
আব্দুর রাহিম, শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ নানা সমস্যায় জর্জরিত বগুড়ার শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ডাক্তার সংকট, নেই কোন এক্সরে মেশিন আর একমাত্র এ্যাম্বুলেন্সটি অনেক পুরাতন হওয়ায় অধিকাংশ সময় বিকল হয়ে পরে থাকে ফলে ব্যহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা।
প্রায় ৫ লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসার জন্য মাত্র ৩ জন ডাক্তার কর্মরত রয়েছেন। ফলে ৫০ শয্যা হাসাপাতালের চিসিৎসাসেবা বঞ্চিত হচ্ছেন লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষ। তারপরে ও কোন রকমে জোড়া তালি দিয়ে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে নেয়া হচ্ছে। দিনে আউটডোরে ৫ শতাধিক রোগী চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।
জানা যায়, ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের পাশে শেরপুর উপজেলার এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে আরো চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন পাশের ধুনট, রায়গঞ্জ, তাড়াশ, সলংগা, সিংড়া, নন্দিগ্রাম সহ
রায়গঞ্জ উপজেলা সহ ৮ থেকে ১০টি উপজেলার কয়েক লক্ষ সাধারণ মানুষ। এছাড়াও এই উপজেলার বিশ কিলোমিটার এলাকা হাইওয়ে রাস্তা হওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই কোন না কোন সড়ক দুর্ঘটনার রোগীদের চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। এছাড়াও ধুনট ও রায়গঞ্জ এলাকার অধিকাংশ রোগীরা এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতেই চিকিৎসা গ্রহন করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ছিল ৩১ শয্যা বিশিষ্ট কিন্ত এর গুরুত্ব অনুধাবন করে বেশ কয়েকমাস হলো (গত এপ্রিল মাসে) ৫০ শয্যা বিশিষ্ট অবকাঠামোর উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, কিন্ত এর কোন জনবল নিয়োগ দেয়া হয়নি এমনকি কোন যন্ত্রপাতি বা সরঞ্জামাদি এখনো দেয়া হয়নি। তাই নামেই শুধু ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল হলেও সকল সুযোগ সুবিধা ও জনবল কাঠামো এখনো ৩১ শয্যার রয়েছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, এখানে ১ম শ্রেনীর পদে রয়েছে ১৬ জন ডাক্তার, তারমধ্যে ০৪ জন পুরুষ ও ০৬ জন মহিলা। এ ছাড়া জুনিয়র কনসালটেন্ট ০১ জন থাকলেও এ্যানেসথেসিয়া দেয়ার (অজ্ঞানের), গাইনি ও সার্জারীর কোন ডাক্তার নেই। ১০ জন ডাক্তার পেষ্টিং নিলেও মাত্র ০৬ জন রয়েছেন কর্মরত বাকি ০৪ জন রয়েছেন প্রেষনে। আর ডাঃ নাজনিন আক্তার দির্ঘদিন যাবত রয়েছেন ছুটিতে।
ফলে লক্ষ লক্ষ লোকের চিকিৎসা সেবা ব্যহত হওয়ার পাশাপাশি কর্মরতদেরও পরতে হচ্ছে নানা বিড়ম্বনায়। একজন ডাক্তারকে দিনে ও রাতে ২৪ ঘন্টায় ডিউটি করতে হচ্ছে। শুধু ডাক্তার সমস্যায় নয় এর সাথে যুক্ত হয়েছে আরো অনেক কয়েকটি সমস্যা। ২য় শ্রেনীর ২২ টি পদের বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন ১৮ জন কর্মচারী, আর ৩য় শ্রেনীর পদে শুণ্য রয়েছেন ১৬
জন, আর ৪র্থ শ্রেনীর পদে শুণ্য রয়েছে ১০টি পদ।
এছাড়াও জুনিয়র মেকানিক্স সহ সুইপার পদ শুন্য থাকায় হাসপাতালের বিভিন্ন স্থান পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করতে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে, এমনকি ডাক্তার সহ অন্যান্যদের নিজেদেরকেই অফিস পরিস্কার করতে হচ্ছে।
হাসপাতালের একমাত্র এক্সরে মেশিনটি দির্ঘদিন ধরে বিকল থাকায় রোগীদেরকে সেবা দিতে পারছেননা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এবং হাসপাতালের একমাত্র এ্যাম্বুলেন্সটি ৯৬ সালের হওয়ায় তা অধিকাংশ সময় বিকল হয়ে পরে থাকে। তাছাড়া ওই এ্যাম্বুলেন্সটি মেন্টানেস বাবদ যে পরিমান ব্যয় হচ্ছে, তা থেকে আয় অনেক কম। তাই নতুন আরেকটি ্ধসঢ়;এ্যাম্বুলেন্স অত্যন্ত জরুরী হয়ে পরেছে।
টিএইচও ডাঃ আব্দুল কাদের জানান, নানা সমস্যার কারনে রোগীদের চিৎিসা সেবা কিছুটা ব্যহত হলেও আমরা যে কজন রয়েছে তারাই আপ্রান চেষ্টা করছি চিকিৎসা দিতে। এমনকি
আমি নিজেও রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছি। তাছাড়া এমন একটি গুরুত্বপূর্ন হাসপাতালে প্রতিদিন আউটডোরেই ৫ শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন, তাই ডাক্তার সহ সকল কিছিুই এখানে প্রয়োজন।
আমি উর্দ্ধতনকর্তৃপক্ষকে বিষয়গুলো জানিয়েছি, আশাকরছি খুব দ্রুত সমস্যাগুলোর সমাধান হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: