
ঢাকা: দিলশাদ সম্পা। একজন নারী উদ্যোক্তা। হাল ছাড়বার পাত্র নন তিনি। রেস্তরাঁ ব্যবসায় পড়েছিলেন লোকসানের মুখে। তবুও দমে যাননি তিনি। ফের নতুন করে শুরু করেছেন। দিয়েছেন বিউটি পার্লার। নাম ‘টু ফেসড বিউটি জোন’।
পুরান ঢাকার ঢাকেশ্বরী সড়কে তার এই পার্লার। গত বছরের জুনে চালু হওয়া পার্লারটি গ্রাহকদের আস্থা অর্জন করেছে ইতিমধ্যে। সেই সঙ্গে পার্লারটিতে ১৪ জন বিউটিশিয়ানসহ মোট ১৬ জন কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন।
কঠোর পরিশ্রমী তিনি। সেই সঙ্গে জেনে বুঝে এসেছেন এই ব্যবসায়। তিনি বলেন, যেকোনো কাজের জন্যই জ্ঞান থাকা আবশ্যক। না বুঝে ব্যবসায় নামলে যেমন লোকসানের সম্ভাবনা থাকে। ঠিক তেমনি থাকে মান হারানোর। সম্পা অনেক ধরনের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। শুধু তাই নয়, গ্রাহককে তিনি মনে করেন আত্মীয়। আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখতে দেন সাধ্যমতো সেবা।
ব্যবসার পাশাপাশি তিনি একজন মা। তার ঘরে রয়েছে দুটি সন্তান। ছেলে মোস্তফা ওয়াসিফ (৮) ও মেয়ে মোবাস্সেরা (৭)। ব্যবসার কাজে সব সময় ব্যস্ত থাকতে হয়। সকাল প্রায় ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কাটাতে হয় পার্লারে। জানান অনেক ভালো একজন শাশুড়ি পেয়েছেন তিনি। তারাই মূলত দেখাশোনা করেন সন্তানদের। তার স্বামীর নাম মো. জুয়েল চৌধুরী। তাদেরও রয়েছে পারিবারিক ব্যবসা। তবে নতুন এই অভিযাত্রায় সব সময় সঙ্গে পেয়েছেন স্বামীকে।
রেস্তরাঁয় ব্যবসায় লোকসানের কারণ হিসেবে বলেন, পার্কিং না থাকা। সেই রেস্তরাঁর ডেকোরেশন রেখেই করেছেন পার্লার। তিনি বলেন, আমি সাধারণত অন্যান্য পার্লার থেকে টাকা কম রাখার চেষ্টা করি। অল্প লাভ করে অধিক গ্রাহকের সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপনই আমার লক্ষ্য।
নতুন যারা এই পেশায় আসতে চান তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, এটি অবশ্যই একটি লাভজনক ব্যবসা। তবে বুঝতে হবে আপনি কোন এলাকায় ব্যবসাটা দাঁড় করাতে যাচ্ছেন। সেই এলাকার মানুষের মনমানসিকতা, অর্থনৈতিক অবস্থাসহ সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে পার্লারের কাজ জেনে আসা। বিউটিশিয়ানকে যেমন দক্ষ হতে হবে। সেই সঙ্গে দক্ষ হতে হবে নিজেকে। আর বিউটি প্রোডাক্ট সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে প্রচুর। বাজারে নতুন নতুন প্রোডাক্ট আসছে। এগুলো কোনটা গ্রাহকদের জন্য ভালো সেটা জানতে হবে। তিনি আরো বলেন, যেসব নারী উদ্যোক্তা স্বাবলম্বী হতে চান তাদের জন্য এই পার্লারের পেশা অনেক ভালো ফল বয়ে আনতে পারে।
আত্মপ্রত্যয়ী এই নারী নিজের স্বপ্ন সম্পর্কে বলেন, বাংলাদেশে এখনো ম্যাসাজিং পপুলার হয়নি। ম্যাসাজিং এর ফলে বাড়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। বেড়ে যায় কর্মক্ষমতা। আমি চাই দেশে এটির প্রচলন বাড়ুক। আমার পার্লারে এটিকে আমি সাধারণ মানুষের হাতের নাগালের মূল্যে নিয়ে আসতে চাই। তিনি আরো বলেন, যেটাই করব সততার সঙ্গে করব। স্বচ্ছতার সঙ্গে করব।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: