

ঢাকার শ্যামলী এলাকায় চাকরির সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক তরুণী।
এ ঘটনায় বাংলাদেশে নারীদের নিরাপত্তার ইস্যুটি আবার সামনে চলে এসেছে।
গত মঙ্গলবারের এই ঘটনার জের ধরে বুধবার রাতে শ্যামলী এলাকায় একটি অভিযান শুরু করে পুলিশ যা এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।
রাতেই পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
অভিযোগকারী ছাত্রীটি গ্রেপ্তারকৃতকে সনাক্ত করেছেন বলে পুলিশ জানাচ্ছে।
তাকে বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন জানানো হয়েছে বলেও পুলিশ উল্লেখ করেছে।
ধর্ষণের শিকার তরুণীর একজন সহপাঠীর সঙ্গে কথা বলেছে বিবিসি বাংলা।
তিনি জানিয়েছেন, তরুণীটি এখনো প্রচন্ড ট্রমার মধ্যে আছে।
তরুণীর সহপাঠির কাছ থেকে যতদূর জানা যাচ্ছে:
অনলাইনে একটি চাকরীর বিজ্ঞাপন দেখে ভ্যাকসিন সরবরাহকারী একটি প্রতিষ্ঠানে খন্ডকালীন চাকরির জন্য আবেদন করেন ওই তরুণী শিক্ষার্থী।
গত মঙ্গলবার বিকেলে তাকে সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হয়।
বিকেল চারটার দিকে শ্যামলীর একটি ভবনে সাক্ষাৎকার দিতে যান তিনি।
বাড়িটির ছয়তলায় উপস্থিত হয়ে তরুণীটি দেখতে পান তিনি ছাড়া আর কোন চাকুরিপ্রার্থী সেখানে নেই।
"ও ভেবেছিলো যে, অন্যরা হয়তো আগেই ইন্টারভিউ দিয়ে চলে গেছে। ও হয়তো সবার শেষে এসেছে," বিবিসিকে বলছিলেন তরুণীটির সহপাঠী।
যথাসময়ে সাক্ষাৎকার শুরু হয়। সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী তার জীবনবৃত্তান্ত দেখেন। এসময়ে তাকে কোমলপানীয় পান করতে দেয়া হয়।
তরুণীটি ভদ্রতার খাতিরে সেই পানীয় পান করেন। পানীয়টি পান করার পরই চেতনা হারান।
অচেতন অবস্থায় তরুণীটিকে ধর্ষণ করে সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী ওই ব্যক্তি এবং আরো কয়েকজন।
ধর্ষণের শিকার ওই তরুণীটির সহপাঠী জানান, "ধর্ষণ চলার সময় মাঝে মাঝেই জ্ঞান ফিরছিল তার। সে বুঝতে পারছিলো যে তার সাথে কি ঘটছিলো, কিন্তু কিছু করতে পারছিলো না ও। ওর হাত-পা কোন কিছুই নাড়া-চাড়া করতে পারছিলো না।"
ধর্ষণের পর ওই শিক্ষার্থী যাতে পুরোপুরি জ্ঞান ফিরে পায় তার জন্য তাকে চিকিৎসা দেয় ধর্ষকরা।
পরে জ্ঞান ফিরলে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়।
বাড়ি ফিরে ঘুমিয়ে পড়ে ওই শিক্ষার্থী।
বুধবার পুরোপুরি জ্ঞান ফিরলে বন্ধুদের ডেকে এ ঘটনার বিস্তারিত জানান।
এ বিষয়ে বুধবারই শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
ধর্ষণের শিকার তরুণী এবং তার বন্ধু ও সহপাঠীদের সঙ্গে নিয়ে বুধবার রাতে শ্যামলীর ওই বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ।
সেসময় মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাকী দুজনকে ধরতে অভিযান চলছে।
BBC
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: