ঢাকা | মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২

এতিমের টাকা আত্মসাৎকারী অপশক্তিকে মানুষ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না : সরকারি দল

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ২৩:৫৮

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ২৩:৫৮

রাষ্ট্রপতির ভাষণ সম্পর্কে আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যরা বলেছেন,স্বীকৃত যুদ্ধাপরাধী, এতিমের টাকা আত্মসাৎকারী, জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক, পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসা অপশক্তিকে বাংলার মানুষ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।


গত ৯ জানুয়ারি চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব উত্থাপন করলে হুইপ মো. শাহাব উদ্দিন সমর্থন করেন।


গত ৭ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদের ১৯তম ও বছরের প্রথম অধিবেশনের শুরুর দিন সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ সংসদে এ ভাষণ দেন।


রাষ্ট্রপতির ভাষণে আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আজ ২৬তম দিনে সরকারি দলের শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ফাহ্মী গোলন্দাজ বাবেল, পংকজ নাথ,জিল্লুল হাকিম, আশেক উল্লাহ রফিক, এম আব্দুল লতিফ, বেগম ফাতেমা তুজ্জহুরা, বেগম রোকসানা ইয়াসমিন ছুটি, জাতীয় পার্টির সালাহ উদ্দিন আহমেদ মুক্তি ও বেগম রওশন আরা মান্নান আলোচনায় অংশ নেন।


আলোচনায় অংশ নিয়ে শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এতিমের টাকা আত্মসাৎ করার দায়ে কারাদন্ডাদেশ দিয়ে আদালত রায় দিয়েছে। রায়ের আগের দিন লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে হামলা করে বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করেছে, ছবির অবমাননা করেছে।


তিনি বলেন, তারেক রহমান একজন গ্রেফতারী পরোয়ানাভূক্ত আসামী হয়েও কিভাবে সেদেশে বিচরণ করছে। এটা লন্ডনের জন্যও হুমকি স্বরূপ। তিনি অবিলম্বে তাকে গ্রেফতারের দাবি জানান।


শেখ সেলিম বলেন, সৌদি সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার আসামীদের স্বীকারোক্তিতে খালেদা জিয়া ও তার সন্তানদের অর্থ পাচারের তথ্য বেরিয়ে এসেছে। তারা সৌদি আরবে বাংলাদেশী অর্থ পাচার করেছে। অবিলম্বে এসব পাচারকৃত টাকা ফেরত আনতে হবে।

এগুলো এদেশের গরীব মানুষের টাকা। সৌদি ছাড়াও তারা বিশ্বের অনেক দেশে অর্থ পাচার করেছে। খালেদা জিয়া পরিবার এখন বিশ্ববাসীর কাছে দুর্নীতিবাজ পরিবার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।


তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার নির্দেশে ২১ আগস্ট গেনেড হামলার ঘটনা ঘটেছিল। যদি সুযোগ থাকে তাহলে তাকে ওই মামলায় ১ নম্বর আসামী হিসাবে বিচার করা হোক। তাদের সময়ে একসাথে সারা দেশে ৫শ’র বেশি স্থানে বোমা হামলা করা হয়েছে। ক্লিন হার্ট অপারেশনের নামে ২৭ জন মানুষকে হত্যা করেছে। ওই ২৭ জন হত্যার দায়ে খালেদা জিয়াকে বিচারের আওতায় আনা হোক। ১০ ট্রাক অস্ত্রের আমদানী করা হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে। কানাডা ফেডারেল কোর্ট বিএনপিকে একটি সন্ত্রাসী দল হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে।


শেখ সেলিম বলেন, সন্ত্রাসী-জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকতা করে তাদের এদেশে অরাজকতার উৎসাহ দেয়া হয়েছে। সন্ত্রাসী জঙ্গিদের গ্রেফতার করলে খালেদা জিয়া বলেন, আলেম-ওলামাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।


তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়ন, গণতন্ত্র ও মানবতার প্রতীক। উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনার সরকারের ধারাবাহিকতা প্রয়োজন। এই সরকারকে আবারো ক্ষমতায় আনতে হবে।


শেখ সেলিম বলেন, জিয়াউর রহমান দেশের গণতন্ত্র হত্যা করে সামরিক সরকার দিয়ে ৫ বছর দেশ চালিয়েছে। তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না।
তিনি বলেন, নির্বাচন আসলেই বেগম খালেদা জিয়া ও তার দল স্বাধীনতাবিরোধী দল জামায়াতকে সাথে নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করে।

এবারও তারা সহায়ক সরকার, সহায়তাকারী সরকারের মতো কাল্পনিক সরকারের অধীনে নির্বাচন চাচ্ছে। তবে তারা যাই বলুক এদেশে আর কোন অসাংবিধানিক, অবৈধ ও অনির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না। বিশ্বের অন্যান্য দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, সেভাবেই এখানে নির্বাচন হবে।
আগামী নির্বাচন জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই নির্বাচনে একদিকে সন্ত্রাসী, জঙ্গি ও অপরাধী অপর দিকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ। এদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষরাই আগামী দিনে সরকার পরিচালনা করবে।


সরকারি দলের অন্য সদস্যরা বলেন, উন্নয়নের মহাসড়কে ধাবমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের কর্মকান্ডের বিবরণ উঠে এসেছে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ভাষণে।


তারা বলেন, শেখ হাসিনার গণতন্ত্র মানে জনগণের ভাগ্য উন্নয়নের গণতন্ত্র। শেখ হাসিনার গণতন্ত্র হচ্ছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা সেবা নিশ্চিত করা, শিক্ষা সেবা নিশ্চিত করা, শিক্ষার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে শিক্ষার্থীদের মায়ের একাউন্টে সরাসরি বৃত্তি পৌছে দেয়া।


সংসদ সদস্যরা বলেন, পায়রা বন্দর, পদ্মা সেতুর মতো বড় কোন প্রকল্প হোক এটা খালেদা জিয়া এবং তার দল বিএনপি চায় না। কারণ এই দুটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৭.২ শতাংশ বাড়বে। তারা দেশের শত্রু, তাই তারা দেশের উন্নয়ন চায় না।


তারা বলেন, যারা গনিমতের মাল আখ্যায়িত করে এদেশের মা-বোনদের ধর্ষণের জন্য পাকিস্তানিদের হাতে তুলে দিয়েছে। ওইসব রাজাকার, আল-বদর, আল-শামদের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করে তাদের পুরস্কৃত করেছে জিয়াউর রহমান ও তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আর বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ওইসব যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছে।-খবর বাসসের



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: