ঢাকা | শুক্রবার, ১৫ আগস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২

নিউইয়র্কে ‘বাংলাদেশ হিউমান রাইটস ওয়াচ ইউএসএ’র সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত

odhikarpatra | প্রকাশিত: ১৫ আগস্ট ২০২৫ ০৪:৪৬

odhikarpatra
প্রকাশিত: ১৫ আগস্ট ২০২৫ ০৪:৪৬

যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিনিধি 

গত রবিবার,১০ আগস্ট ২০২৫,নিউইয়র্কে ‘বাংলাদেশ হিউমান রাইটস ওয়াচ ইউএসএ’ এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।খবর আইবিএননিউজ।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের চলমান সহিংসতা, মব ভায়োলেন্স, চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ এর উত্থান, গোপালগঞ্জের গণহত্যায় সামরিক বাহিনীর ভূমিকার ডকুমেন্ট্রি উপস্থাপন ও দখলদার অবৈধ ইউনুস সরকারের অপকর্মের দলিল সাংবাদিকদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ওই দিন সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের জুইশ সেন্টারে লিখিত বক্তব্য পাঠ ও সাংবাদিকবৃন্দের প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয় ।
সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ইউএসএ “র মহাসচিব প্রকৌশলী মোহাম্মাদ আলী সিদ্দিকী এবং মুল বক্তব্য পাঠ করেন অন্যতম উপদেষ্টা শামীম চৌধুরী।
উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের অন্যতম উপদেষ্টা ড. প্রদীপ রঞ্জন কর, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা এবং কলামিস্ট ড. মহসিন আলী, অন্যতম উপদেষ্টা ও মুক্তিযোদ্ধা ড. নূরুন্নবী, অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক শীতাংশু গুহ, উপদেষ্টা ডা. মাসুদুল হাসান, উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন ( অব) আবু বক্কার সিদ্দিক ও উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হুসাইন ,সংগঠনের অন্যতম পরিচালক এডভোকেট শাহ মো বখতিয়ার, পরিচালক জালাল উদ্দিন জলিল, পরিচালক রুমানা আখতার, পরিচালক কায়কোবাদ খান, পরিচালক নুরুজ্জামান সরদার,পরিচালক খন্দকার জাহিদুল ইসলাম, পরিচালক শহিদুল ইসলাম, পরিচালক টি মোল্লা, সদস্য হৃদয় মিয়া প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের উপর বাংলাদেশে যে নিপীড়ন ও নির্যাতন চালানো হচ্ছে তারও ফিরিস্তি তুলে ধরা হয় । কুপিয়ে ও পিটিয়ে সাংবাদিক হত্যা, ডজন খানেক সিনিয়র সাংবাদিক ও লেখক শাহরিয়ার কবির, শ্যামল দত্ত, মোজাম্মেল বাবু, শাকিল আহমেদ, ফরজানা রূপা এবং প্রফেসর ড.নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে হত্যা মামলায় আসামি করে জামিন অযোগ্য ধারায় বছরব্যাপী জেলে আটক রাখার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয় । ১৬৭ জন সাংবাদিকের এক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল, হাজারের উপর সাংবাদিকের চাকুরিচ্যুতি, সংবাদমাধ্যম দখল ও গলাটিপে হত্যার বিষয় উল্লেখ করা হয় ।
নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে দেশত্যাগে বাধ্য করা ও শত শত মিথ্যা হত্যা মামলার আসামি করে যুদ্ধাপরাধীদের জন্যে তৈরী আদালতে জামাতি বিচারপতি ও তাদের পক্ষের আইনজীবীদের দিয়ে ক্যাঙ্গারু কোর্টে বিচারের নামে প্রহসনের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। দেড় লাখের উপর বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের নির্বিচারে গ্রেফতার , হয়রানি, সংখ্যালঘুদের উপর হামলা, নির্যাতন , সাবেক প্রধান বিচারপতি, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণ ও গ্রেফতার, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী, টকশো ব্যক্তিত্ব, ব্যবসায়ী কেউ রেহাই পাচ্ছে না এই জংঘী ফ্যাসিস্ট, সুদখোর, পশ্চিমাদের পাপেট তাঁবেদার ইউনুস সরকারের হ্যাট থেকে।
দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন, ন্যায়বিচার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ, দেশের সার্বভৌমত্ব আজ ভূলুণ্ঠিত । ভয়ের সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র । মানুষ নিরাপদে বসবাস করতে পারছে না, রাতের বেলায় পুরুষ-নারীরা রাস্তায় নিরাপদ নয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের উপক্রম, অটো পাশের দাবীতে ছাত্ররা আন্দোলন করছে, শ্রমিকরা বেকার হচ্ছে লাখে লাখে, নতুন কর্মসংস্থান নাই, বিদেশী বিনিয়োগ বন্ধ, রেমিটেন্স কমে গেছে, রিজার্ভ তলানীতে, জিডিপি গ্রোথ ৩.৩%, মূল্যস্ফীতি ডাবল ডিজিট।
এমন পরিস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলন থেকে বাংলাদেশকে রক্ষায় সকল মানুষকে এগিয়ে আসতে এবং দখলদার অবৈধ বিদেশী নাগরিকদের দ্বারা ও বিদেশি শক্তির স্বার্থ হাছিলের জন্যে ক্ষমতায় বসানো তাঁবেদার ইউনুস সরকারকে দ্রুত অপসারণের জন্যে দেশে-বিদেশে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে নেতৃবৃন্দ আহ্বান জানান।লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের অন্যতম উপদেষ্টা শামীম চৌধুরী বলেন, শুভ অপরাহ্ন প্রিয় সাংবাদিক মহোদয়বৃনদ, শোকাবহ আগস্ট মাসে আপনাদের এই উপস্থিতি আমাদের জন্য বিরাট অনুপ্রেরণা ও সাহস জোগাবে আজকের আলোচ্য বিষয়ের উপর সমাজের বিবেক হিসেবে আপনাদের সাহসী ও সৎ লেখনী ও প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে, যে মুহূর্তে বাংলাদেশের গণমাধ্যম এক কালো অধ্যায় পার করছে।
প্রিয় গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব,
৩০ লক্ষ শহীদের রক্তে রঞ্জিত ও দুই লক্ষাধিক মা বোনের সম্ভ্রম হারিয়ে যে লাল সবুজের পতাকা বুকে ধারণ করে বাংলাদেশের জন্ম তা আজ দেশী-বিদেশী শকুনের থাবায় ক্ষত বিক্ষত ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হচ্ছে গত বছরের তথাকথিত জুলাই- আগস্ট বিপ্লবের নামে ।
বিগত ১৫ বছর সাত মাসের নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার উৎখাতে পশ্চিমা পরাশক্তির Deep State ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে বাংলাদেশ। ভূরাজনৈতিক স্বার্থ হাছিলের জন্যে USAID কর্তৃক ৫০ মিলিয়ন ডলার, জর্জ সরোসের মাধ্যমে ড মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রামীণ ফাউন্ডেশনে ১৬২ মিলিয়ন ডলার দিয়ে দেশি কিছু দালাল ও পরজীবী শ্রেণীর এনজিও, শিক্ষক, শিল্পী, সাংবাদিক, কিশোর গ্যাং, হিজড়া, জংঘী জামাত-শিবির, হেফাজত, আইসিস, রোহিঙ্গা, বিহারী, বিএনপি নেতাদের একটি বিশেষ প্রভাবশালী দেশের দূতাবাসের মাধ্যমে দেশপ্রেমিক সরকার প্রধান জননেত্রী শেখ হাসিনাকে সরিয়ে তাদের পছন্দের একজন পুতুল হিসেবে গরিবের রক্তচোষা, শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার বঞ্চিত করা, লোভী ও স্বার্থপর ড মুহাম্মদ ইউনূসকে অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসিয়ে একের পর এক কড়িডোর, বন্দর, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ, ২৫ টি বোয়িং বিমান ক্রয়, উচ্চ মূল্যে গম/তুলা/এলএনজি ক্রয়, উচ্চ শুল্ক ২০+১৫=৩৫% নির্ধারণে NDA ( Non Disclosure এগ্রিমেন্ট) করে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিসর্জন দিয়েছে ।
দেশে গণতন্ত্র আজ নির্বাসনে, মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিপন্ন, সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ জেলে, ১৬৭ জন সাংবাদিককে অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল, প্রেসক্লাবের সদস্যপদ বাতিল, শত শত সাংবাদিক চাকুরিচ্যুত, দিবালোকে কূপিয়ে হত্যা এখন নিত্যদিনের ব্যাপার। আওয়ামী লীগসহ বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী নিহত, দেড় লক্ষাধীক নেতাকর্মী জেলে, ঘর বাড়ি ছাড়া, ধর্ষণ, মবসন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানি, সংখ্যালঘু নির্যাতন, শিক্ষক নিপীড়ন, প্রধান বিচারপতিদের ও অ্যাপিলেট ডিভিশন সহ বিচারপতিদের অপসারণ, গ্রেফতার, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারের গলায় জুতার মালা পরিয়ে বেইজ্জতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষ্কর্য, মুক্তিযুদ্ধের স্মারক স্থম্ভ, ঐতিহাসিক ৩২ নম্বরের স্মৃতি বিজড়িত বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট গুঁড়িয়ে দেয়া, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী কার্যক্রম, সংবিধান, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত ও ইতিহাস রিসেট বাটন দিয়ে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র করছে গণশত্রু খুনী ফ্যাসিস্ট ইউনুস ও তার দোসররা।
প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা,
আজ এটা করো অজানা নয় যে, দখলদার ইউনুস একজন বাটপার, সুদের কারবারী, অর্থ আত্মসাৎকারী, মনিলন্ডারার, উগ্র সাম্প্রদায়িক জংঘী গোষ্ঠীর প্রতিভূ, মবসন্ত্রাশের হোতা, শ্রমিকের অর্থ আত্মসাতের দায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামী, গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিকদের পাওনা ৪৩৭ কোটি টাকা, গ্রামীণ কল্যাণ এর ৬৬৬ কোটি টাকার কর মওকুফ, ৫ বছরের জন্যে গ্রামীণ ব্যাংকের কর রহিত, গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয়, গ্রামীণ জনশক্তি রফতানী, গ্রামীণ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, গ্রামীণ ডিজিটাল ওয়ালেট সমাধান, স্টারলিংকের সাথে গ্রামীণের টেলিকম ব্যবসা, গ্রামীণ ব্যাংকের সরকারি শেয়ার কমিয়ে ৬০% থেকে ১০% এ নামিয়ে আনা, নিজের সাজা মওকুফ, শেয়ার বাজার থেকে এক লক্ষ কোটি টাকা লুট, বিদেশী বিনিয়োগ শূন্য, লক্ষ লক্ষ শ্রমিক বেকার, অর্থনীতি ধ্বংস, শিক্ষাঙ্গন অশান্ত ও দেশব্যাপী ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং দেশে দুর্ভিক্ষ নেমে আসবে । ১৮ কোটি মানুষকে বাঁচাতে আহ সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে এবং এই দুঃশাসন থেকে দেশ ও দেশের মানুষকে বাঁচাতে আসুন সকলে রুখে দাঁড়াই ।
মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শামিল করি ।—

হাকিকুল ইসলাম খোকন, বাপসনিউজঃ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: