odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Wednesday, 19th November 2025, ১৯th November ২০২৫

ভারত ও পাকিস্তান সেনাদের কাশ্মীরে গোলাগুলি

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ২৭ April ২০২৫ ২১:৩২

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ২৭ April ২০২৫ ২১:৩২

কাশ্মীরে টানা তৃতীয় রাতের মতো ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। রোববার (স্থানীয় সময়) কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন। দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সম্পর্ক বর্তমানে বছরের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে।

শ্রীনগর থেকে এএফপি জানায়, ভারত, কাশ্মীরের পর্যটনকেন্দ্র পাহেলগামে ২২ এপ্রিলের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘সীমান্তপারের সন্ত্রাসবাদে’ মদদ দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে।

ইসলামাবাদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে দায়ী করার প্রচেষ্টা ‘গুরুত্বহীন’ এবং যেকোনো ভারতীয় পদক্ষেপের জবাব দেওয়া হবে।

এদিকে, ভারতীয় সেনাবাহিনী নৌমহড়া চালিয়েছে এবং যুদ্ধজাহাজ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ছবি প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে নিরাপত্তা বাহিনী পাহেলগাম হামলার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের খোঁজে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।

সীমান্তে পাকিস্তানের ‘উসকানিমূলক’ গুলির জবাবে ভারতীয় সেনারা ‘উপযুক্ত’ অস্ত্র ব্যবহার করে পালটা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বলে সেনাবাহিনী জানিয়েছে। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এ নিয়ে কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি।

ভারতীয় পুলিশ তিনজন সন্দেহভাজনের বিরুদ্ধে ওয়ান্টেড পোস্টার প্রকাশ করেছে। তাদের মধ্যে দুইজন পাকিস্তানি এবং একজন ভারতীয়। তারা পাকিস্তানভিত্তিক, জাতিসংঘ তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সদস্য বলে অভিযোগ।

পাহেলগাম হামলার তদন্তভার ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) হাতে নেওয়া হয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, প্রত্যক্ষদর্শীদের বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, দেশটি নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য কোনো তদন্তে অংশ নিতে প্রস্তুত।

সামরিক প্রস্তুতি ও প্রতিশোধের আভাস

ভারতীয় নৌবাহিনী জানিয়েছে, তারা দূরপাল্লার নির্ভুল হামলা সক্ষমতা যাচাই এবং প্রদর্শন করেছে। সরকারি সূত্রের বরাতে ‘দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ জানিয়েছে, ‘সামরিক প্রতিশোধ’ নেওয়া হবে এবং এর ধরন নিয়ে আলোচনা চলছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাহেলগাম হামলায় নিহতদের ‘বিচার নিশ্চিত’ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকরা কাশ্মীরকে আবার ধ্বংস করতে চায়।’

হামলার পর ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে, প্রধান স্থলসীমান্ত বন্ধ করেছে, কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাস করেছে এবং পাকিস্তানিদের জন্য ভিসা বাতিল করেছে।

জবাবে পাকিস্তানও ভারতীয় কূটনীতিক ও সামরিক উপদেষ্টাদের বহিষ্কার করেছে এবং সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করেছে, তবে শিখ তীর্থযাত্রীদের জন্য ছাড় রাখা হয়েছে।

জাতিসংঘ দুই দেশের প্রতি ‘সর্বোচ্চ সংযম’ দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে, যাতে ‘অর্থবহ পারস্পরিক সংলাপের’ মাধ্যমে সমস্যা সমাধান সম্ভব হয়।

পাহেলগাম হামলা কাশ্মীরে বিদ্রোহীদের আক্রমণের ধরনে নাটকীয় পরিবর্তন এনে দিয়েছে, যেখানে এতদিন সাধারণত ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করা হতো।

২০১৯ সালে আত্মঘাতী হামলায় ৪১ ভারতীয় সৈন্য নিহত হওয়ার পর ভারত পাকিস্তানে বিমান হামলা চালিয়েছিল, যা দুই দেশকে সর্বাত্মক যুদ্ধের মুখোমুখি নিয়ে গিয়েছিল।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: