
খাগড়াছড়িতে সংঘর্ষ ও হত্যার ঘটনায় আবারও রক্ত ঝরছে পাহাড়ে। ধর্ষণ, দমন ও নিপীড়নের শিকার পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার প্রশ্নে রাষ্ট্র ও রাজনীতি কেন নীরব—উঠছে তীব্র প্রশ্ন।
অধিকার পত্র ডেস্ক:
পার্বত্য চট্টগ্রাম আবারও রক্তাক্ত। সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে এক মারমা স্কুলছাত্রীকে দলগত ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাহাড়ি জনগোষ্ঠী ও বসতি স্থাপনকারী বাঙালিদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গুইমারায় ১৪৪ ধারা জারির মধ্যেই সংঘর্ষ, গুলি ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তিনজন নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে সংবাদমাধ্যম।
রাষ্ট্র ও রাজনীতির নীরবতা
স্বাধীনতার অর্ধশতক পার হলেও পাহাড়ের মানুষ এখনো সমান নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। রাষ্ট্র নির্বিকার, সরকার নির্বাক এবং প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলো মুখে তালা এঁটে রেখেছে। অথচ এই দলগুলোই গণতন্ত্র, নির্বাচন ও জনগণের অধিকারের প্রশ্নে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার। কিন্তু পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জীবন, সম্মান ও নিরাপত্তার প্রসঙ্গে তাদের নীরবতা আসলে তাদের আসল চরিত্রকেই উন্মোচন করে—মানুষ নয়, কেবল ক্ষমতা-ই তাদের ধ্যানজ্ঞান।
দায় এড়ানোর প্রবণতা
৩০ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী দাবি করেছেন, খাগড়াছড়িতে নতুন করে উত্তেজনা ছড়ানোর পেছনে ‘ভারতের ইন্ধন’ রয়েছে। তবে অনেকেই মনে করেন, সরকারের এই বক্তব্য মূলত দায় এড়ানোর কৌশল। বিগত সরকার যেমন প্রতিটি ঘটনায় ‘বিএনপি-জামাতের ইন্ধন’ দেখত, বর্তমানেও একই প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
পাহাড়িদের জীবন অদৃশ্য
পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ওপর ধর্ষণ, হত্যা, গুম ও দমন-পীড়ন যেন স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। গণমাধ্যমেও এ নিয়ে তেমন কোনো উচ্চবাচ্য নেই। অথচ বাংলাদেশের সংবিধান প্রতিটি নাগরিককে সমান অধিকার দিয়েছে। প্রশ্ন জাগে—এই অধিকার কি পাহাড়ি মানুষের জন্য নয়? নাকি রাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি শুধু সমতলের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর জন্য?
যদি পাহাড়ি মানুষের জীবন, নিরাপত্তা ও অধিকার বারবার উপেক্ষিত হয়, তবে আমাদের সংবিধান, আইন ও রাষ্ট্রীয় চেতনা কেবলই শব্দের খেলা আর মিথ্যার আড়ালে সাজানো এক রঙিন নাটক হয়ে দাঁড়াবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: