নিজস্ব প্রতিনিধি, অধিকার পত্র ডটকম
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ধানমণ্ডি থানার যুগ্ম সমন্বয়কারী জান্নাত আরা রুমির মৃত্যু নিয়ে একদিকে যেমন পরিবারের বক্তব্য এসেছে, অন্যদিকে তেমনি সুরতহাল প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য। এসব তথ্য মিলিয়ে ঘটনাটি ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন।
পুলিশ সূত্র জানায়, রুমির মরদেহ উদ্ধারের পর লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন হাজারীবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমা বেগম। একই থানার উপ-পরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান জানান, জান্নাত আরা রুমির বাড়ি নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। তার বাবা জাকির হোসেন।
পুলিশের তথ্যমতে, রুমি ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে নার্সিংয়ে পড়ালেখা শেষ করেন। পরে তিনি বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করলেও বর্তমানে কোথায় কর্মরত ছিলেন বা বেকার ছিলেন কি না—তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।
সুরতহাল প্রতিবেদনে যা পেয়েছে পুলিশ
সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মৃতের শরীরে দৃশ্যমান কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। মাথা, কপাল ও ঘাড়ে আঘাতের আলামত ছিল না। চোখ ও মুখ বন্ধ অবস্থায় ছিল। তবে গলায় অর্ধচন্দ্রাকৃতির কালো দাগ দেখা গেছে। হাত, বুক, পেট, পিঠ ও পায়ে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
পুলিশের প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী, রুমি তার কক্ষে ব্যবহৃত ওড়না দিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। তবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্তের জন্য আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে।
🧑👩👧👦 পরিবার যা বলছে
রুমির মৃত্যু নিয়ে তার পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছে পুলিশ। তার চাচাতো ভাই মেহেদী হাসান জানান, রাজধানীর জিগাতলা এলাকার ওই বাসায় একটি মেসে থাকতেন রুমি। তার জীবনে দুটি বিয়ে হয়েছিল এবং দুই সংসারই ভেঙে যায়। দুই সংসারে দুটি সন্তান রয়েছে, তবে সন্তানরা তাদের বাবার কাছেই থাকে।
তিনি আরও জানান, বুধবার রাতে রুমির রুমমেট বাড়িতে যাওয়ায় তিনি একাই ছিলেন। যদিও একই ফ্ল্যাটের পাশের কক্ষগুলোতে অন্য রুমমেটরা অবস্থান করছিলেন।
পরিবারের সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাতে কাজের বুয়া পঞ্চম তলায় ফ্ল্যাটের সামনে গেলে দরজা খোলা দেখতে পান এবং ভিতরে বাতি জ্বলতে দেখেন। ভেতরে উঁকি দিয়ে তিনি রুমিকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। এরপর তিনিই অন্যদের ডেকে তোলেন।
তদন্তের অপেক্ষা
পুলিশ জানায়, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পরই রুমির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ঘটনায় সব দিক বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত চলছে।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: