
ঢাকা: দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর পর নেতৃত্বের পরিবর্তন আসছে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতিতে (বিজিএমইএ)। আগামীকাল শনিবার এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বিজিএমইএর পুরনো ভবন কারওয়ান বাজারের নুরুল কাদের অডিটরিয়ামে। তবে এবার আর সমঝোতার নির্বাচন নয়, প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেই আসতে হচ্ছে নতুন নেতৃত্বকে।
পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন পর আবারও নির্বাচন হওয়ায় সাধারণ মালিকরা তাঁদের ভোটের অধিকার প্রয়োগের সুযোগ ফিরে পেয়ে বেশ খুশি। তাঁরা জানান, দেশের পোশাকশিল্প নানা প্রতিকূলতার মধ্যে থেকে অনেক উদ্যোক্তা হারিয়ে যাচ্ছে। প্রায় ছয় হাজার কারখানা থেকে দুই হাজার কারখানায় নেমে এসেছে। এসব ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা অঙ্গীকার করছেন।
জানা যায়, দুই বছর মেয়াদি এই নির্বাচনে পরিচালনা পর্ষদের ৩৫টি পরিচালক পদে ৪৪ জন প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে সম্মিলিত পরিষদের ও ফোরামের ২৬ জন, স্বাধীনতা পরিষদের ১৭ জন এবং স্বতন্ত্র একজন। স্বাধীনতা পরিষদের প্যানেল লিডার ডিজাইন অ্যান্ড সোর্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম। এ ছাড়া চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৯ জন এরই মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন হবে এই আশঙ্কায় নাম প্রকাশ করতে না চাইলেও সম্মিলিত ফোরাম প্যানেল ও স্বাধীনতা পরিষদের নেতারা জানান, অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন হওয়ায় বিশ্বজুড়ে দেশের পোশাক খাতের ভাবমূর্তি বাড়বে। এ ছাড়া উদ্যোক্তাদের অধিকারের জায়গাটুকুও সম্মানিত হলো। তবে স্বাধীনতা পরিষদ মনে করে এর ফলে বিজিএমইএর জবাবদিহি আরো মজবুত হবে। নির্বাচিত নেতারা বিজিএমইর সংকট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন।
২০১৫ সালে সমঝোতার মাধ্যমে বিজিএমইএর নেতৃত্ব নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়ার পর প্রতিদ্বন্দ্বী দুটি প্যানেল সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরাম সমঝোতার মাধ্যমে বর্তমান সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানকে সভাপতি করে একটি পরিচালনা পর্ষদ ঠিক করেছিল। এর পর থেকে আর নির্বাচন না হয়ে তিন ধাপে এই পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ বাড়িয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
তবে এবারও সমঝোতার ভিত্তিতেই হওয়ার কথা থাকলেও স্বাধীনতা পরিষদ নামে তৃতীয় একটি মোর্চা ১৮ জন পরিচালক পদপ্রার্থী করে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ায় বিজিএমইএকে নির্বাচনের দিকে হাঁটতে হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতা কাল বহুল কাঙ্ক্ষিত নির্বাচন। বিজিএমইএর কারওয়ান বাজারের পুরনো ভবনের নুরুল কাদের অডিটরিয়ামে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। একই দিন নির্বাচন শেষে প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণা করা হবে। এদিকে ২০১৫ সালে দুই প্যানেলের সমঝোতায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী মেয়াদে সভাপতি হবেন ফোরাম থেকে। সেই অনুযায়ী ফোরামের শীর্ষ নেতারা সভাপতি পদের জন্য মোহাম্মদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবানা হককে নির্বাচিত করেছেন। তিনি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের সহধর্মিণী।
এর আগে গত ৫ জানুয়ারি ২০১৯-২১ সময়ে নির্বাচনের জন্য পরিচালনা বোর্ড গঠন করা হয়। গত নির্বাচনের মতো এবারও বিটিএমএর সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর আলামিন নির্বাচনী বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন। অপর দুই সদস্য হলেন এমসিসিআইর সভাপতি নিহাদ কবির ও চট্টগ্রামভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এএসএম নাইম।
এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা এক হাজার ৯৫৫ জন। আগামী ১১ এপ্রিল এই নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে। এরপর ১৮ এপ্রিল অফিস বেয়ারার নির্বাচন এবং ২১ এপ্রিল দায়িত্ব হস্তান্তর।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: