05/07/2025 ‘বর্তমান সরকার জনগণের ও জনবান্ধব সরকার হলে কুশাসন থেকে সরে গণতান্ত্রিকভাবে একটি নির্বাচন দিতে পারতো : আব্দুল্লাহ আল নোমান
Mahbubur Rohman Polash
৪ জুলাই ২০১৮ ২০:২৩
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, ‘বর্তমান সরকার জনগণের ও জনবান্ধব সরকার হলে কুশাসন থেকে সরে গণতান্ত্রিকভাবে একটি নির্বাচন দিতে পারতো। আমরা ভোট দিতে পারতাম। কিন্তু তা সম্ভব নয়। কারণ শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় থাকতে হবে! তার যে অপকর্ম ও অপকীর্তি, সেগুলোর কারণে ক্ষমতা থেকে চলে গেলে এ দেশের মানুষ তার বিচার করবে। বিচারের ভয়ে শেখ হাসিনা ক্ষমতা থেকে দূরে যেতে পারছেন না।’ বুধবার (৪ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে তিনি এসব কথা বলেন। সেখানে ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, বেগম জিয়ার মুক্তি ও একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে কমল একাডেমি।
নোমানের অভিযোগ, দেশে সার্বিকভাবে নৈরাজ্য চালানো হচ্ছে। সারাদেশে কোটা সংস্কারের আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীদের পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে সরকারি বাহিনী। তার কথায়, ‘আমরা মনে করি, দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা সম্ভব। আবারও সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিস্থাপন করবে বিএনপি। সংবিধানে অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ড সন্নিবেশিত করে এককেন্দ্রিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রীর অভিলাষকে আমরা চূর্ণবিচূর্ণ করে দেবো। এজন্য বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী রাজনীতির ঐক্য প্রয়োজন।’
সাবেক এই মন্ত্রীর ভাষ্য, ‘স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার যে ভূমিকা ছিল, সেই অনুপ্রেরণায় জাতীয়তাবাদী দল ও ২০ দলীয় জোট আওয়ামী লীগ বিরোধী আন্দোলন করতে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে। তিন মাস ধরে আমরা জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটি আশার আলো দেখছি। এই আলো আরও বেশি প্রজ্জ্বলিত ও বেগবান হবে। জাতীয় ঐক্য বেগবান হলে এই সরকারের পতন নিশ্চিত হবে। জাতীয় ঐক্যই আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গ টেনে নোমান বলেন, “পত্রিকায় দেখলাম, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, ‘গাজীপুর ও খুলনায় যে নির্বাচন হলো তা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি।’ নির্বাচনে যা ঘটেছে তা তো আমরা নিজেরাই দেখেছি। কমিশনারও যেখানে বলছেন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, সেখানে আমাদের দাবি— নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ এবং খুলনা ও গাজীপুরে পুনঃনির্বাচন করা।”
বিএনপির এই শীর্ষপর্যায়ের নেতার মন্তব্য, ‘আইয়ুব খানের কামান, বন্দুক ও পুলিশ সবই ছিল। কিন্তু তাকে ঠিকই পালাতে হয়েছে। দেশে আবারও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। একইভাবে ৯ বছর ঝাণ্ডা উড়িয়েছেন এরশাদ। কিন্তু রাইফেলের বন্দুক দিয়ে ক্ষমতায় থাকতে পারেননি। আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। আওয়ামী লীগও ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিল। বেশ কয়েকটি স্থানীয় সরকার নির্বাচন তারা জোর করে কেড়ে নিয়েছে। শেষ পর্যন্ত জনতার ভোটে ২০০১ সালে পরাজিত হয়েছে। কোনও নির্যাতনকারী ও ফ্যাসিস্ট জনবিচ্ছিন্ন হলে কখনও টিকতে পারে না। আওয়ামী লীগ সরকারও টিকতে পারবে বলে আমরা মনে করি না।’
বুধবারের অনুষ্ঠানে সভাপত্বি করেন কমল একাডেমি কেন্দ্রীয় সংসদের চেয়ারম্যান মঈনুল আহসান মুন্না। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রী ও জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সরোয়ার হোসেন, সাংবাদিক এমএ আজিজ প্রমুখ।