আন্তর্জাতিক ডেস্ক | অধিকার পত্র ডটকম
প্রকাশ: ৭ নভেম্বর ২০২৫
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত গাজা শান্তি পরিকল্পনা অনুমোদনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র এখন তীব্র কূটনৈতিক চাপ দিচ্ছে। পরিকল্পনাটি গৃহীত হলে তা আন্তর্জাতিক আইনে পরিণত হবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতিসংঘে রাষ্ট্রদূত মাইকেল ওয়াল্টজ।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াল্টজ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলোকে সতর্ক করে বলেছেন— প্রস্তাবটি অনুমোদন না হলে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে অস্ত্রবিরতি ভেঙে আবারও যুদ্ধ শুরু হতে পারে।
‘বোর্ড অব পিস’ গঠনের প্রস্তাব
ট্রাম্প প্রশাসনের এই ১০ দফা খসড়া প্রস্তাবে গাজা পরিচালনার জন্য ২০২৭ সাল পর্যন্ত একটি “বোর্ড অব পিস” গঠনের কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় অরাজনৈতিক ফিলিস্তিনি প্রশাসনিক কমিটি অঞ্চলটির দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
গাজার পুনর্গঠন তহবিল গঠনে বিশ্বব্যাংককে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে প্রস্তাবে।
সামরিক অবকাঠামো ধ্বংসে আন্তর্জাতিক বাহিনী
খসড়া প্রস্তাব অনুযায়ী, একটি আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী (International Stabilization Force) গাজায় সামরিক অবকাঠামো ধ্বংস ও অস্ত্রসমর্পণ নিশ্চিত করবে। তবে হামাসসহ অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠী সহযোগিতা না করলে বাহিনী কীভাবে কাজ করবে— সে বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।
ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র নিয়ে অনিশ্চয়তা
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের বিষয়ে অস্পষ্টতা থাকায় আরব দেশগুলো এতে সরাসরি যুক্ত হতে অনাগ্রহী।
এছাড়া প্রস্তাবটিতে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (Palestinian Authority) ভূমিকা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি, যা অনেক সদস্য রাষ্ট্রের আপত্তির কারণ হয়েছে।
জাতিসংঘে বিভাজন
খসড়া প্রস্তাবটি পাস করতে হলে ১৫ সদস্যের মধ্যে কমপক্ষে ৯টি দেশের সমর্থন প্রয়োজন এবং স্থায়ী পাঁচ সদস্য—যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য—এর কেউই ভেটো দিতে পারবে না।
ফ্রান্স ইতোমধ্যে প্রস্তাবে কিছু পরিবর্তনের পরামর্শ দিলেও, মার্কিন পক্ষ তা অধিকাংশ ক্ষেত্রে উপেক্ষা করেছে বলে কূটনীতিকরা জানিয়েছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রস্তাবটি গৃহীত হলে এটি ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য জাতিসংঘে একটি বড় কূটনৈতিক বিজয় হবে। তবে এতে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: