
ঢাকা, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশে প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপদ আবাসন, খাদ্য নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থানে বৈষম্য বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য কার্যকর সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, মানসম্পন্ন শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবায় সহজ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত না করলে বৈষম্য আরও বাড়বে।
সামাজিক গবেষক ড. মাহমুদ হাসান জানান,
“বাংলাদেশে সুবিধাবঞ্চিতদের অধিকার পাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা প্রশাসনিক জটিলতা ও তদারকি ঘাটতি। আইন আছে, কিন্তু প্রয়োগ নেই। স্থানীয় পর্যায়ে নজরদারি জোরদার করতে হবে এবং দরিদ্রবান্ধব নীতি গ্রহণ করতে হবে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সেলিনা আক্তার বলেন,
“শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো না হলে বৈষম্য দূর করা সম্ভব নয়। শহর ও গ্রামের মধ্যে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার ব্যবধান কমাতে হবে।”
একটি এনজিও পরিচালক বলেন,
“দারিদ্র্য বিমোচনে সরকারের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি যেমন—বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, আশ্রয়ন প্রকল্প—গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কিন্তু অনেক সুবিধাভোগী বাদ পড়ে যায় বা ঠিকমতো সহায়তা পায় না। সঠিক ডাটাবেজ তৈরি করতে পারলে এই সমস্যা অনেকটা কমবে।”
পরিসংখ্যান:
- বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে দেশের দারিদ্র্যের হার ১৮.৭%।
- শহরাঞ্চলে ১২% এবং গ্রামাঞ্চলে ২৩% মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে।
- প্রাথমিক শিক্ষায় ভর্তি হার ৯৭% হলেও স্কুলছুটের হার এখনো প্রায় ১৭%।
- সরকারি হাসপাতালের বাইরে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা অনেকের জন্য ব্যয়বহুল, ফলে দরিদ্ররা চিকিৎসা না নিয়েই কষ্ট পায়।
সমাধানের পথ:
- সামাজিক সুরক্ষা বাড়ানো: সরকারি ভাতা কর্মসূচিতে স্বচ্ছতা ও প্রযুক্তি ব্যবহার বাড়াতে হবে।
- শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিনামূল্যে নিশ্চিত করা: গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্কুল ও ক্লিনিক সংখ্যা বাড়াতে হবে।
- কর্মসংস্থান তৈরি: স্থানীয় শিল্প ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ ঋণ ও প্রশিক্ষণ প্রদান জরুরি।
- আইন প্রয়োগ ও সচেতনতা: মানবাধিকার আইন কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন এবং নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: