odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Friday, 14th November 2025, ১৪th November ২০২৫

অনিশ্চয়তায় ঘেরা নির্বাচন ফ্রান্সে

Admin 1 | প্রকাশিত: ২৩ April ২০১৭ ২২:০৩

Admin 1
প্রকাশিত: ২৩ April ২০১৭ ২২:০৩

পশ্চিম ইউরোপের অন্যতম শীর্ষ গণতন্ত্র ও অর্থনীতির দেশ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট আজ রোববার। কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক অবস্থাকে এত দিন এবারের নির্বাচনের মুখ্য প্রভাবক মনে করছিলেন বিশ্লেষকেরা। তবে ভোটের মাত্র তিন দিন আগে রাজধানী প্যারিসে গত বৃহস্পতিবার সন্ত্রাসী হামলায় এক পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার ঘটনায় নতুন করে হিসাব কষতে হচ্ছে সবাইকে। সন্ত্রাসী হামলার এ ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টার অভিযোগও উঠেছে।
ফ্রান্সের এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ১১ জন প্রতিদ্বন্দ্বী। তবে তাঁদের মধ্যে মূল লড়াইটা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে মারি লো পেন, ইমানুয়েল ম্যাখঁ, জ্যঁ-লুক মিলনশঁ ও ফ্রাঁসোয়া ফিলোঁর মধ্যে। এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ থাকলেও বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ সে সুযোগ নেননি। জনপ্রিয়তা নিম্নগামী হওয়ায় তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘বৃহস্পতিবারের সন্ত্রাসী হামলা সম্ভবত মারি লো পেনের জয়ের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেবে। কারণ তিনি সীমান্তের ব্যাপারে সবচেয়ে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন। দেশে যা চলছে সে ব্যাপারে সবচেয়ে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন।’ ট্রাম্প আরও বলেন, যিনি জঙ্গি ইসলামি সন্ত্রাসবাদ ও সীমান্তের ব্যাপারে সবচেয়ে শক্ত অবস্থান নেবেন তিনিই নির্বাচনে ভালো করবেন।
 প্রথম দফার নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে কেউ যদি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট নিশ্চিত করতে না পারেন, তাহলে আগামী ৭ মে এ নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম দফায় সর্বাধিক ভোট পাওয়া দুই প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে তখন। নির্বাচন নির্বিঘ্ন করতে দেশজুড়ে প্রায় ৫০ হাজার পুলিশ ও ৭ হাজার সেনাসদস্য মোতায়েন করেছে ফরাসি কর্তৃপক্ষ। একের পর এক সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে দেশটিতে ইতিমধ্যে উচ্চমাত্রার সতর্কতা বজায় রয়েছে।
বিভিন্ন জরিপ থেকে প্রাপ্ত ফল বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এবারের নির্বাচন গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ‘অনিশ্চিত’ তকমা পেতে চলেছে। ভোটারদের এক-চতুর্থাংশই প্রথম দফার ভোট গ্রহণের প্রাক্কালেও অনিশ্চয়তায় ভুগছিলেন। কয়েক বছরে একের পর এক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা সত্ত্বেও ফ্রান্সের মানুষ বৃহস্পতিবারের আগ পর্যন্ত ভোটের ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান আর অর্থনীতিকেই প্রাধান্য দিচ্ছিল। এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ) এবারের নির্বাচনের বড় একটি ইস্যু হয়ে উঠতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকেরা।
বিভিএ গ্রুপের বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার পরিচালিত জনমত জরিপে দেখা গেছে, প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থিতার দৌড়ে কট্টর ডানপন্থী অভিবাসনবিরোধী মারি লো পেন ও ইমানুয়েল ম্যাখঁ একসঙ্গে শীর্ষে রয়েছেন। তাঁদের দুজনকে পছন্দ করছেন জরিপে অংশ নেওয়া ২৩ শতাংশ ভোটার। জ্যঁ-লুক মিলনশঁর পক্ষে ১৯ দশমিক ৫ শতাংশ ভোটার। আর ফিলোঁকে প্রেসিডেন্ট দেখতে চান ১৯ শতাংশ ভোটার।
তবে বৃহস্পতিবারের হামলার হিসাব-নিকাশ পাল্টে দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। হামলার পরপরই লো পেন সীমান্তে তাৎক্ষণিক কড়াকড়ি আরোপ এবং সন্দেহের তালিকায় থাকা সব বিদেশিকে ফ্রান্স থেকে বের করে দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বিদায়ী সমাজতান্ত্রিক সরকার সন্ত্রাসবাদবিরোধী লড়াইয়ে ফ্রান্সের পরাজয় নিশ্চিত করতে সবকিছু করেছে।
আর রক্ষণশীল নেতা ফ্রাঁসোয়া ফিলোঁ বলেছেন, পরবর্তী সরকারের মুখ্য কাজ হওয়া উচিত ফ্রান্সের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
তবে প্রধানমন্ত্রী বেরনাদ ক্যাজনুভ লো পেনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় রাজনৈতিক ফায়দা লোটার অভিযোগ তুলে তাঁর সমালোচনা করেছেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: