_copy_640x360-2025-06-06-22-54-08.jpg)
টোকিওর উচ্চ আদালত ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনাকারী কোম্পানির চার সাবেক নির্বাহীর বিরুদ্ধে দেওয়া ৯২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্ষতিপূরণ আদেশ বাতিল করেছে। শুক্রবার জাপানি গণমাধ্যমগুলো এ তথ্য জানায়।
টোকিও থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
২০১১ সালের ভয়াবহ সুনামির পর ফুকুশিমা পারমাণবিক বিপর্যয়ের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় ২০২২ সালে এই চার সাবেক নির্বাহীকে ১৩.৩ ট্রিলিয়ন ইয়েন (প্রায় ৯২ বিলিয়ন ডলার) ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল দেশটির নিম্ন আদালত। মামলাটি করেছিলেন টোকিও ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানির (টেবকো) শেয়ারহোল্ডাররা।
বাদী পক্ষের অভিযোগ ছিল, পূর্ববর্তী সতর্কবার্তা আমলে নিয়ে কোম্পানির কর্মকর্তারা যদি জরুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা উঁচু জায়গায় স্থাপন করতেন, তাহলে দুর্ঘটনাটি এড়ানো সম্ভব হতো।
তবে বিবাদীরা আদালতে দাবি করেন, এমন দুর্যোগ পূর্বাভাসযোগ্য ছিল না এবং যেসব গবেষণা তা দেখানো হয়েছে, তা যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্যও নয়।
১৩.৩ ট্রিলিয়ন ইয়েনের আদেশটি ছিল জাপানে কোনো নাগরিক মামলায় সর্বোচ্চ অঙ্কের ক্ষতিপূরণ। এর মাধ্যমে ফুকুশিমা চুল্লি গুলো ভেঙে ফেলা, দূষণ অপসারণ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ছিল।
তবে শুক্রবারের রায়ে উচ্চ আদালত মন্তব্য করে, সুনামিটি পূর্বানুমানযোগ্য ছিল না, যার ভিত্তিতে মামলার আদেশ বাতিল করা হয়। জিজি প্রেসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
জাপানের বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচারিত ফুটেজে দেখা যায়, মামলার বাদী পক্ষ একটি ব্যানার ধরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। যাতে লেখা ছিল, ‘ফুকুশিমা পারমাণবিক দুর্ঘটনার দায় নিন!’
তারা এবার ২২ বিলিয়ন ইয়েন ক্ষতিপূরণ দাবি করে উচ্চতর ক্ষতিপূরণ আদেশ চেয়েছেন।
২০১১ সালের ১১ মার্চ শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর সৃষ্ট ভয়াবহ সুনামির সময় ফুকুশিমা দাইইচি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ছয়টি চুল্লির মধ্যে তিনটি চালু ছিল।
কিন্তু বিশাল ঢেউয়ে ব্যাকআপ জেনারেটরগুলো প্লাবিত হয়ে কুলিং সিস্টেম বিকল হয়ে পড়ে। ফলে সচল চুল্লিগুলো গলতে শুরু করে, যা ছিল চেরনোবিলের পর বিশ্বের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিপর্যয়।
ওই শুনানিতে জাপানের উত্তরপূর্ব উপকূলে প্রায় সাড়ে ১৮ মানুষের প্রাণহানি বা নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটে।
এর আগে গত মার্চে এই ঘটনায় পেশাগত দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে অভিযুক্ত টেপকোর দুই সাবেক নির্বাহীকে চূড়ান্তভাবে খালাস দেয় জাপানের সর্বোচ্চ আদালত। এই রায়ের মাধ্যমে ফুকুশিমা দুর্ঘটনার একমাত্র ফৌজদারি বিচার প্রক্রিয়ারও অবসান ঘটল।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: