05/06/2025 ব্রিটেনের আদালত এর বিচক্ষনতার ফসল দীর্ঘ দাম্পত্য
Mahbubur Rohman Polash
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:০৪
শুনতে আজব মনে হলেও ঘটনাটা সেরকমই। নিজের স্বামীকে বারবার ডিভোর্স দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন এক নারী। আইন অনুযায়ী পুরো প্রক্রিয়াই এগিয়ে গেছে বারবার। তবে প্রতিবারই বিফল হয়েছেন তিনি। অনেক চেষ্টা করেও সম্পর্কটি ভাঙ্গা সম্ভব হয়নি তার পক্ষে। চলুন জানা যাক পুরো ঘটনাটি।
ব্রিটেনের এক দম্পতি। ১৯৭৮ সালে ঘর বাঁধেন তারা। সন্তানও জন্ম নেয় তাদের সংসারে। তবে সর্বোপরি সম্পর্কের কেমিস্ট্রি যেন কিছুতেই জমছিল না। সব কিছুর ভেতরেও কেমন একটা ফাঁক অনুভব করতেন দুজনেই। সেটা আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে সময়ের পরিক্রমায়। দুজনের দূরত্ব ক্রমশ বাড়তে থাকে। ২০১২ সালে এসে স্ত্রী কেলিয়ানা শেষ পর্যন্ত প্রেমে পড়লেন আরেক পুরুষের।
সে বছরেই বৈবাহিক সম্পর্কের অবসান ঘটাতে দ্বারস্থ হলেন আইনজীবির। প্রক্রিয়া গড়াল আদালতে। বিচারকরা রায় দিলেন, ‘অসুখী দাম্পত্য জীবন; বিয়ে ভাঙ্গার ভিত্তি হতে পারে না।’ অর্থাৎ আদালত তাদের সম্পর্ক চালিয়ে যেতে বললেন তাদের সুখ-শান্তিহীন সম্পর্ককে। কেলিয়ানা তাতে হাল ছাড়লেন না। আপিলের পর আপিল চলতে থাকল। মামলা গড়াল উচ্চ আদালতে।
শুনানি শেষে একই কথা বললেন বিচারকরা। এভাবেই কাটল আরো তিন বছর। স্বামী হাফ ওয়েনের সাথে থেকেও এসময়ে প্রেমিকের সাথে সম্পর্ক চালিয়ে গেলেন কেলিয়ানা। অবশেষে ২০১৫ সালে, কিছুটা স্বস্তি পেলেন তিনি। তার বারংবার করা আপিলের ভিত্তিতে আদালত এবার তাদের আলাদা থাকার নির্দেশ দিলেন।
সেই সাথে জানালেন, অন্তত পাঁচ বছর যদি তারা নির্বিঘ্নে আলাদা থাকতে পারেন, তাহলেই কেবল তাদের ডিভোর্স কার্যকর হতে পারে। তার মানে ২০২০ সাল পর্যন্ত তাদের সম্পর্ক অটুট থাকবে; তবে তারা আলাদাভাবে বসবাস করতে পারবেন। পাঁচ বছর পর তাদের বিবাহবিচ্ছেদ কার্যকর হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালত। সবমিলিয়ে গোটা বিষয়টি একটি বিচিত্র ঘটনায় মোড় নিয়েছে।
দা গার্ডিয়ানের মতে, ‘এই আইন প্রয়োগটি একটি উদাহরণ। অল্পতেই কোনো নারী-পুরুষ তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক যাতে চুকিয়ে ফেলতে না পারে সেজন্যই এমনটি করা হয়েছে। এতে করে সবার মধ্যে এই ধারণা তৈরী হবে যে বিবাহ কোনো ঠুনকো সম্পর্ক নয়।’ সূত্র: দা গার্ডিয়ান