odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Tuesday, 18th November 2025, ১৮th November ২০২৫

ভারত কি সত্যিই হাসিনাকে ফেরত দেবে? — বিশেষ বিশ্লেষণ

odhikarpatra | প্রকাশিত: ১৮ November ২০২৫ ১৯:৪৮

odhikarpatra
প্রকাশিত: ১৮ November ২০২৫ ১৯:৪৮

 

ঢাকা, ১৮ নভেম্বর ২০২৫

নিউজ বডি:
বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পর, ভারত তাকে দ্রুত ফেরত দেবে না—এমন বিশ্লেষণ ছড়িয়ে পড়েছে আন্তর্জাতিক মঞ্চে। যদিও ঢাকার তরফ থেকে দ্রুত এক্সট্রাডিশন দাবি করা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক-আইনি বাস্তবতা সেটা সহজেই নিতে দিচ্ছে না ভারতের জন্য।

আসলে, বাংলাদেশ-ভারত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত ২০১৩ সালের প্রত্যর্পণ চুক্তিতে একটি ধারা আছে — যেটি বলে যে “রাজনৈতিক প্রকৃতির অপরাধ” হলে হস্তান্তর প্রত্যাখ্যান করা যেতে পারে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের জন্য হাসিনাকে ফিরিয়ে দেওয়া রাজনৈতিক ও কূটনীতিক রূপে ঝুঁকিপূর্ণ হবে।

ভারতের দৃষ্টিকোন থেকে, হাসিনার এবং তার পরিবারের নিরাপত্তা একটি বড় বিষয়। জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয় স্টাডিজ বিশেষজ্ঞ স্রীরাধা দত্ত স্পষ্ট বলেছেন, “যদি কখনো হস্তান্তর হয়, সেটি অনেক সীমাবদ্ধ পরিপ্রেক্ষিতে হবে — তবে ভারতে তাদের নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্ব পাবে।” একই সঙ্গে, চাথাম হাউসের দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ চিয়েতিজ বাজপয়ে ধারনা করছেন, ভারত এই মুহূর্তে “অপেক্ষা ও দেখার” কৌশল অবলম্বন করছে, যাতে আগামী নির্বাচন ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হলে তার অবস্থান পরিবর্তন করা যায়।

অন্য দিকে, ইশরাত হোসেন, একটি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ, বলছেন যে মৃত্যুদণ্ডের রায় বাংলাদেশের পাশে আরও কাঠামোগত শক্তি যোগ করেছে এবং এই রায়কে বিদেশ থেকে বিচারপ্রক্রিয়া চালানোও একটি জরুরি বার্তা হিসেবে ধরা যেতে পারে।

ভারতিয় প্রতিক্রিয়া আসলেও, তা মৃদু ও পরিমিত। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে তারা রায়টি “লক্ষ্য করেছে” এবং ভবিষ্যতে “গঠনমূলক সংলাপ”-এ আত্মনিয়োগ করার আগ্রহ পোষণ করছে, কিন্তু সরাসরি প্রত্যর্পণের প্রতিশ্রুতি দেয়নি।

বিশেষজ্ঞদের চোখে, আবারও দেখা দিচ্ছে জটিল রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সমীকরণ:

  • ভারতের আইনগত অবস্থান শক্তিশালী — প্রত্যর্পণ চুক্তিতে “রাজনৈতিক অপরাধ” ধারা আছে।
  • ঢাকা পক্ষের চাপে রাজনৈতিক মর্যাদা ও প্রতিশ্রুতি রয়েছে — বিচারপ্রক্রিয়া ও দায়প্রমাণ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার এটাকে বড় বিজয় হিসেবে দেখতে চাইছে।
  • আবার, ভারতের জন্য এটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ অভিসন্ধি — রাজনৈতিক ফাটিল বা সংঘর্ষের পথ তৈরি হতে পারে যেহেতু বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক বর্তমানে তীব্র এবং চাপে।

সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য:

  • শেখ হাসিনা নিজেই বলেন, “রায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত” এবং তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা করা আদালত “একটি রিগড ট্রাইব্যুনাল।”
  • মধ্যস্থ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত হয়তো রায়কে ভিত্তি হিসেবে নেবে—but প্রত্যর্পণ নাও হতে পারে কারণ এটি দেশীয় নির্বাচনী ও কূটনৈতিক ঝুঁকি বাড়াবে।
  • বাংলাদেশের মধ্যবর্তী সরকার চায় আইনগত নিয়মে হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে তাদের বিচার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা হোক, যা অনেকের কাছে একটি “ন্যায্য ও প্রতীকী বিজয়।”

সংক্ষেপে:
হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর ঢাকা জরুরিভাবে ভারতকে প্রত্যর্পণের চাপে রাখলেও, ভারতের আইনগত ও কূটনৈতিক অবস্থান এমন যে দ্রুত কোন ‘হাতাল ফেরত’ খুব সম্ভব বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক। তারা বলছেন, এটি একটি জটিল খেলা — আইন, রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ এবং ভবিষ্যতের নির্বাচনী ক্যালকুলেশন সব মিলিয়ে চলছে।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: