ঢাকা | সোমবার, ৫ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২

সিরাজদিখানে ইউপি চেয়ারম্যানের খাসকামরায় ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী ধর্ষনের অভিযোগ

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ২৬ জুলাই ২০১৮ ২১:২৯

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ২৬ জুলাই ২০১৮ ২১:২৯

সিরাজদিখানে ইউপি চেয়ারম্যানের খাসকামরায় ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী ধর্ষনের অভিয

সিরাজদিখানে ইউপি চেয়ারম্যানের খাসকামরায় ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী ধর্ষনের অভিযোগ

মো: রোমান হাওলাদার,সিরাজদিখান থেকে- 

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার কোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের খাসকামরায় ৮ম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে  বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলার কোলা ইউনিয়নের কোলা গ্রামের রিক্সা চালক মুন্না সরদারের স্কুল পড়ূয়া মেয়ের সাথে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ধর্ষক ওই ইউনিয়ন পরিষদের হোল্ডিং প্লেট বিতরণকারী এবং টংগীবাড়ী উপজেলার বেতকা গ্রামের বাসিন্দা সাজিদ (২৫)।

বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের পর ওই ধর্ষক কৌশলে ধর্ষণের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে রাখে। পরে মেয়েটিকে ধর্ষনের ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে কয়েকবার ধর্ষণ করে কোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়রাম্যান মীর লিয়াকত আলীর খাসকামরায়।

ঘটনাটি ঘটে গত ছয়মাস পূর্বে। ওই ইউনিয়নের চেয়রাম্যান মীর লিয়াকত আলী ধামাচাপা দিয়ে রাখলেও বতর্মানে ধর্ষনের ভিডিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।  এ নিয়ে এলাকায় ব্যপক গুঞ্জন ছড়িয়েছে।  

ধষিতা জানান, আমি ঐ ছেলেকে চিনতাম না । প্রায় ছয় মাস পূর্বে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা মোঃ বাবু অসুস্থ্য থাকায় তার আপন ভাগ্নি মলি আক্তার ভারপ্রাপ্ত উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করত। তখন মলি আক্তার আমাকে প্রায় কম্পিউটার শেখার কথা বলত। তাই আমি মলি আপুর সাথে কম্পিউটার শেখার জন্য তার সাথে ইউনিয়ন পরিষদে যেতাম। কম্পিউটার শেখার সময় ঐ ছেলে আমার সাথে নানা দুষ্টামি করত আমার গায়ে হাত দিতো। আমি মলি আপুকে বলতাম।

মলি আপু কিছু হবেনা বলতো। কয়েক দিন পরে মলি আক্তার (আপু) বলেন ঐ ছেলেদের খাবার রান্না করে দিতে। আমাকে অনেক টাকা দিবে।

তিনি আরো বলেন, তোর মা আয়ার কাজ করেন তুই ওদের খাবার রান্না করে  দিলে ওরা তোকে অনেক টাকা দিবে। তোকে ভালো মোবাইল কিনে দিবে। তখন ঐ ধর্ষক সাজিদ আমাকে ভালো ভালো কথা বলত এবং আমার সাথে প্রেম করত।

প্রায় সময় সাজিদ আমাকে চুমু করতো, জড়িয়ে ধরত এবং জড়িয়ে ধরে ছবি তুলত আর এরই মধ্যে একদিন আমার সাথে এসব ঘটনা করে। এসব ঘটনার সাথে সাথে আমি মলি আপুকে সব বলি মলি আপু বলেন, আর কারো কাছে যেন না বলি। তার পর থেকে আমি আর কোন দিন ঐ ইউনিয়ন পরিষদে যাই নাই। সাজিদ আমাকে ফোন দিতো আমি ওকে বলেছি আপনে আমার সাথে খারাপ কাজ করেছেন। আপনে আমাকে আর কোন দিন ফোন দিবেনা তার পরে আমি আমার ফোন নাম্বার বন্ধ করে দেই। 

ধর্ষীতার মা জানান, মলির সহযোগিতায় চেয়ারম্যানের খাসকামরায় আমার মেয়ের জীবনটা নষ্ট করে দিল ঐ লম্পট সাজিদ। মলি ও চেয়ারম্যান সব জানে। কিন্তু এখন আমার মেয়ের সর্বনাশ হয়ে গেল। আমি এর বিচার চাই, মলি আমার মেয়েকে চেয়ারম্যান অফিসে বার বার ডেকে নিয়ে এই সর্বনাশ করল।

চেয়ারম্যান তার ব্যক্তিগত রুমে এই লোক গুলাকে থাকতে দিতো। চেয়ারম্যানের অফিসে আমার মেয়ের এই সর্বনাশ হলো আমি এর বিচার চাই।

এ ব্যাপারে এলাকাবাসী অনেকেই বলেন, ইউপি সচিব ও মলির সহযোগিতায় এই কু-কৃত্তি ঘটিয়েছে। 

এব্যাপারে কোলা ৪,৫ ও ৬নং মহিলা ইউপি সদস্য রওশন আরা জানান, ঘটনাটি আমি শুনেছি। ঘটনাটি শোনার পর আমি মেয়েটাকে জিজ্ঞাসা করেছি মেয়েটা আমার কাছে বলেছে সাজিদ নাকি তাকে ধর্ষণ করেছে। ধর্ষণের ঘটনাটি  নাকি কোলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাহেবের খাসকামরায় ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে আমি খুবই লজ্জিত। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, এতোদিন শুনে এসেছি ইউনিয়ন পরিষদে বিচার সালিশ হয়। এখন শুনছি ধর্ষনও হয়। যদি ধর্ষনের বিষয়টি চেয়ারম্যান সাহেবের খাসকামরায় হয়ে থাকে তাহলে আমরা কোলাবাসী লজ্জিত।

এ ব্যপারে কোলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মীর লিয়াকত আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এসব ব্যপারে এখন আপনাদের কাছ থেকে শুনছি। ইতিপূর্বে আমি এসব ঘটনা শুনিনি বা জানিও না।

তিনি আরো বলেন, এই ছেলেকে পরিষদের হোল্ডিং ট্যাক্স কাটার জন্য এনেছিলাম।

এ ছেলের পূর্ণ ঠিকানা চাহিলে চেয়ারম্যান বলেন আমার কাছে এই ছেলের ঠিকানা নেই। এই ছেলেকে আমার কাছে যে পাঠিয়েছিল আমার সাথে তার ডিড ডুকোমেন্ট আছে।

আমার সচিব ঢাকা গেছেন। সে আসলে আমি তার ঠিকানা দিতে পারবো। সাজিদকে এখানে পাঠান টংঙ্গীবাড়ীর বজ্রজোগীনির গোলাম মোর্শেদের স্ত্রী। এজেন্টের মালিক ঐ মাহিলার সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ঢাকার বাহিরে আছেন বলেন জানান, তিনি আরো বলেন সাজিদ আমার ভাতিজা হয়।  আমি ব্যাপারটা দেখছি। 

এ ব্যপারে সিরাজদিখান থানার অফিসার ইনচার্জ (প্রশাসন) মোঃ আবুল কালাম জানান, এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: