ঢাকা | সোমবার, ৫ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২

যানজটবিহীন সড়কে স্বাচ্ছন্দে বাড়ি যাচ্ছে ঈদযাত্রী

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ১৫ জুন ২০১৮ ১৬:৩৬

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ১৫ জুন ২০১৮ ১৬:৩৬

যানজটবিহীন সড়কে স্বাচ্ছন্দে বাড়ি যাচ্ছে ঈদযাত্রী

 প্রিয়জনের সাথে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে যানজটবিহীন সড়কে স্বাচ্ছন্দে ও নির্বিঘেœ গ্রামের বাড়ি ছুটে যাচ্ছে মানুষ।
সপ্তাহের শুরুতেই এবার ঈদ যাত্রা শুরু হয়েছে। নাড়ির টানে মানুষের গ্রামের বাড়ি যাওয়ার জন্য অধিকাংশ মানুষ সড়ক, নৌ ও রেলপথকেই বেছে নিয়েছেন। এছাড়া অনেকে গন্তব্যে যেতে অভ্যন্তরীন রুটে বিমানকেও বেছে নিচ্ছেন।
ঈদে ঘরমুখী মানুষের যাত্রা নির্বিঘœ করতে সরকারের আগাম প্রস্তুতির কারণে রাজধানীর বহি:মুখী পথে ঈদের আগের চিরচেনা যানজট এবার আর দেখা যাচ্ছে না।
ঈদযাত্রায় যাত্রীর ঢল নেমেছে রাজধানীর স্টেশনগুলোতে। বাস, ট্রেন ও লঞ্চে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। তবে যানবাহনের বাড়তি চাপ থাকলেও সড়কে তেমন কোন যানজট নেই।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এবার ঈদে মহাসড়ক ও সড়কে যাত্রীদের চলাচলে কোন সমস্যা হচ্ছে না, যানজটও নেই। নির্দিষ্ট সময়ে ঈদে ঘরমুখো মানুষরা স্বস্তিতে বাড়ি ফিরতে পারছে।
আজ বৃহষ্পতিবার দুপুরে ঢাকা থেকে নোয়াখালী যাওয়ার পথে কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সড়কে ময়নামতিতে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি একথা বলেন।
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) সহেলী ফেরদৌস বাসসকে জানান, এবার পুলিশ, র‌্যাব ও অন্যান্য আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নজরদারির কারণে যাত্রীরা কোন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন না। স্বাচ্ছন্দেই বাড়ি ফিরছেন সবাই। এবার দালাল, প্রতারক, ছিনতাইকারী, টানা পার্টি, অজ্ঞান ও মলম পার্টির দৌরাত্ম নেই বললেই চলে। মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ঘরমুখো মানুষের নির্বিঘœ যাতায়াত এবং যানজটরোধে ট্রাফিক ব্যবস্থা সার্বক্ষনিক পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানান তিনি।
গ্রামের বাড়িতে পবিত্র ঈদ-ঊল- ফিতর উদযাপনে মানুষ এখন রেল স্টেশন, বাস টার্মিনাল ও সদর ঘাটে ভিড় করছেন। যারা রাজধানী ছাড়ছেন তাদের চোখেমুখে ছিল উচ্ছ্বাস আর আনন্দ। কাঁধে ব্যাগ, কেউ পরিবারের সদস্য নিয়ে আর কেউবা একাই ছুটছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সরকারি শেষ কর্মদিবস। দিনভর রাস্তায় ছিল ঘরমুখো মানুষের ঢল তবে দুপুরের পর থেকে এ ঢল আরও বাড়তে থাকে। ইট-পাথরের শহর ছেড়ে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছে রাজধানীবাসী।
বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মিয়াজাহান আজ বাসসকে বলেন, আজ শেষ কর্মদিবসে উত্তরবঙ্গের রাজশাহী, রংপুর ও লালমনিরহাট রুটের ট্রেন ছাড়া অন্য সব রুটে রেল সময়মতো ছেড়ে গেছে। বিগত কয়েক দিনের চেয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে কমলাপুর স্টেশনে ভির বেশি ছিল। অফিস শেষে সব প্রতিষ্ঠান ছুটি হওয়ায় আজই সবাই বাড়ি ফিরছেন। যাত্রীদের যেন কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
তিনি বলেন, অধিকাংশ ট্রেন সময়সূচি অনুযায়ী নির্দিষ্ট গন্তব্যে ছেড়ে যাচ্ছে। এবছর ট্রেনের টিকেট কালোবাজারী সম্পূর্ণরুপে বন্ধ করা হয়েছে এবং ঈদ যাত্রার অনেক আগে থেকেই সিডিঊল অনুযায়ী ট্রেনের টিকেট বিক্রি করা হয়।
অন্যদিকে সদরঘাটে আগের দিনগুলোর তুলনায় আজ বৃহস্পতিবার যাত্রীর চাপ অনেক বেড়েছে। দুপুরের পর থেকে গুলিস্তান থেকে সদরঘাট এলাকায় ঘরে ফেরা মানুষের ঢল দেখা যায়। যেন ঘরে ফেরা মানুষের জন¯্রাত নেমেছে রাজধানীতে।
শিমুলিয়া ও মাওয়া ঘাটে যাত্রীরা দীর্ঘ সময় ফেরির অপেক্ষায় না থেকে লঞ্চে নদী পার বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করছে। যদিও নদী পথে লঞ্চ অপেক্ষা ফেরিতে নিরাপদ বেশি। তবুও অনুকূল আবহওয়া মনে করে দ্রুত নদী পার হওয়াসহ সবদিকেই পদ্মা নদী পার হতে লঞ্চেই এখন যাত্রীরা বেশি ভিড় করতে দেখা যায়।
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে এখন রাজধানী থেকে ঘরেফেরা মানুষের উপচেপড়া ভিড়। প্রতিদিন এ ঘাট দিয়ে দক্ষিাঞ্চলের ২১ জেলার ৪০-৫০ হাজার যাত্রী কর্মস্থল থেকে ঘরে ফিরছে। তবে ফেরি ঘাটের চেয়ে লঞ্চঘাট দিয়েই বেশি যাত্রীদের নদী পাড় হতে দেখা যায়।
নৌ পথে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় রয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড ও র‌্যাব।
সদরঘাটে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। একজন কর্মকর্তা সার্বিক পরিস্থিতি মনিটরিং করছেন। এছাড়া সদরঘাটে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন। ঈদে যাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে পুলিশের সাথে কাজ করছে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরাও।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: