
ডেস্ক,২৮ এপিল(অধিকারপত্র): সম্প্রতি শিশুদের স্ক্রিন টাইম নিয়ে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এতে তারা বলেছে, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের বাবা-মায়ের উচিত তাঁদের শিশুদের স্ক্রিন টাইম প্রতিদিন এক ঘণ্টার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা। এছাড়াও, এক বছরের কম বয়সী শিশুদের কোনো স্ক্রিন টাইম থাকা উচিত নয়।
সংস্থাটি গত বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ায় তাদের এ শতর্কতমূলক প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে। সংস্থাটি জানিয়েছে, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের স্ক্রিন টাইমের জন্য শারীরিক ক্রিয়াকলাপ, আচরণ ও ঘুমের উপর প্রভাব পড়ে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, এক বছর বয়সী ও এর কম বয়সী শিশুদের জন্য কোনো স্ক্রিন টাইম থাকা উচিত নয়। পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের জন্য প্রতিদিন মাত্র এক ঘণ্টা স্ক্রিন টাইম থাকা উচিত।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘স্ক্রিন টাইম’-এর বর্ণনা দিয়ে জানিয়েছে, কম্পিউটার, টেলিভিশন, মোবাইলসহ বিভিন্ন ডিভাইস যেগুলো দিয়ে বিনোদনহীন বিনোদন উপভোগ করা হয় এমন ডিভাইসের পর্দায় সময় ব্যয় করাকে বুঝায়।
সংস্থাটির বিশেষজ্ঞ ড. জুনা উইলামসেন বলেন, ‘শিশুদেরকে খেলাধুলায় সক্রিয় করতে হবে। যেগুলো দিয়ে শিশুরা জ্ঞান অর্জন করতে পারবে।’ তিনি আরো বলেন,‘ খেলাধুলায় শারীরিকভাবে অংশগ্রহণের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে। এক বছরের বেশি বয়স শিশুদের জন্য প্রতিদিন দেড় ঘণ্টা খেলাধুলা করা খুব জরুরি।’ তিনি কাঠামোগত ব্যায়ামের সুপারিশও করেন।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, যে শিশুরা অধিক মোটা বা যাদের ওজন স্বাভাবিক শিশুদের তুলনায় বেশি তারা একটু বড় হলেই ডায়াবেটিসের মতো রোগে আক্রান্ত হতে পারে যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।
শিশুদের বাবা-মায়েরা শিশুদের স্ক্রিন টাইম কমাতে প্রতিদিন বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারেন। শিশুদের টানা এক ঘণ্টা বসে থাকা উচিত নয়। তিন মাস বয়সী বা তাদের থেকে বড় শিশুদের জন্য প্রতিদিন অন্তত ১৪ থেকে ১৭ ঘণ্টা বিশ্রামের প্রয়োজন। এছাড়া ১১ মাস বয়সী বা তার চেয়ে বেশি বয়সীদের জন্য প্রতিদিন অন্তত ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন।
প্রকাশিত প্রতিবেদনটির প্রশংসা করেছেন সংশ্লিষ্ট অনেক বিশেষজ্ঞ। তাদের মধ্যে অধিকাংশই তাদের সুপারিশের সঙ্গে একমত।
ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন-এর মনোবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ ড. টিম স্মিথ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সামান্য তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা সুপারিশের সমালোচনা করেন।
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. অ্যান্ড্রু বলেন, ‘সব ধরনের স্ক্রিন টাইম এক সমান নয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ হলো— স্ক্রিন টাইমে অতিরিক্ত মনোযোগী হওয়ার বিষয় নিয়ে। এতে তারা ব্যবহারের সামগ্রী ও ব্যবহারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করতে ব্যর্থ হয়েছে। আমেরিকান একাডেমি অব প্যাডিয়াট্রিকিয়ানস অ্যান্ড রয়েল কলেজ অব প্যাডিয়াট্রিকস অ্যান্ড চাইল্ড হেলথ তারাও মনে করে সকল স্ক্রিন টাইম সমান নয়।’
স্ক্রিন টাইম পারিবারিক বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, সেজন্য প্রেক্ষাপট বিবেচনা করতে হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়— কম শক্তি প্রয়োগের গেমগুলো খেলাসহ বাবা-মায়ের সঙ্গে শিশুদের যোগাযোগ বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখে ডিজিটাল স্ক্রিন।
সূত্র :দ্য নিউ ডেইলি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: