ঢাকা | বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২
অর্ডার বাই সাপ্লাই, দামের চাইতে ২০-৫০ টাকা বেশী দিলেই মিলছে মাদক

থানা পুলিশের নাকের ডগায় মাদক বিক্রির হাট!

gazi anwar | প্রকাশিত: ২ আগস্ট ২০১৯ ০৪:৪৮

gazi anwar
প্রকাশিত: ২ আগস্ট ২০১৯ ০৪:৪৮

সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ

মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থানা পুলিশের নাগের ডগায় মাদক তথা ইয়াবা ট্যাবলেট ও গাজার জমজমাট ব্যবসা চলছে। থানার বিপরীত পাশের অবস্থিত সিরাজদিখান বাজারের পাশ ঘেষেই সিরাজদিখান (সরদারপাড়া) গ্রাম। এ গ্রামে অনুমান দের’শ থেকে দুই’শ পরিবারের পরিবারের বসবাস। গ্রামটি ঘনবসতি ও ওলি গলি বেশী হওয়ায় মাদক ব্যবসায়ীদের মাদক ব্যবসায় তেমন ঝামেলা বা থানা পুলিশের ধরপাড়ের ভয় নেই বললেই চলে। অপরদিকে থানা পুলিশের ধরপাকড় তেমন লক্ষ্যনীয় নয়। অথচ ব্যবসায়ীরা দিবারাত্রী তাদের ভয়নক মাদক ব্যবসা চালিয়েই যাচ্ছে। সিরাজদিখান থানা রোডের বিপরীত দিকে বাজার গামী রাস্তা ও পাঁচপীর মাজার (শিকদার মার্কেট) থেকে আবিরপাড়া গামী রাস্তা এবং শিকদার বাড়ী থেকে আবীড়পাড়া গামী রাস্তা দিয়ে প্রতিনিয়তই মাদক ক্রয় করে বের হতে দেখা যায় অনেককেই। যা পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি সীমানার বাইরেই রয়ে যায়। এতে মাদক ব্যবসায়ী ও সেবীদের ভীতিহীন চলাচল লক্ষ্য করা যায়। থানা পুলিশ মাঝে মধ্যে দু’একজনকে মাদকসহ পাকড়াও করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করলেও মূল ব্যবসায়ীরা ধরা ছোঁয়ার বাইরেই রয়ে যাচ্ছে। থানা পুলিশের সামনে মূল ব্যবসায়ীরা কিভাবে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে তা নিয়ে সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন।

স্থানীয় অনুসন্ধান এবং বেশ কয়েকজন সোর্সের সাথে কথা বলে জানা যায়, মাদক ব্যবসায়ীদের ব্যবসার সহযোগীতায় রাখা হয়েছে বেশ কয়েকজন যুবক। যারা কিনা ক্রেতা এবং পুলিশ মেন্টেইন করার দ্বায়ীত্ব পালন করে থাকে। এমনকি তাদের মাধ্যমে দামের চাইতে ২০-৫০ টাকা বেশী দিলেই ঘরে বসেই মিলছে মাদক। অভিযোগ রয়েছে এক প্রভাবশালী ব্যক্তির ছত্রছায়ায় বর্তমানে সিরাজদিখান (সরদারপাড়া) গ্রামের মোঃ দিলা সরদারের পুত্র জাহাঙ্গীর (৪৫), মোঃ জালাল সরদারের পুত্র ফয়সাল (৩০), মোতালেব সরদারের পুত্র রাকিব (৩৫), এবং দোসরপাড়া গ্রামের মৃত হাকিম আলীর পুত্র মোঃ খলিল (৩৫) সিরাজদিখান সরদারপাড়া গ্রামে স্থায়ী ভাবে বসবাস করে ইয়াবা ট্যাবলেটের ব্যবসা পরিচালনা করছে। তার মধ্যে জামাই জনি (৩০), রানা সরদার (৩২) অন্যতম সহযোগী। এছাড়া তাদের ব্যবসার সহযোগী হিসেবে উপজেলার টেংগুরিয়াপাড়া, পূর্ব রাজদিয়া, পশ্চিম রাজদিয়া (মোকামখোলা) গ্রামের বেশ কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী মাদক ব্যবসার মাদক যোগান দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, তাদের বিরুদ্ধে সিরাজদিখান থানায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলা রয়েছে এবং তারা ইয়াবা ট্যাবলেট এবং গাঁজা বিক্রয়ের অপরাধের জন্য বেশ কয়েকবার জেল হাজতও খেটেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, ইয়াবা ট্যাবলেট এখন হাতের নাগালেই মেলে। দামের চাইতে ২০-৫০ টাকা বেশী দিলেই ব্যবসায়ীদের রাখা লোকেরা এনে দিচ্ছে। এমনকি ওই লোকেরা ইয়াবা ট্যাবলেট মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অর্ডার নিয়ে সাপ্লাই করে। আইন প্রশাসনের লোকজন একটু নজর দিলেই মাদক বেচা কেনা বন্ধ করা সম্ভব।

রশুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন চোকদার এ বিষয়ে বলেন, সরদারপাড়া থেকে শুরু করে আবিড়পাড়া পর্যন্ত একটি মাদকের সিন্ডিকেট রয়েছে। এদের অত্যাচারে আমরা রশুনিয়াবাসী অতিষ্ট। এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আইনশৃঙ্খলা মিটিং তাদের কথা তুলে ধরেছি। এদের মধ্যে থেকে একাধীক মাদক ব্যবসায়ীকে পুলিশ গ্রেফতার করে চালানও করেছে। আসলে এদের গডফাদার কে? এই গড ফাদারকে ধরতে পারলেই এ এলাকা থেকে মাদক নির্মূল এবং তাদের অত্যাচার থেকে আমরা রেহাই পাবো বলে আমি মনে করি।

এ ব্যপারে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সিরাজদিখান সার্কেল) মোঃ রাজিবুল ইসলাম বলেন, মাদক ব্যবসায়ীদের নামগুলো নিলাম তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: