায় আটকে আছেন। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর দাবি, তাদের মধ্যে ৩৪ জন ইতোমধ্যে মারা গেছেন।
ইসরাইল বলছে, তারা অপহৃতদের মুক্ত করতে নতুন করে সামরিক অভিযান শুরু করেছে।
এই অভিযান শুরুর কয়েকদিন আগে ইসরাইল গাজায় সব ধরনের ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ করে দেয়। জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ফলকার তুর্ক এ বিষয়ে বলেন, গাজায় ‘মানবিক বিপর্যয়’ দেখা দিচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর যে জীবনের শর্ত চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তা ক্রমেই এমন হয়ে উঠছে—যাতে এই জনগোষ্ঠীর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়।