odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Friday, 14th November 2025, ১৪th November ২০২৫

রংপুরে ব্যবসায়ী ও হিমাগার মালিকদের সিন্ডিকেট বন্ধের দাবিতে আলুচাষীদের সমাবেশ

odhikarpatra | প্রকাশিত: ১৯ February ২০২৫ ২৩:৫৮

odhikarpatra
প্রকাশিত: ১৯ February ২০২৫ ২৩:৫৮

রংপুর প্রেসক্লাব চত্বরে আলুচাষি সংগ্রাম কমিটির ব্যানারে আজ এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন আলুচাষীরা। বিভিন্ন এলাকার চাষী ও বাম রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা আলুচাষিদের বাঁচাতে ব্যবসায়ী ও হিমাগার মালিকদের সিন্ডিকেট বন্ধ করে আলুর ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

বিক্ষোভ সমাবেশে আলুচাষী সংগ্রাম কমিটি রংপুর জেলা আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন বাবলুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর ও কৃষক সংগঠনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আহসানুল আরেফিন তিতু, আলুচাষি জমশেদ আলী, রেজওয়ান শাহ, তছলিম উদ্দিন, রানা মিয়া, লক্ষ্মীকান্ত রায়, মইনুল ইসলাম ও নাসির উদ্দিন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, রংপুরসহ উত্তরবঙ্গের জমি ও আবহাওয়া আলু চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকরা প্রচুর আলু উৎপাদন করে থাকেন। কিন্তু আলুর বাম্পার ফলন হলেও চাষীরা লাভের মুখ দেখতে পারেন না। আলু যেহেতু পঁচনশীল সবজি, তাই চাষিরা বেশি দিন ঘরে আলু সংরক্ষণে রাখতে পারেন না। চাষিদের দ্রুত আলু বিক্রি করতে হয়। এ সময়ে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট আলুর বাজারে ধস নামিয়ে দেয়। ফলে নিরূপায় হয়ে স্বাভাবিক ভাবেই কৃষকরা হিমাগারে আলু রাখার চেষ্টা করেন।

চাষিরা বলেন, সিন্ডিকেটে জড়িত ব্যবসায়ী, বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিরা হিমাগার মালিকদের সঙ্গে যোগসাজশ করে হিমাগারে বেশিরভাগ জায়গা আগেই বুকিং করে রাখেন। ফলে কৃষকরা হিমাগারে চাহিদানুযায়ী আলু রাখার জন্য জায়গা পান না। এভাবে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সঙ্গে কোল্ডস্টোর মালিকদের সিন্ডিকেট যুক্ত হয়ে কৃষককে পানির দরে আলু বিক্রি করতে বাধ্য করে। এবারেও দাম কম থাকার কারণে কৃষক জমিতে আলু বেশি দিন রেখে পরিপক্ক বীজ করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু হিমাগারে বেশিরভাগ জায়গা খাবার আলুর জন্য বুকিং থাকায় বীজ আলুও কৃষকরা রাখতে পারবেন না। ফলে আগামী বছর আলু বীজের ভীষণ সংকট তৈরি হতে পারে বলে কৃষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

আহসানুল আরেফিন তিতু অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসনের তদারকির অভাবে হিমাগার মালিকরা রাতারাতি আলুর ভাড়া দ্বিগুণ করে দিয়েছে। গতবছর এক বস্তা আলুর হিমাগার ভাড়া ছিল ২৮০ টাকা, এবারে একই পরিমাণ আলু রাখার জন্য ব্যয় করতে হবে ৫৬০ টাকা। এসব অনিয়ম, দুর্নীতি ও সিন্ডিকেট দেখার কেউ নেই!

এসময় তিনি সমাবেশে কৃষক ও কৃষি রক্ষার স্বার্থে আলুচাষি সংগ্রাম কমিটির পক্ষ থেকে হিমাগার মালিক, আলুচাষি এবং জেলা প্রশাসনের একটি যৌথসভার আয়োজন করার আহ্বান জানান।

এ সময় আলুচাষী সংগ্রাম কমিটির নেতারা হিমাগারে প্রতি কেজি আলুর ভাড়া আট টাকা বাতিল করে দেড় টাকা নির্ধারণ, অগ্রিম বুকিংয়ের নামে বস্তা প্রতি ১০০ টাকা আদায় বন্ধ করা, সরকারি উদ্যোগে প্রতি উপজেলায় বিশেষায়িত বীজ হিমাগার নির্মাণ, হিমাগারে প্রকৃত আলুচাষিদের জন্য ৬০ ভাগ জায়গা বরাদ্দ, ক্ষতিগ্রস্ত আলুচাষিদের ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং সরকারি উদ্যোগে বিদেশে আলু রফতানির ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানান।

সমাবেশ শেষে সড়কের ওপর আলু ফেলে দিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত আলুচাষীরা সিন্ডিকেট দমনে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মনিটরিং ও অভিযান বাড়ানোরও দাবি জানান।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: