odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Thursday, 13th November 2025, ১৩th November ২০২৫
ওয়ান পিস মাঙ্গার স্ট্র হ্যাট জলি রজার পতাকা এখন শুধু কল্পনার প্রতীক নয়, বরং বিশ্বজুড়ে তরুণদের প্রতিবাদ ও আন্দোলনের নতুন অনুপ্রেরণা। জানুন কিভাবে জনপ্রিয় এই অ্যানিমে চিহ্ন বাস্তব আন্দোলনের প্রতীক হয়ে উঠল।

ওয়ান পিস স্ট্র হ্যাট পতাকা | বিশ্বজুড়ে তরুণদের প্রতিবাদের নতুন মাঙ্গা প্রতীক

odhikarpatra | প্রকাশিত: ২৩ September ২০২৫ ১৩:৫২

odhikarpatra
প্রকাশিত: ২৩ September ২০২৫ ১৩:৫২

ওয়ান পিস মাঙ্গার স্ট্র হ্যাট জলি রজার পতাকা এখন শুধু কল্পনার প্রতীক নয়, বরং বিশ্বজুড়ে তরুণদের প্রতিবাদ ও আন্দোলনের নতুন অনুপ্রেরণা। জানুন কিভাবে জনপ্রিয় এই অ্যানিমে চিহ্ন বাস্তব আন্দোলনের প্রতীক হয়ে উঠল।

জাপানি জনপ্রিয় মাঙ্গা সিরিজ ‘ওয়ান পিস’ বিশ্বজুড়ে শুধু বিনোদন নয়, সামাজিক আন্দোলনের এক নতুন প্রতীকও হয়ে উঠছে। সিরিজের কেন্দ্রীয় চরিত্র স্ট্র হ্যাট পাইরেটস-এর পতাকা বা জলি রজার মূলত তাদের দলে অন্তর্ভুক্ত জলদস্যুদের পরিচয় হিসেবে ব্যবহৃত হলেও এখন এটি একটি রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্থান করে নিচ্ছে। ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে লন্ডন এবং জাকার্তায় ফিলিস্তিনি-পন্থী বিক্ষোভে প্রথমবারের মতো এই পতাকা দেখা যায়। তখন গাজার গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীরা জাতীয় পতাকার পরিবর্তে স্ট্র হ্যাট পাইরেটস পতাকা উত্তোলন করেন। এর পরে, ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন শহরে সরকারি নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে এই পতাকা তরুণদের হাতে ধরা শুরু করে। কিছু মাসের মধ্যেই এই প্রবণতা নেপাল, ফ্রান্স, ফিলিপাইন এবং অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে নেপালে, সেনা বা সরকারবিরোধী তরুণ আন্দোলনে এই পতাকা একটি পরিচিত চিহ্নে পরিণত হয়েছে। এতে বোঝা যায়, যুবপ্রজন্মের রাজনৈতিক অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক প্রতীকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে।

স্ট্র হ্যাট পাইরেটস পতাকা শুধুমাত্র একটি কার্টুন বা বিনোদনের চিহ্ন নয়। এটি অসাম্য, নিপীড়ন এবং সামাজিক অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতীক হিসেবে পরিচিত। ‘ওয়ান পিস’-এর নায়ক দলের মতো, যারা দারিদ্র্য, শোষণ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে, তরুণরা নিজেদের সংগ্রামের সাথে পতাকাটিকে জুড়ে দিচ্ছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই অনন্য সামাজিক প্রতীক জনপ্রিয় সংস্কৃতি এবং রাজনৈতিক প্রতিরোধকে একত্রিত করছে। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে যারা প্রচলিত রাজনৈতিক প্রতীক বা জাতীয় পতাকার প্রতি আস্থা হারিয়েছে, তারা এ ধরনের ভিন্নধর্মী প্রতীক ব্যবহার করে নিজেদের আন্দোলনকে নতুন রূপ দিচ্ছে।

  • নেপাল: প্রজাতন্ত্রের বিভিন্ন শহরে ছাত্র ও যুবকরা সরকারের নীতি, দুর্নীতি এবং নাগরিক অধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে এই পতাকা ব্যবহার করছেন।
  • ফ্রান্স ও ফিলিপাইন: সামাজিক ন্যায়বিচার, পরিবেশ ও শ্রমিক অধিকার রক্ষায় তরুণরা রাজনৈতিক সমাবেশে এই পতাকা উড়াচ্ছেন।
  • ইন্দোনেশিয়া: সরকারি নীতির বিরুদ্ধে প্রায়শই বড় আন্দোলনে এই পতাকা উল্লিখিত হয়েছে, যা প্রতিবাদকে একটি সাংস্কৃতিক ও দৃষ্টিনন্দন আকার দিচ্ছে।
  • যুক্তরাষ্ট্র: বিশেষ করে 'Black Lives Matter' আন্দোলনে এই পতাকা ব্যবহৃত হয়েছে, যা সামাজিক ন্যায় ও মানবাধিকার রক্ষার প্রতীক হিসেবে দেখা হয়।
  • ইরান: 'Women, Life, Freedom' আন্দোলনে এই পতাকা ব্যবহার করে নারীদের স্বাধীনতা ও অধিকারের পক্ষে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
  • ভারত: 'Farmers Protest' ও অন্যান্য সামাজিক আন্দোলনে এই পতাকা ব্যবহার করে কৃষকদের অধিকার ও ন্যায় বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ করা হয়েছে।

বিশ্বব্যাপী তরুণদের এই নতুন প্রতিবাদী চিহ্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত হয়েছে। এটি দেখায়, কেবল রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিবাদই নয়, সাংস্কৃতিক আইকনও আন্দোলনের শক্তি হিসেবে কাজ করতে পারে। বিশেষ করে মাঙ্গা বা এনিমে-ভিত্তিক প্রতীক তরুণদের মধ্যে দ্রুত গ্রহণযোগ্যতা পায়। স্ট্র হ্যাট পাইরেটস পতাকা প্রমাণ করছে যে, জাগ্রত যুব সমাজ কেবল রাজনৈতিক নয়, সাংস্কৃতিক প্রতীককে ব্যবহার করে প্রতিবাদকে আরও প্রভাবশালী ও বিশ্বজনীন করতে সক্ষম। একদিকে যেমন এটি বিনোদনমূলক শিল্পের প্রতীক, অন্যদিকে এটি সামাজিক ন্যায়বিচার ও রাজনৈতিক সচেতনতার শক্তিশালী প্রতীক হিসেবেও আবির্ভূত হয়েছে।

- বিশেষ প্রতিনিধি (Special National Correspondent) মোঃ সাইদুর রহমান (বাবু)



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: