
হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি বন্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্টর নতুন নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে সাময়িক স্থগিতাদেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। এতে ট্রাম্প-হার্ভার্ড বিরোধের উত্তাপ নতুন করে বাড়ল।
নিউইয়র্ক থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
বুধবার রাতে হোয়াইট হাউস থেকে একটি ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, হার্ভার্ডে নতুন করে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ঢুকতে দেওয়া হবে না। এমনকি বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ভিসাও বাতিল করা হতে পারে।
এতে আরো বলা হয়, ‘হার্ভার্ড এখন আর বিদেশি শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য উপযুক্ত স্থান নয়।’
এতে হার্ভার্ড দ্রুত আদালতে করা তার অভিযোগে পরিবর্তন আনে। তারা বলেছে, ‘হার্ভার্ডকে আন্তর্জাতিক ছাত্রদের কাছ থেকে দূরে রাখতে এটা সরকারের প্রথম চেষ্টা নয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির ওপর পরিকল্পিতভাবে চাপ বাড়ানো হচ্ছে, কারণ তারা সরকারের হস্তক্ষেপ মেনে নিচ্ছে না। ট্রাম্প প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসন, পড়াশোনা, শিক্ষক নিয়োগ ও শিক্ষার্থী বাছাই প্রক্রিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ চেয়েছিল। কিন্তু হার্ভার্ড সেটা মানেনি। তাই সরকার এমন পদক্ষেপ নিয়েছে।’
বৃহস্পতিবার বিচারক অ্যালিসন বুরোস এক আদেশে ট্রাম্পের ঘোষণা আপাতত কার্যকর না করার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ‘তড়িঘড়ি করে সিদ্ধান্ত কার্যকর করলে হার্ভার্ড অপূরণীয় ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।’
এছাড়া, এই একই বিচারক আগেও ট্রাম্পের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের হার্ভার্ডে ভর্তি ঠেকানোর আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন।
ট্রাম্প প্রশাসন এরই মধ্যে হার্ভার্ডের জন্য নির্ধারিত প্রায় ৩২০ কোটি ডলারের সরকারি অনুদান বন্ধ করে দিয়েছে এবং ভবিষ্যতে কোনো তহবিল না দেওয়ার হুমকি দিয়েছে।
এদিকে, শীর্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর ট্রাম্পের চাপের বিরুদ্ধে সবচেয়ে দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে হার্ভার্ড। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে হার্ভার্ডের শিক্ষার্থীদের প্রায় ২৭ শতাংশই বিদেশি। যারা বিশ্ববিদ্যায়টির রাজস্বের একটি বড় অংশ।
হার্ভার্ড আদালতে বলেছে, প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা আছে যদি এটা দেশের স্বার্থে হয়, তবে তিনি পুরো একদল বিদেশি শিক্ষার্থীদের বাধা দিতে পারেন। কিন্তু এই ক্ষেত্রে এটা দেশের স্বার্থে হয়নি। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ দেশের স্বার্থে নয়, বরং হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে সরকারের প্রতিহিংসার অংশ।
ট্রাম্প আবারো ক্ষমতায় আসার পর থেকে তিনি ও তার সমর্থকরা দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিশানা বানিয়েছেন। তাদের অভিযোগ এসব প্রতিষ্ঠান ইহুদি বিরোধিতা, উদারপন্থী পক্ষপাত ও সমালোচিত ‘ওয়োক’ মতাদর্শ ছড়াচ্ছে।
গত বুধবার ট্রাম্পের শিক্ষামন্ত্রী লিন্ডা মিকম্যান কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি প্রত্যাহারের হুমকি দিয়েছেন।
এবার এই রিপাবলিকান নেতা নিউইয়র্কের আইভি লিগ বিশ্ববিদ্যালয়টিকে টার্গেট করেছেন। কারণ, তারা ইহুদি ছাত্রদের ওপর হয়রানির অভিযোগ আমলে নেয়নি। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টির সব সরকারি সহায়তা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
তবে হার্ভার্ডের মতো প্রতিরোধ দেখায়নি অন্য শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। ট্রাম্প প্রশাসনের ব্যাপক দাবির কাছে ইতোমধ্যে নতি স্বীকার করেছে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেকেই।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: