odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪ আশ্বিন ১৪৩২
ইসরায়েলের পর্যটন শহর এইলাতে ইয়েমেনি হুতি বিদ্রোহীদের ইসরায়েলের পর্যটন শহর এইলাতে ইয়েমেনি হুতি বিদ্রোহীদের ড্রোন হামলায় আহত অন্তত ২২ জন। রেড সি উপকূলে বাড়ছে হামলার তীব্রতা।ড্রোন হামলায় আহত অন্তত ২২ জন। রেড সি উপকূলে বাড়ছে হামলার তীব্রতা।

রেড সি’র রঙ লাল: এইলাতে হুতিদের প্রতিশোধ ড্রোনে পর্যটনের রক্তাক্ত ছুটি

odhikarpatra | প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২৩:২৭

odhikarpatra
প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২৩:২৭

ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ছোড়া একটি ড্রোন ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় রেড সি উপকূলীয় শহর এইলাতে আঘাত হানার ঘটনায় অন্তত ২২ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। বুধবার রোশ হাশানাহ (ইহুদি নববর্ষ) উৎসবের শেষ প্রহরে এ হামলা হয়। ইসরায়েলি জরুরি সেবা সংস্থা মাগেন ডেভিড আদোম (এমডিএ) জানায়, অধিকাংশ আহত ব্যক্তি ড্রোন বিস্ফোরণে ছিটকে যাওয়া শার্পনেলের আঘাতে জখম হয়েছেন। গুরুতর আহতদের মধ্যে একজন ৬০ বছর বয়সী পুরুষের হাতে-পায়ে এবং এক ২৬ বছর বয়সী যুবকের বুকে আঘাত লেগেছে। আরেকজন মাঝারি মাত্রার আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে প্রকাশিত ভিডিও ও ছবিতে দেখা যায়, ড্রোনটি শহরের দোকানপাট ও রেস্তোরাঁর কাছাকাছি আঘাত হানে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) জানায়, ড্রোনটি প্রতিহত করার চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে তা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ফাঁক গলে প্রবেশ করে। এরপর সেনারা দ্রুত উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে এবং আহতদের চিকিৎসা দিতে হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়।

আক্রমণের দায় স্বীকার করেছে ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা। এক বিবৃতিতে তারা একে গুণগত সামরিক অভিযান বলে দাবি করেছে। ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যে ইসরায়েলের ক্ষতি করবে, তাকে সাতগুণ ক্ষতি ভোগ করতে হবে। হুতি সন্ত্রাসীরা ইরান, লেবানন ও গাজার অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেয়নি। এবার তারা কঠিন শিক্ষাই পাবে। এর আগে চলতি সেপ্টেম্বরের শুরুতে ইয়েমেন থেকে ছোড়া একটি ড্রোন এইলাতের রামন বিমানবন্দরের আগমন হলে আঘাত হানে। তবে তখন সেটিকে শত্রুতাপূর্ণ হিসেবে শনাক্ত করা হয়নি বলে সতর্ক সংকেত বাজানো হয়নি। ২০২৩ সালের অক্টোবর গাজায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর থেকে হুতিরা নিয়মিতই ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলকে লক্ষ্য করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে আসছে। তারা দাবি করে, ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানাতে এসব হামলা চালানো হচ্ছে। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ইসরায়েল ইয়েমেনে হুতিদের সামরিক স্থাপনা ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে হামলা চালিয়ে আসছে। সম্প্রতি এই হামলা-পাল্টা হামলার তীব্রতা আরও বেড়েছে। গত আগস্টে ইসরায়েলি বিমান হামলায় হুতিদের প্রধানমন্ত্রী আহমেদ আল-রাহাউইসহ শীর্ষ রাজনৈতিক নেতারা নিহত হন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে হুতিরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নতুন ধরণের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার শুরু করে। ইসরায়েলও জবাবে সানায় প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেস, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও জ্বালানি মজুত স্থাপনা টার্গেট করে। আল-রাহাউইর নিহত হওয়া এখন পর্যন্ত হুতি বিদ্রোহীদের সবচেয়ে শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের ক্ষতি হিসেবে ধরা হচ্ছে। ফলে ইসরায়েল-হুতি সংঘাত আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই ড্রোন হামলা শুধু শহরের অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত করেনি, বরং সাধারণ মানুষদের জীবনকে ভয় ও অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। আহতরা—বয়স্ক, যুবক, সাধারণ নাগরিক সবাই এক মুহূর্তে আতঙ্কের মুখোমুখি হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহমর্মিতা ও দ্রুত মানবিক সহায়তা অপরিহার্য, যাতে আহতরা চিকিৎসা পায়, পরিবারগুলো সান্ত্বনা পায় এবং শান্তিপূর্ণ জীবন ফিরে আসে।

- বিশেষ প্রতিনিধি (Special National Correspondent) মোঃ সাইদুর রহমান (বাবু)



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: