মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি :
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে ট্রাক চালককে তুলে নিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত রবিন দেওয়ান মালয়েশিয়া প্রবাসী বড় পাউলিদয়া গ্রামের মাইনুদ্দিন দেওয়ানের ছেলে। শনিবার ২৩ জুলাই দিবাগত রাত ১২ টার দিকে পূর্ব রাজদিয়া গ্রামের মোশারফ শেখের ছেলে জনি শেখ (২৪) নামে এক ট্রাক চালককে ফোন করে ডেকে নিয়ে রাজদিয়া আব্দুল জাব্বার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে অভিযুক্ত রবিন দেওয়ান ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে রাত ভর অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে পরদিন রোববার ২৪ জুলাই ভোরে মুমূর্ষ অবস্থায় বাড়ীর সামনে রাস্তায় ফেলে যায় মর্মে অভিযোগ করেন জনি শেখের পিতা ভুক্তভোগী মোশারফ শেখ। পরে ওই ট্রাক চালককে উদ্ধার করে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। বর্তমানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এবিষয়ে সিরাজদিখান থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন আহত জনি শেখের মা রেশমা বেগম।
স্থানীয় ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বড় পাউলদিয়া গ্রামের মাইনুদ্দিন দেওয়ানের ছেলে মালয়েশিয়া প্রবাসী কেসিনো ব্যবসায়ী রবিন দেওয়ান ও পূ্র্ব রাজদিয়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে মিলন মালয়েশিয়ায় এক এলাকায় বসবাস করেন। সিনিয়র জুনিয়র দ্বন্দ্বের জেরে রবিন দেওয়ান মিলনের ঘনিষ্ট বন্ধু কাকালদী গ্রামের নাসিম নামে এক যুবককে মালয়েশিয়ায় পুলিশে ধরিয়ে দেয়। বন্ধুকে পুলিশে ধরিয়ে দিয়ে জেল খাটানোর বিষয়টি মালয়েশিয়া থেকে মিলন ফোন করে এলাকার বন্ধু পূর্ব রাজদিয়া মোশারফ শেখের ছেলে মো. জনি শেখকে জানায়। সম্প্রতি রবিন দেওয়ান দেশে আসলে জনি শেখ তাকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তাদের সাথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে হাতাহাতি বিষয়টি স্থানীয় ভাবে মিমাংসা করা হয়। এরই জেরে গত শনিবার দিবাগত রাত ১২ টার দিকে জনি শেখ ফোন করে ডেকে নিয়ে ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে হাতপা বেধে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে গিয়ে রাতভর নির্যাতন চালিয় পরদিন সকালে বাড়ীর পাশে রাস্তায় ফেলে রেখে যায় অভিযুক্ত রবিন দেওয়ান ও তার ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা।সন্ত্রাসীদের নির্মম নির্যাতনের কারণে জনি শেখের শরীরের বেশ কয়েকটি স্থানে হাড় ভেঙে গেছে। পরে স্থানীয় লোকজন মুমূর্ষু অবস্থায় রাস্তায় ফেলে রাখা অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠায়। বর্তমানে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদিকে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত রবিন দেওয়ান গা ঢাকা দিয়েছে। এমনকি তার মুঠোফোন একাধিকবার ফোন এসএমএস করেও পাওয়া যায় নি। এছাড়া অভিযুক্ত রবিন দেওয়ান ২-৩ দিনের মধ্যে দেশ ত্যাগ করে মালয়েশিয়া চলে যাওয়ার কথা রয়েছে মর্মে গোপন একটি সূত্র থেকে খবর পাওয়া গেছে। ফলে সুষ্ঠ বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কা জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ভুক্তভোগী মোশারফ শেখ কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমার ছেলেকে মাইনুদ্দিন দেওয়ানের ছেলে রবিন দেওয়ান ফোন করে ডেকে নিয়ে ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হাতপা ভেঙে দিয়ে মেরে ফেলতে চেয়েছে। আমি তাদের উপযুক্ত বিচার চাই। আমার ছেলেটা সংসারে একমাত্র রোজিদার ছেলে ছিলো। যে ভাবে তারা আমার ছেলেকে মেরেছে কুকুরকেও এমন ভাবে কেউ মারে না।
সিরাজদিখান থানার অফিসার ইনচার্জ এ,কে,এম মিজানুল হক জানান, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: