
ইবি প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের নামে থাকা একাডেমিক ভবন ও বিভিন্ন হলের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে চিহ্নিত মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শাহ আজিজুর রহমানের নামে নামকরণে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ ও ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ।
বুধবার (৫ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বঙ্গবন্ধু হল সহ ৫ টি স্থাপনার নাম পরিবর্তনের বিষয়টি জানানো হয়। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ২৬৭ তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শাহ আজিজুর রহমান ছিলেন একাত্তরে পাকিস্তান ন্যাশনাল লীগের সাধারণ সম্পাদক। এছাড়াও তিনি ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের আবদুল মোতালেব মালিকের নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার সদস্য হন এবং রাজস্বমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। যুদ্ধের সময় পাকিস্তান কর্তৃক জাতিসংঘে প্রেরিত প্রতিনিধিদলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। তিনি জাতিসংঘে দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেন যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী অপারেশন সার্চলাইটের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়েছে। এছাড়াও তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের বিরুদ্ধেও অবস্থান নিয়ে ছিলেন।
সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একশিক্ষার্থী বলেন, বিতর্কিত কোন ব্যক্তির নামে হলের নাম হওয়াটা নিন্দনীয় তাই সেটির পরিবর্তন কামনা করছি। শাহ আজিজুর রহমানের নামের পরিবর্তে শেরেবাংলা, সোহরাওয়ার্দী, শহীদ আবরার ফাহাদ বা অন্যান্য আরো অনেক নাম ছিল,সেগুলো দেওয়া উচিত ছিল।
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, শাহ আজিজুর রহমান বাংলাদেশের চতুর্থ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তবে মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর ভুমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। প্রশাসনের উচিত ছিল নিরপেক্ষ এবং সর্বজন স্বীকৃত কারো নামে হলের নামকরণ করা। ইবি প্রশাসনের সিদ্ধান্তগুলো বরাবরই বিতর্কিত।
এদিকে এই ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) সংসদ। বুধবার (৫ মার্চ) এক যৌথ সংবাদ বিবৃতিতে ইবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহমুদুল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক এই নিন্দা জানান। একইসঙ্গে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে মাওলানা ভাসানীর নামে নামকরণের আহ্বান জানান তারা।
মো. সামিউল ইসলাম
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
০৫ মার্চ, ২০২৫
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: