
অধিকার পত্র ডটকম :
ঢাকা, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফের উত্তাপ ছড়িয়েছে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর তীব্র সমালোচনায়। বৃহস্পতিবার নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এখন আওয়ামী লীগের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করছে এবং ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের নামে সরকারকে খুশি করার চেষ্টা করছে।
রিজভী বলেন, “প্রতিটি ঘটনায় জামায়াত আওয়ামী লীগের সঙ্গে এক হয়ে কাজ করেছে। তারা এক ধরনের ‘পতিত ফ্যাসিস্টদের সহযোগী’ হয়ে উঠেছে।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ফ্যাসিবাদ মেনে নেবে না। “শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ফ্যাসিবাদের পুনর্জাগরণের কোনো সুযোগ নেই। এ দেশের মানুষ গণতন্ত্রপ্রিয়, তারা ভয় দেখিয়ে মুখ বন্ধ করাতে দেবে না। এমনকি এক-দুই বেলা কম খেলেও তারা নিজেদের কণ্ঠস্বর আরও উচ্চকিত করবে।”
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর টেলিফোন কথোপকথনের বিষয়টি উল্লেখ করে রিজভী বলেন, সেখানে সরাসরি গুলি চালানোর নির্দেশ শোনা গেছে। “আমরা যারা গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করেছি, তারা শেখ হাসিনার বর্বরতা নিজের চোখে দেখেছি। আজকের অডিও ক্লিপগুলো শোনার পর বোঝা যাচ্ছে, আন্দোলন দমাতে আরও ভয়ংকর পরিকল্পনা করা হয়েছিল,” তিনি যোগ করেন।
সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন
অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টার কর্মকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন রিজভী। তিনি বলেন, “উপদেষ্টা সজীব ভূঁইয়া তার নিজ এলাকায় প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার সরকারি বরাদ্দ নিয়েছেন। এটা একধরনের বৈষম্যমূলক পদক্ষেপ এবং ভবিষ্যতে এমপি হওয়ার প্রস্তুতি। একজন উপদেষ্টা বা শীর্ষ আমলা কীভাবে নিজের এলাকায় এত বরাদ্দ নিতে পারেন, তা প্রশ্নবিদ্ধ।”
এছাড়া তিনি কেবিনেট সচিবের রাজনৈতিক আনুগত্য নিয়েও মন্তব্য করেন, দাবি করেন তিনি একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের প্রতি অনুগত এবং অবসরের পর নির্বাচনেও অংশ নিতে পারেন। “এটি দুঃখজনক এবং সরকারি শৃঙ্খলার পরিপন্থী,” বলেন রিজভী।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, রিজভীর এই বক্তব্য বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে বিএনপির অব্যাহত সন্দেহকে আরও উসকে দেবে। বিশেষ করে সজীব ভূঁইয়ার বরাদ্দ-সংক্রান্ত মন্তব্য আগামী নির্বাচনের প্রাক্কালে বিতর্কের জন্ম দিতে পারে। একই সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কথোপকথন ফাঁসকে কেন্দ্র করে বিএনপি তাদের রাজনৈতিক ইস্যু আরও তীব্রভাবে মাঠে তুলবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: