05/05/2025 জাপানী সংস্কৃতির নান্দনিকতার অপরিহার্য উপাদান: ওয়াবি-সাবি
Mahbubur Rohman Polash
১৮ মার্চ ২০১৮ ০৩:২৩
সরলতা এবং কমনীয়তা জাপানী সংস্কৃতির অপরিহার্য নান্দনিক গুনাবলি হিসেবে মনে করা হয়। সরলতা ও কমনীয়তা জাপানী সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হিসেবে আদিকাল থেকে জাপানী জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা রেখে চলেছে। জাপানীদের শান্ত স্বভাবকে, ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যের উদাহরণ স্বরূপ সহজ অলঙ্করণ, একটি ভবনের মার্জিত সৌন্দর্য ও তার বাহ্যিক সুন্দর রং এর সাথে তুলনা করা হয়। এই ধরনের গুনাবলি ছাড়াও জাপানী শিল্পকলা, সাহিত্য, মৃৎশিল্প নকশা, সহজ সুন্দর রং, জাপানী কবিতায় অসামাান্য বিচক্ষণতা এবং উভয়ই একটি সহজ ও মার্জিত সৌন্দর্যকে প্রতিফলিত করে। ওয়াবি-সাবি জাপানী শব্দ দুটি সৌন্দর্যকে প্রকাশ করে যা নির্ধারন করা খুবই কঠিন। নন্দনতাত্বিক গুনাবলি ওয়াবি-সাবির মধ্যে মধ্যযুগীয় বৌদ্ধ ধর্মের গুনাবলী কে প্রতিফলিত করে। যখন কীনা সারা দেশে বৌদ্ধধর্ম প্রচার হয় তখন থেকেই জাপানীদের মধ্যে নন্দনতাত্বিক গুনাবলি বিকশিত হয়। যা কিনা এখনও জাপানীদের ঐতিহ্যগত সংস্কৃতির একটি ফর্ম (অংশ) হিসেবে বিবেচিত।
ওয়াবি-সাবি শব্দ দুটি যৌগিক শব্দ, যার মাধ্যমে দুটি যৌগিক স্বত›ত্র অভিব্যক্তি গঠিত হয়েছে। ওয়াবি হলো একটি নান্দনিক ও নৈতিক নীতি। যা কীনা মধ্যযুগীয় ঐতিহ্যকে প্রকাশ করে। এটি একটি সহজ সরল অনাড়ম্বা জীবনের বহি:প্রকাশ ঘটায় যার মাধ্যমে একাকীত্বো নিসঙ্গতা ও বিষন্নতার প্রকাশ পায়, কিন্তু চা অনুষ্ঠান থেকে আমরা এটা বুঝতে পারি যে, একটি ঝিনুক শান্ত, যা একটি উগ্র রাষ্ট্রের মত। সাবি মধ্যযুগীয় নান্দনিকতা হিসেবে বিকশিত হয়। বৃদ্ধ বয়সের একাকীত্ব, প্রশান্তি, অধিগ্রহণ, বাধাহীন পদত্যাগ ইত্যাদি গুনাবলিকে প্রতিফলিত করে। ওয়াবি ক্রিয়া যার বিশেষ্য ওয়াবা বিশেষণ ওয়াবাশি যার অর্থ পরিক্ষিত পরিশোধিত বর্তমানকে ইঙ্গিত প্রদান করে। কিন্তু ওয়াবি সম্পর্কিত অভিব্যক্তি সবসময় নান্দনিক মান হিসেবে বিবেচিত ছিল না। মূলত এর মধ্যে লুকায়িত ছিল আত্মবিশ্বাসহীনতা, দুশ্চিন্তা বা প্রতিকুল অবস্থা। প্রথম মাইওসু এর মধ্যে লিখিত পাওয়া যায়, যা মানুষের মনের মাঝে লুকায়িত ব্যথা ও প্রতিদানহীন ভালবাসার শোক প্রকাশ করে। হেইয়েন যুগে ওয়াবি সম্পর্কিত কবিতা এখনও পর্যন্ত ভালবাসার নির্জনতা, মানুষের দূর্ভাগ্য হতাশা অনুভূতি ইত্যাদিকে প্রকাশ করে। কামাকুরা আমলে বৌদ্ধ ধর্মের বিস্তার লাভের সাথে সাথে মানুষের মধ্যে এ ধরনের অভিব্যক্তি প্রতিকূল অবস্থা ও মনোভাব পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে নান্দনিক গুনাবলি বিকশিত হতে শুরু করে।
সে সময়ে সন্ন্যাসি ও কবিদের বিচরণ প্রকৃতিবাদ মূলধারার সমাজের সাথে বৈরীভাব ও তার বিকল্প কারণ হিসেবে তারা প্রকৃতির সাথে একতা গড়ে তোলে যেন তারা একটি নির্জন জীবনধারা অনুসরণ করে, তার সৌন্দর্য এবং অনাড়ম্বর জীবন যাপন শুরু করে। যা কীনা এমন এক ধরনের মনোভাব তৈরী করেছিল যে সাহিত্য কর্মের উপর তার প্রভাব ব্যাপক ভাবে প্রতিফলিত হয়। বিভিন্ন ঋতুতে যেমন শরৎ ও শীত কালের শুস্ক পাতা, তুষারের দিকে তাকিয়ে থাকা, বসন্তে পুষ্পিত ফুল, সবুজপাতার মধ্যে তারা নি:সঙ্গ অনূভুতির প্রকাশ করত। যাই হোক এ ধরনের নির্জনতার প্রতি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করাই শ্রেয়। এই জায়গা থেকে তাদের মধ্যে এমন এক ধরনের মনোভাব গড়ে ওঠে যা অবহেলিত এবং জনশূণ্য নিজস্ব সহজাত সৌন্দর্য ধারণ করে বলে মনে করা হয়। তারপর থেকেই তাদের মধ্যে একটি সহজ অনাড়ম্বর জীবন যাপন নেতৃত্বস্থানীয় রুচিশীল ভাব ধারার জন্ম নিয়েছিল। সুতরাং যদিও ওয়াবি শব্দটি মৌলিক অর্থে সেই সময়ের পূর্বে একটি দীর্ঘ সময়ের জন্য বৌদ্ধ ধর্মের নান্দনিক মানের উন্নয়নে ব্যবহৃত হত।
সাবি শব্দটি দ্বারা বৈজ্ঞানিক সৌন্দর্য্য ও বার্ধকতা সম্পর্কে বোঝানো হয়েছে। যার ক্রিয়া সাবু এবং বিশেষণ সাবিশি এবং যা কীনা একাকীত্ব, প্রাচীনত্ব সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। সাবি সম্পর্কিত শব্দ যেমন মানইয়াসু (একটি প্রাচীন সাহিত্য) যা কীনা নিঃসঙ্গ মন বা প্রকৃতির মত জনশূণ্য একটি রাষ্ট্রকে বোঝায়। সাবি শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন ফুজিয়ারা নো তসীনারি (কামাকুরা সময়সীমার প্রধান কবিদের একজন) তিনি এটিকে একটি ইতিবাচক শব্দ হিসেবে ব্যবহার করেন যা কীনা পূর্বে প্রশান্তি ও নির্জনতা জড়িত নান্দনিক গুনাবলিকে প্রকাশ করে।
কাল্পনিক ইমেজ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। সেই সময় থেকে অনেক কবি ও সাহিত্যিকদেও আরও গুনাবলি বিকশিত হয় এবং এডো সময়ের মধ্যে একটি কাব্যিক আদর্শ হিসেবে মাতসু বাসো এবং তার অনুসারীদের দ্বারা প্রতিফলিত হয়।
ধারণা করা হয় জাপানে, বৌদ্ধ ধর্মের জেন স্কুল ওয়াবি-সাবি উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। ধর্মীয় বিশ্বাসের উপর, বিশেষ করে “অস্তিত্বহীনতা” বা “শূণ্যতা” একটি গুণ যার কেন্দ্রিয় হল জেন । যা ওয়াবি-সাবির বিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অনেকের মতে তা শুধুমাত্র অস্তিত্বহীনতা কেই প্রকাশ করে। অনেকে মনে করেন “ফর্ম হচ্ছে শুধু ম্ত্রাই শূণ্যতা, কিন্ত শূণ্যতা একটি ফর্ম ছাড়া কিছুই নয়”। যেমন সন্ন্যসী সোতবা যিনি জেরিন কাইসু (জেরিন মন্দিরের কবিতা ) লিখেছেন, তার মতে ”অন¯িতত্ব” হচ্ছে তা যা কীনা সবকিছুর মধ্যে অনুপস্থিত বা স্বীকৃত না হলে সবকিছুই শূণ্যতার মধ্যে বিদ্যমান। ফুল আকাশের চাঁদ সব কিছুর মেধ্যই শূণ্যতা কাজ করে,ফুজিয়ারা নো সাদী নি¤œ লিখিত কবিতার মাধ্যমে অনস্তিত্ব ও এর মধ্যে তুলনা তুলে ধরেছেন ঃ
এই কবিতায় একটি অনস্তিত্বকে বর্ণনা করা হয়েছে। যা জাপানের বিখ্যাত নির্জন শীতকালীন দৃশ্য, যা কবি চেরী ফুলের ও তার পাতার বর্ণনার মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন।
জাপানের ঐতিহ্যগত বর্ণনায় ওয়াবি সাবির বহু উদাহরণ রয়েছে। বিশেষত চা অনুষ্ঠান এবং জাপানী ঐতিহ্যগত কবিতায় এর ব্যাপক বিস্তার রয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ চা মাস্টার (ঃবধ সধংঃবৎং ঔড় ঞধশবহড় ধহফ ঝবহ হড় জরশুঁ) মনে করেন কাব্যিক সৌন্দর্য চর্চা যা কীনা চা পান অনুষ্ঠানের মধ্যে বিদ্যমান। তারা চিন্তা করেন সৌন্দর্য সব সময় সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত হবে না,ম শূণ্যতার স্থলে শূণ্যতাই বিরজমান থাকবে। অলঙ্করণ এবং নিরাভরণ সরলতা ইত্যাদি বিভিন্ন ধর্মানুষ্ঠান ও চা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়। যা ওয়াবি সাবি কে সবসময় সৌন্দর্যের আদর্শ হিসেবে উপস্থাপিত করে। কামাকুরা সময়সীমায় ওয়াবি সাবি জেন সন্ন্যাসী, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ইত্যাদি পূর্তগীজ মিশনারি রুডিগেজ এর নি¤œ লিখিত বর্ণনায় সুষ্পস্টভাবে ফুটে ওঠে :
“এটা একটি নির্জন এবং এর ... অনুকরনে নির্জন হয়। হার্মিটস যারা পার্থিব থেকে অপসৃত সামাজিক গতিবিধি এবং খড়ের কুঁড়ে ঘরে বাস করেন এবং তারা যা কিছু দেখে ও শোনে তার মধ্যে বিনয়ের ভাব বিদ্যমান... এসবের মধ্যে রহস্য লুকিয়ে আছে যা বোঝা যায় না। ... এই সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তারা বিভিন্ন অনুষ্ঠান রীতি নীতির পালন করত যার মাধ্যমে বোঝা যায় যে, তারা নির্জন, রুক্ষ, সম্পূর্ণ চাকচিক্যহীন ও সহজ, যা প্রকৃতিগত ভাবেই তৈরী ... ”(চষঁঃং পযড়,ি ১৯৮৬, ঢ়ঢ়. ১৫৬-১৫৭).
এই বর্ণনা থেকে বাঝা যায় যে, বিভিন্ন্ অনুষ্ঠানে তারা চিন্তার উন্নতি চা পান সহ বিভিন্ন প্রকার অনুষ্ঠানের আয়োজন করত। যা কীনা ওয়াবি সাবির নান্দনিকতার মধ্যে বিদ্যমান এবং যার উপর বৌদ্ধ ধর্মের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। তারা চা পানের অনুষ্ঠানের ব্যাপক গুরুত্ব দেয়। কারণ এর মধ্যে রয়েছে নিজেদের বিশেষত্ব ঝবহ হড় জরশুঁ এর মতে , “ ওয়াবি এর সারাংশ হচ্ছে বৌদ্ধের মতামত” সরলতা, আর্দশ রাষ্ট্র চর্চার প্রয়োগ ইত্যাদি গুণাবলি বৌদ্ধের আর্দশ হিসেবে বিবেচিত। চা অনুষ্ঠানে তারা ও তাদের আশেপাশের প্রতিবেশীদের অংশগ্রহন একটি মানসিক প্রয়াশই, যেমন ওয়াবি সাবির মাধ্যমে উদ্ভিন্ন কোন অস্তিত্বের বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায় না বরং মানুষের মনে একটি ব্যাপক ভাবের সৃষ্টি করে।
ঝবহ হড় জরশুঁ উদাহরণ স্বরূপ সমালেচান করেছেন ওয়াবি সাবি, কারন ইচ্ছাকৃতভাবে এর গুরুত্বপূর্ণ উপাদান আকার অস্তিত্ব ইত্যাদিকে স্বীকার করেছে এবং সংক্ষেপে বলতে গেলে ওয়াবি সাবি একটি নান্দনিকতা যা মনের রসাস্বদনের ও সৌন্দর্যের প্রতিনিধিত্ব করে।
এছাড়াও জাপানী কবিতা বিশেষত হাইকু এর ক্ষেত্রে ওয়াবি সাবি গুরুত্বপূর্ণ। এডো সময়ের মহান কবি মাতসু বাসোড় যিনি প্রথম বারের মত সাবিকে বিশেষ্য হিসেবে ব্যবহার করেন। যদিও নান্দনিক মান হিসেবে সাবির ধারনা কিছু সময়ের জন্য বিদ্যমান ছিল। এবং এই ধরনের সাবু এবং সাবিষিশ সাবি সম্পর্কিত শব্দ আগে ব্যবহার করা হয়েছে।
বাসো ইধংযড় শিষ্যদের মতে নি¤েœর উদাহরনে সাবির ব্যবহার হয়েছে ঃ
ইয়েমাই জিজ্ঞেস করেছিল “আমাকে বল, কোন হাইকু সাবির মত?”
কাইয়োরারি উত্তর দিয়েছিল “ সাবি একটি কবিতার রং এটি নির্জনতার বর্ণনা েেদয়, ঠিক বৃদ্ধ বয়সের বৃদ্ধের মত। উদাহরণ স্বরূপ একজন বৃদ্ধ যখন বৃদ্ধ বয়সে বর্ম হাতে যুদ্ধের মাঠে নামে অথবা বানকোয়েট পোশাক পরা অবস্থায়যুদ্ধের মাঠে উপস্থিত হয়, সেখানে তার বয়স দেখা হয়না। সাবি প্রানবন্ত কবিতা সেই সাথে জনশূণ্য একটি কবিতাও বটে :
শিক্ষক বাসো এর মতে, “এটি একটি অবিশ্বাসস্য কবিতা, যা মাধ্যমে সাবির বৈশিষ্ট্য পরিপূর্ণ।”
পুষ্প প্রহরী ও তাদের রঙ্গিণ পোশাক এই দৃশ্য তুলে ধরে যে, চেরি ফুলের সৌন্দর্য্য শুভ্রকশ, তাদের শান্ত অনূভূতির চিত্র সুন্দরভাবে প্রকাশ করে। বৃদ্ধ বয়সের নি:সঙ্গতা ও এই নিশ্চুপ সৌন্দর্য্য এক অপরের বহি:প্রকাশ। এই কবিতায় বৃদ্ধলোকের সাদা চুল ও চেরি ফুলের সৌন্দর্য্য এই ইমেজ এক অপরের সাথে গভীর ভাবে জড়িত। ওয়াবি-সাবির নান্দনিক গুনাবলি এই কবিতায় উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। মানুষের মানসিক বিকাশ সাধিত হয়, সঠিকভাবে সৌন্দর্যকে বোঝার মাধ্যমে। আপাত সৌন্দর্য এই যে, প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলে বোঝার এবং হৃদয় দিয়ে গ্রহণ করার বিষয়।
এডো সময়ের বিচ্চিন্নতার পর জাপান আধুনিক সময়ে দ্রুত শিল্পায়নের দিকে ঝুঁকেছে। ফলস্বরূপ জীবনধারা পরিবর্তন সহ জাপানী জীবনে সমৃদ্ধি আরও বৃদ্ধি পায়। জাপানীদের পরিবর্তনের অন্যতম কারণ হল শিল্পকলার প্রতি মানুষের দৃষ্টি ভঙ্গির পরিবর্তন ও ঐতিহ্যগত চিন্তা ধারার পরিবর্তন। যদিও মানুষ লক্ষ লক্ষ ক্যারিগ্রাফ চা অনুষ্ঠান এবং ফুলের বিন্যাস জানার জন্য ব্যস্ত, কিন্তু বাস্তবে তারা তাদের নিজেদের স্বতন্ত্র অনুভ’তির বিকাশ ঘটাতে ব্যহত হচ্ছে। (ঐরংধসধঃংঁ ,১৯৮৭,ঢ়ঢ়.১৮-১৯) মরুমাছি থেকে এডো পর্যন্ত ওয়াবি তার নিজস্বতা দেখিয়েছে। তার পর ধীরে ধীরে সৃজনশীলতার আভাবে চা অনুষ্ঠান এবং অন্যান্য ঐতিহ্যগত শিল্পকলা চর্চা অনমনীয় হয়ে উঠেছে। সেই আচার অনুষ্ঠান (চা অনুষ্ঠান) বর্তমানে ও ভবিষ্যতেও থাকবে কিন্তু অতীতের সেই খ্যাতি আর থাকবে না। অধুনিক জাপানে ওয়াবি-সাবি বিলুপ্তির কারণ হল এর গুরুত্ব বোঝার অভাব। ওয়াবি-সাবির মধ্যে যে শৃঙ্খলা আছে বর্তমানে তা উপেক্ষিত, কারণ আজকের চা অনুষ্ঠানের রীতি বদলেছে। যা শুধু মাত্র এখন একটি মডেল হিসেবে চা অনুষ্ঠান পালিত হচ্ছে। বস্তুবাদ এখানে বড় ভ’মিকা রেখে চলেছে। এক সময়ে ওয়াবি-সাবি জাপানী জাতীয় জীবনে সৌন্দর্যের একটি আদর্শ ছিল কি›তু বাইরের বিশ্বের পরিবর্তনের সাথে সাথে আজ জাপানেও পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। এই প্রতিক’ল অবস্থার থেকে জেন মনোভাব তাদের মানসিকতার পরিবর্তন করেছে। মানুষের সুস্পষ্ট অস্তিত্ব যেমন বিদ্যমান এবং ওয়াবি-সাবি সৌন্দর্য এবং শিল্পের উন্নয়নে ব্যাপক গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা পালন করেছে। ওয়াবি-সাবি শুধুমাত্র “আপাত সৌন্দর্য্য” বা “বায়ূ ম-ল” নয়, মানুষ তা বুঝতে পারে তার ভীতরের জ্ঞান দ্বারা যা কিনা তার আত্মার মাধ্যমে অনুভ’ত হয়। মানুষ সব সময় সাধারণ জীবন যাপন করতে চাই, কিন্তু বস্তুবাদের এই যুগে তা সম্ভবপর নয়। আধুনিক জাপানীরা বিলাশ বহুল জীবন যাপন করে কিন্তু তাদের এটা বোধগম্য হওয়া উচিত যে তারা যেন তাদের ঐতিহ্যগত মূল্যবোধকে বিসর্জন না দেয়।
-মো: এরফান রাশেদ, জাপানীজ স্ট্যাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়