odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Friday, 14th November 2025, ১৪th November ২০২৫

ঘাটাইলে আ'লীগের ৪৪ নেতা কর্মীর নামে চেয়ারম্যান প্রার্থীর মামলা

odhikarpatra | প্রকাশিত: ৩ March ২০২৩ ১০:৫৮

odhikarpatra
প্রকাশিত: ৩ March ২০২৩ ১০:৫৮

মোর্শেদ আলী মারুফ: টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে আ'লীগ মনোনীত এবং সদ্য সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের করা মামলায় আসামী করা হয়েছে আ'লীগের ৪৪ নেতাকর্মীসহ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতিকে। উক্ত ঘটনায় স্হানীয়ভাবে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। স্থানীয়রা বলছেন আ'লীগ মনোনীত প্রার্থীর দ্বারা যদি তাদেরই সহযোগী সংগঠনের নেতারা নিরাপদ না থাকে তাহলে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়? নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৫ নং ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা বলেন, সাগরদিঘী এমনকি ঘাটাইল জুড়ে আ'লীগের মধ্যে যে কোন্দলের সৃষ্টি হয়েছে তার প্রভাব পড়ার সম্ভবনা রয়েছে স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও সংসদ নির্বাচনেও। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে এখন উদ্বিগ্ন। কারণ নিজ দলের নেতাদের উপর হামলা থেকে শুরু মিথ্যা মামলা পর্যন্ত হয়। সেখানে আমার আপনার নিরাপত্তা কোথায়? আমরা সাধারণ মানুষ এর থেকে মুক্তি চাই। কারণ সাগরদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হেকমত শিকদারের বাড়িতে হামলার ঘটনায় স্বেচ্ছা সেবকলীগ সভাপতিসহ আ'লীগের একাধিক স্থানীয় নেতৃবৃন্দের নামে মামলা হয়েছে। এখন অবস্থাটা এমন দাড়িয়েছে যে, আমরা যদি কোন চায়ের দোকানেও বসি আর সেখানে চেয়ারম্যান বা তার প্রতিপক্ষের দোকানে এসে বসেন বা কোন আলোচনা হয় অথবা রাস্তায় দেখা হলে কোশল বিনিময়ও হয় তাহলে অন্য পক্ষ আমাদেরকে দেখে তাদের এন্ট্রি পক্ষ মনে করে আমাদের উপর হামলা হতে পারে এমনকি মামলাও। তাদের আমাদের নিরাপত্তা কোথায়? জানাগেছে, আগামী ১৬ ই মার্চ ঘাটাইলের ১৪ নং সাগরদিঘী ইউনিয়নে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান হেকমত সিকদার। প্রতিক পাওয়ার পর থেকেই এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা চলছিল। উত্তেজনা এক পর্যায়ে সহিংসতায় রূপ নেয়। গত ২১শে ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যায় বর্তমান চেয়ারম্যান হেকমত সিকদার এর বসত বাড়িতে অজ্ঞাত কিছু লোক লাঠিসোটা নিয়ে অতর্কিত ভাবে হামলা চালায়। হামলায় অনেকেই আহত হন।২৩ ফেব্রুয়ারী হামলায় ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান হেকমত সিকদার বাদী হয়ে ঘাটাইল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার নং ১২/২৭ । মামলাসূত্রে জানাযায় , বর্তমান সাগরদিঘী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেন লিটন মামলার ৫ নং আসামি। এছাড়াও আ'লীগের ৪০ এর অধিক নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়েছে। এবিষয়ে লিটন বলেন, ঘটনার দিন আমি এলাকায় ছিলাম না। তাহলে আমি মামলার আসামি হই কিভাবে? যারা ঘটনার সাথে জড়িত তারাই তো আসামি হওয়ার কথা। আর হামলার ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ফুটেজ দেখলে আসল অপরাধীরা বের হয়ে আসবে। আমি সাদামাটা জীবন যাপন করি।সত্যের পথে চলি। কারো ধার ধারিনা। সৎ পথে চলি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করি। সত্যের পথে চলি বলেই হয়তো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আমাকে পছন্দ করে সেচ্ছাসেবক লীগ এর সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছেন। দীর্ঘ দিন যাবত অত্যন্ত সততার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছি। তিনি বাংলাদেশ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আপনারা প্রশাসনের লোক। আপনারা নিরপেক্ষ তদন্ত করে সত্যিকার অপরাধীদের খুঁজে বের করে, আমার মত যদি নিরপরাধ যাদেরকে আসামী করা হয়েছে তাদেরকে মুক্তি দিন। আমি এবং অত্র ইউনিয়নের নিরপরাধ কাউকে অহেতুক হয়রানি করবেন না । সাগরদিঘী ইউনিয়নের মানুষকে শান্তিতে বসবাস করার সুযোগ করে দিন। এবিষয়ে ঘাটাইল উপজেলা আ'লীগের সদস্য জিন্নত আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঐদিন আমি ঘটনাস্থল থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে থাকার পরেও আমাকে আসামী করা হয়েছে। স্হানীয়দের কাছে জানতে পারি বিএনপির প্রার্থী শহিদুল ইসলাম তার সমর্থকদের নিয়ে খাবার আয়োজন করলে হেকমত শিকদার তার সাথে লোকজন নিয়ে গিয়ে অনুষ্ঠানে হামলা করে। পরবর্তীতে উত্তেজিত সাধারণ তার উপর হামলা করে। আর এঘটনায় আ'লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৪০ এর অধিক নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে চেয়ারম্যান হেকমত শিকদার। আ'লীগ নেতাদের নামে মামলা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হেকমত শিকদার গামছা পার্টির লোক সে তো আ'লীগ না। আমরা সাগরদীঘি ইউনিয়নের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ হেকমত শিকদারের নির্যাতনে অতিষ্ঠ।আমাদের তথা সারা বাংলাদেশের মানুষের নিরাপদ আশ্রয়স্থল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বরাবর তৃনমূল আ'লীগ নেতা কর্মী ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ও হয়রানিমুক্ত ভাবে বসবাস করার ব্যবস্থার অনুরোধ জানাচ্ছি। মামালার বাদী ইউপি চেয়ারম্যান হেকমত শিকদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হামলায় আরো বেশি লোক জড়িত ছিল। আ'লীগ নেতাদেরকে আসামী করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আ'লীগ নেতাদের নামে মামলা করিনি, আ'লীগ বিরোধীদের নামে মামলা করেছি। তারা যদি আ'লীগ করেন তাহলে আমি কি জামায়াত করি? বলেই ফোন কেটে দেন। ঘাটাইল থানার অফিসার ইনচার্জ আজহারুল ইসলাম সরকারের কাছে জানতে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: