
ঢাকা, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
দ্রুতগতির এই যুগে কাজের চাপ, মোবাইল ডিভাইসের আসক্তি, এবং অনিয়মিত রুটিন আমাদের জীবনকে জটিল করে তুলছে। কিন্তু সুখবর হলো—জীবনযাপনে মাত্র কয়েকটি ছোট পরিবর্তন আনলেই মানসিক শান্তি ফিরে পাওয়া যায় এবং শারীরিক সুস্থতা বাড়ে।
সকালের রুটিনে সচেতনতা আনুন
গবেষণায় দেখা গেছে, দিনের শুরুতে মোবাইল ফোন স্ক্রল করলে মস্তিষ্কে ডোপামিনের মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যায়, যা সারাদিনের মনোযোগকে ব্যাহত করতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন—সকালটা নিজের জন্য রাখুন।
- ঘুম থেকে উঠে ৫ মিনিট ধ্যান বা প্রার্থনা করুন।
- এক গ্লাস হালকা গরম পানি পান করুন।
- সম্ভব হলে রোদে দাঁড়িয়ে ১০ মিনিট শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ফারহানা সুলতানা বলেন,
“সকালের প্রথম ৩০ মিনিট যদি ফোনমুক্ত রাখা যায়, তাহলে মনোযোগ ও মুড সারাদিন ভালো থাকে।”
খাদ্যাভ্যাসে ছোট পরিবর্তন, বড় উপকার
ফাস্ট ফুডের ওপর নির্ভরতা যত বাড়ছে, ডায়াবেটিস, স্থূলতা ও হজমের সমস্যা তত বেশি বাড়ছে। পুষ্টিবিদদের মতে—
- প্রতিদিনের প্লেটে অর্ধেক জায়গা শাকসবজি ও ফলের জন্য রাখুন।
- প্রসেসড চিনি ও সফট ড্রিংক এড়িয়ে চলুন।
- দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
স্থানীয় মৌসুমি ফল যেমন—পেয়ারা, পেয়ারা, কমলা, পেঁপে ও কলা—শরীরের জন্য সেরা। এগুলো হজমে সহায়তা করে এবং শক্তি জোগায়।
ঘুমকে অগ্রাধিকার দিন
মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, হরমোন ভারসাম্য, এমনকি স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে পর্যাপ্ত ঘুম অপরিহার্য।
- প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যান ও জাগুন।
- ঘুমানোর অন্তত ১ ঘণ্টা আগে মোবাইল ফোন ও টিভি থেকে দূরে থাকুন।
- শোবার ঘরকে শান্ত ও অন্ধকার রাখুন।
ঘুম বিশেষজ্ঞ ডা. সামিউল হক জানান,
“৭-৮ ঘণ্টা নিয়মিত ঘুম শুধু মন ভালো রাখে না, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও স্থূলতার ঝুঁকিও কমায়।”
শরীরকে
সচল রাখুন
কর্মব্যস্ত জীবনে ব্যায়াম করার সময় বের করা কঠিন হলেও ছোট্ট পরিবর্তনেই শরীর সক্রিয় রাখা যায়।
- লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করুন।
- দিনে অন্তত ২০ মিনিট হাঁটুন।
- প্রতি এক ঘণ্টা ডেস্কে বসে থাকার পর ৫ মিনিট দাঁড়িয়ে স্ট্রেচ করুন।
এতে ক্যালোরি পোড়ে, রক্ত সঞ্চালন বাড়ে এবং মন সতেজ থাকে।
মানসিক সুস্থতাকে গুরুত্ব দিন
শুধু শরীর নয়, মনকেও বিশ্রাম দিতে হয়।
- প্রতিদিন নিজের জন্য অন্তত ১৫ মিনিট রাখুন—বই পড়া, গান শোনা, বা প্রিয় কোনো কাজ করার জন্য।
- সপ্তাহে একদিন সোশ্যাল মিডিয়া ডিটক্স করতে পারেন।
- কৃতজ্ঞতার ডায়েরি লিখুন, যাতে প্রতিদিন তিনটি ভালো ঘটনার কথা লিখে রাখবেন।
মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, এই অভ্যাস মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং জীবনের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: