গত কয়েকদিনে ভারতে গুগল সার্চে সব কিছু ছাপিয়ে উঠেছে কাশ্মীর। আরও স্পষ্ট করে বললে কাশ্মীরি মেয়ে। ভারতে গুগল সার্চের সবচেয়ে বেশি খোঁজা হয়েছে ‘কাশ্মীরি গার্ল’ শব্দটি। এরপরই ‘ম্যারি কাশ্মীরি গার্ল’ সার্চ হয়েছে।
কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের উদযাপনের অনুষ্ঠানে বিজেপির নেতার কাশ্মীরি মেয়েকে বিয়ের আহ্বানের পরই গুগলে ‘কাশ্মীরি গার্ল’ ও ‘ম্যারি কাশ্মীরি গার্ল’ সার্চ শুরু হয়।
গুগল ট্রেন্ড অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ‘কাশ্মীরি গার্লস’ সবচেয়ে বেশি খুঁজেছেন ১০০ শতাংশ সাক্ষরের রাজ্য কেরালা থেকে। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ঝাড়খন্ড। এরপরে রয়েছে হিমাচল প্রদেশ। সেই তালিকায় ১৬ নম্বর স্থানে আছে পশ্চিমবঙ্গ। ‘ম্যারি কাশ্মীরি গার্ল’ এবং ‘কাশ্মীরি গার্লস’এর সার্চ বেড়ে যায় গত মঙ্গলবার। এতে দেখা যায়, ‘ম্যারি কাশ্মীরি গার্ল’ শীর্ষক সার্চে শীর্ষে ছিল দিল্লি। পর্যায়ক্রমে এর পরের অবস্থান মহারাষ্ট্র ও কর্নাটকের।
এই দুই রাজ্যের মানুষ হুমড়ি খেয়ে খুঁজছেন কাশ্মীরি মেয়েদের বিয়ের তথ্য। কাশ্মীরে জমি কেনার আগ্রহ প্রকাশ করে সবচেয়ে বেশি সার্চ ‘বাই ল্যান্ড ইন কাশ্মীর’ এসেছে ঝাড়খন্ড থেকে। এরপরে রয়েছে দিল্লি ও হরিয়ানা। কিভাবে কাশ্মীরে জমি কেনা যায় সে বিষয়ে ‘হাউ টু বাই ল্যান্ড ইন কাশ্মীর’ শীর্ষক সার্চ সবচেয়ে বেশি হয়েছে হরিয়ানা থেকে। এর পরে রয়েছে উত্তর প্রদেশ ও মহারাষ্ট্র। তবে দিল্লির বেশির ভাগ মানুষ লাদাখে জমি কেনাতেই বেশি আগ্রহী।
গত মঙ্গলবার কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার উদযাপনের অনুষ্ঠানে উত্তর প্রদেশের মোজফফরনগরের বিজেপির বিধায়ক বিক্রম সাইনি কাশ্মীরি মেয়েকে বিয়ের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘এবার আমাদের দলের কর্মীরা সুন্দরী কাশ্মীরি নারীদের বিয়ে করতে পারবেন। আর কোনোও বাধা রইল না। যারা অবিবাহিত তারা তো এবার কাশ্মীরে বিয়ে করতে পারবেন। এখন আর কোনোও সমস্যা নেই। যদি কাশ্মীরের কোনোও মেয়ে উত্তরপ্রদেশের ছেলেকে বিয়ে করলে নাগরিকত্ব বাতিল হয়ে যেত। ভারত ও কাশ্মীরের নাগরিকত্ব আলাদা ছিল। আর এখানকার মুসলিম পুরুষদেরও আনন্দ করা উচিত। ওখানকার মেয়েদের বিয়ে করুন। তিনি হিন্দু বা মুসলমান যেই হোন। এ নিয়ে সারা দেশের আনন্দ করা উচিত।’

বিক্রম সাইনির বক্তব্যর পরই ভারতজুড়ে যেন এক ‘রোগ’ ছড়িয়ে পড়েছে। কাশ্মীরি মেয়েদের বিয়ে করার পরিকল্পনা, হানিমুন ও ভিডিওতে সবলাব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওয়াল। নেটিজেনরা টুইট করে বলছেন, কাশ্মীরি মেয়েদের বিয়ে করতে তারা প্রস্তুত।
আসলে কাশ্মীরি মেয়েদের বাইরের রাজ্যে বিয়ে করা নিষিদ্ধ কোনও দিনই ছিল না। বিশেষ মর্যাদাপ্রাপ্ত জম্মু-কাশ্মীরের মেয়েরা তাঁদের রাজ্যের বাইরে বিয়ে করতেই পারতেন। কিন্তু সে ক্ষেত্রে বিয়ের পরে তাঁরা বাবার বাড়ির যেকোনো সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত হতেন। জম্মু-কাশ্মীর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হয়ে গেলে বঞ্চিত হওয়ায় বন্ধ হয়ে যায়। নিজের রাজ্যের বাইরে বিয়ে হলেও কাশ্মীরি মেয়েরা বাবার সূত্রে সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবেন।

কিন্তু গুগলে ভারতের সার্চের বর্তমান ধারাকে কার্যত ‘অবমাননাকর’ বলছেন অনেক ভারতীয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সয়লাব কাশ্মীরের জমি আর মেয়েদের খোঁজার ব্যাপারটি। অনেকেই বলছেন, স্মার্টফোন হাতে নিয়ে এই ধরনের গুগল সার্চ যারা করছেন, তারা আসলে হরিণের চামড়া গায়ে দেওয়া নেকড়ে। – প্রথম আলো নিউজ।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টাইমস ও নিউজ এইটিন
ঈদে নারীর টানে বাড়ি ফিরছে মানুষ, লঞ্চে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়
ঈদের বাকি আর মাত্র তিনদিন। তাই পরিবারের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে নারীর টানে বাড়ি ফিরছে দেশের নানা প্রান্তে থাকা কর্মজীবী মানুষরা। শেষ মুহূর্তে লঞ্চ, স্টিমার, বাস ও ট্রেনগুলো যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে। তবে বিশেষ করে সবচেয়ে বেশি ভিড় হচ্ছে লঞ্চগুলেতে।
ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চাঁদপুরগামী লঞ্চগুলেতে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে তারা গৃহে ফিরছে। ৮অগস্ট বৃস্পতিবার চাঁদপুর লঞ্চ টার্মিনাল ঘাটে গিয়ে দেখা যায় লঞ্চগুলোতে উপচে পড়া ভিড়। লঞ্চ যাত্রীর ভিড় সামাল দিতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসক ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। ফায়ার সার্ভিস, কোস্ট গার্ড এমনকি স্কাউট সদস্যরাও সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত যাত্রীদের নিরাপদে বাড়ী পৌছানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি লঞ্চ মালিক পক্ষের প্রতিনিধি ও সুপার ভাইজারগণ দায়িত্ব পালন করছে।
কয়েকজন যাত্রীর সাথে আলাপ করলে তারা জানায়, শুক্র, শনি ও রবিবার সরকারি ছুটি হওয়ায় এবং সোমবার ঈদ হওয়ায় যাত্রীদের এ চাপ বেড়েছে। তাছাড়া ঈদুল আযহার সাথে যেহুতু কোরবানির সম্পর্ক রয়েছে তাই আমরা গরু কেনার জন্যে একটু আগেভাগেই বাড়ি এসছি।
লঞ্চের স্টাফদের সাথে কথা বললে তারা জানান, আমরা আমাদের জাহাজগুলোর ওয়াটার লেভেল ক্রস করার আগেই যে যাত্রী পেয়েছি তা নিয়ে সরকারের নির্দেশনা মেনে ছেড়ে এসেছি। আমাদের জাহাজগুলোতে যে পরিমাণ যাত্রী ধারণ ক্ষমতা আমরা সে পরিমাণ যাত্রী নিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে এসেছি।

এদিকে বেশ কয়েকজন লঞ্চযাত্রী সাথে কথা হলে তারা জানায়, চাঁদপুর লঞ্চ টামিণাল ঘাটে কুলিদের হয়রানি এখনোও বন্ধ হয়নি। আমরা লঞ্চ থেকে নামার পর আমাদের ব্যাগ লাগেজ নিয়ে কয়েকজন কমলা লঙের জামা পড়া লোক টানাহেচড়া শুরু করেছে। অন্যদিকে সিএনজি ও অটোরিক্সা চালকরা অতিরিক্ত ভাড়া চাচ্ছে। এসব হয়রানি থেকে মুক্তি পেতে বিআইডব্লিউটি কর্মকর্তা ও প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করছি।