ঢাকা | মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২
আগুন দেওয়ার সময় প্রথমে চারজনের নাম আসে পরে তা পাঁচজন হয়

নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ১৬ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:৫৭

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ১৬ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:৫৭

নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যায় ‘সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে’ রোববার রাতে ফেনীর আদালতে জবানবন্দি দেন দুই আসামি নূর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম
নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যায় ‘সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে’ রোববার রাতে ফেনীর আদালতে জবানবন্দি দেন দুই আসামি নূর উদ্দিন ও শাহাদাত


নুসরাত জাহান রাফির গায়ে আগুন ধরানোর সময় মাদ্রাসার ছাদে পাঁচজন উপস্থিত ছিলেন বলে নিশ্চিত হয়েছে তদন্ত সংস্থা পিবিআই, তার মধ্যে অধ্যক্ষের ভাগ্নি উম্মে সুলতানা পপিও ছিলেন।

মৃত্যুশয্যায় নুসরাত ঘটনাস্থলে একজনকে চম্পা নামে ডাকার যে কথা বলেছিলেন, ওই চম্পা আসলে পপি বলে এখন নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ফেনী পিবিআইর অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান।

দুদিন আগে সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলেছিলেন, “ওই দিন অন্তত চারজন বোরকা পরে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এতে অন্তত একজন মহিলা ছিল, এটা নিশ্চিত।”

তিনি সোমবার বলেন, “আগুন দেওয়ার সময় প্রথমে চারজনের নাম পাওয়া গেলেও তদন্তকালে নিশ্চিত হওয়া গেছে পাঁচজন ছিল। এই পাঁচজনের মধ্যে দুইজন নারী।”

এই দুই নারীরই একজন নুসরাতের মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার ভায়রার মেয়ে পপি বলে জানান ফেনীর পিবিআই কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান, এজাহারে নাম না থাকলেও যাকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয় আগেই।

নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের করা মামলায় আসামি হিসেবে আটজনের নাম উল্লেখের পাশাপাশি বোরকা পরা অজ্ঞাতনামা চারজনের কথা বলা হয়েছিল।

দেহের ৮০ শতাংশে আগুনের ক্ষত নিয়ে পাঁচ দিন লড়ে হার মানতে হয় নুসরাত জাহান রাফিকে
দেহের ৮০ শতাংশে আগুনের ক্ষত নিয়ে পাঁচ দিন লড়ে হার মানতে হয় নুসরাত জাহান রাফিকে

দেহে আগুনের ক্ষত নিয়ে হাসপাতালে থাকার সময় নুসরাত বলেছিলেন, মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে বোরকা পরা কয়েকজন তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। মুখ ঢাকা থাকায় তাদের তিনি চিনতে পারেননি, তবে তাদের কথায় একজনকে চম্পা বলে ডাকতে শুনেছিলেন।

গত ৬ এপ্রিল এই ঘটনা ঘটার পর এই ‘চম্পা’ শম্পা নামে কেউ কি না, তা খতিয়ে দেখছিলেন পিবিআই কর্মকর্তারা; অধিকাংশ আসামিকে গ্রেপ্তার এবং তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর এখন তারা নিঃসংশয় যে পপিকেই সেদিন চম্পা নামে ডাকা হয়েছিল পরিচয় আড়াল করার উদ্দেশ্যে।

মনিরুজ্জামান বলেন, “ঘটনার পর সন্দেহভাজন হিসাবে পপিকে গ্রেপ্তার করা হলেও তার নাম শম্পা কি না, সেটা নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল। তদন্তে নিশ্চিত হওয়া গেছে এই পপিই শম্পা। আসামিরা শম্পা নামটি কৌশল হিসাবে ঘটনার সময় ব্যবহার করে, যা নুসরাত শুনে জবানবন্দিতে বলে।”

নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার পর গত ৯ এপ্রিল পপিকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতেও নেওয়ার অনুমতি

অধ্যক্ষ সিরাজ, নুর উদ্দিন, শামীম ছাড়া গ্রেপ্তার এজাজারভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মাকসুদ আলম, মাদ্রাসাটির শিক্ষক আফছার আহমেদ, মাদ্রাসাটির ছাত্র জাবেদ হোসেন ও জোবায়ের আহমেদ।

এজাহারভুক্ত আট আসামির মধ্যে হাফেজ আবদুল কাদের নামে একজন এখনও পলাতক।

পিবিআই কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, “তদন্তে বেশ অগ্রগতি হয়েছে। যারা আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন, তারা বেশ কয়েকজনের নাম বলেছেন যারা এই ঘটনার আগে ও পরে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করেছে।”

গত শনিবারের সংবাদ সম্মেলনে বনজ মজুমদার বলেছিলেন, এই হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মোট ১৩ জন জড়িত ছিলেন।

হত্যাকাণ্ডের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, “তারা দুটি কারণে নুসরাতকে পুড়িয়ে মারার পরিকল্পনা করে। এর একটি হচ্ছে অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে মামলা করে আলেম সমাজকে হেয় করা। আর অপরটি হচ্ছে শাহাদত হোসেন শামীমের প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা।”

ইসলামিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে গত ২৬ মার্চ নুসরাতের মা শিরীনা আক্তার মামলা করেছিলেন। পরদিন সিরাজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ওই মামলা প্রত্যাহার করতে নুসরাতকে চাপ দেওয়া হলেও প্রতিবাদী এই তরুণী তাতে সাড়া দেননি বলে ৬ এপ্রিল পরীক্ষার হল থেকে ছাদে ডেকে নিয়ে তার গায়ে আগুন দেওয়া হয়। শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যাওয়া নুসরাত নবন্দি দেন দুই আসামি নূর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম
নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যায় ‘সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে’ রোববার রাতে ফেনীর আদালতে জবানবন্দি দেন দুই আসামি নূর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম

অধ্যক্ষ সিরাজ, নুর উদ্দিন, শামীম ছাড়া গ্রেপ্তার এজাজারভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মাকসুদ আলম, মাদ্রাসাটির শিক্ষক আফছার আহমেদ, মাদ্রাসাটির ছাত্র জাবেদ হোসেন ও জোবায়ের আহমেদ।

এজাহারভুক্ত আট আসামির মধ্যে হাফেজ আবদুল কাদের নামে একজন এখনও পলাতক।

পিবিআই কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, “তদন্তে বেশ অগ্রগতি হয়েছে। যারা আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন, তারা বেশ কয়েকজনের নাম বলেছেন যারা এই ঘটনার আগে ও পরে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করেছে।”

গত শনিবারের সংবাদ সম্মেলনে বনজ মজুমদার বলেছিলেন, এই হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মোট ১৩ জন জড়িত ছিলেন।

হত্যাকাণ্ডের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, “তারা দুটি কারণে নুসরাতকে পুড়িয়ে মারার পরিকল্পনা করে। এর একটি হচ্ছে অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে মামলা করে আলেম সমাজকে হেয় করা। আর অপরটি হচ্ছে শাহাদত হোসেন শামীমের প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা।”

ইসলামিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে গত ২৬ মার্চ নুসরাতের মা শিরীনা আক্তার মামলা করেছিলেন। পরদিন সিরাজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ওই মামলা প্রত্যাহার করতে নুসরাতকে চাপ দেওয়া হলেও প্রতিবাদী এই তরুণী তাতে সাড়া দেননি বলে ৬ এপ্রিল পরীক্ষার হল থেকে ছাদে ডেকে নিয়ে তার গায়ে আগুন দেওয়া হয়। শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যাওয়া নুসরাত ১০ এপ্রিল রাতে মারা যান।

দুই বছর আগে দাখিল পরীক্ষার সময়ও আক্রান্ত হয়েছিলেন নুসরাত। তখন তার চোখে দাহ্য পদার্থ ছুড়ে মারা হয়েছিল। ওই ঘটনায়ও নূর উদ্দিনকে সন্দেহ করা হয়। হয়।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: