odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Friday, 14th November 2025, ১৪th November ২০২৫

সুষ্ঠু নির্বাচনের : ড. কামাল হোসেন

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ২১ April ২০১৮ ১৫:২৯

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ২১ April ২০১৮ ১৫:২৯

শুক্রবার (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে নাগরিক সংলাপে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’র ব্যানারে আয়োজিত এই নাগরিক সংলাপের আলোচ্য বিষয় ছিল ‘বাংলাদেশের সংবিধানে বিধৃত আকাঙ্ক্ষা, বিদ্যমান পরিস্থিতি ও করণীয়।’ এতে সভাপতিত্ব করেন তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ। প্রধান অতিথি ছিলেন যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান ও বিকল্প ধারার সভাপতি ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। নাগরিক সংলাপে আসা রাজনৈতিক দলের নেতারা ড. কামাল হোসেনকে তার ৮১তম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান

সময় থাকতে সভ্যভাবে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গণফোরামের সভাপতি বিশিষ্ট আইনজ্ঞ ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমাকে শেষ করে দিলেও মানুষ ক্ষমা করবে না। মানুষ চুরির হিসাব নেবেই। দেশ যেন সুষ্ঠুভাবে চলতে পারে, সেজন্য সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।’

 

ড. কামাল হোসেন ব্যাংক খাতের ঋণ কেলেঙ্কারি সম্পর্কে বলেন, ‘সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা চুরি হয়েছে শুধু একটি ব্যাংক থেকে। এত টাকা দিয়ে কী হয়! যারা চুরি করেছেন, তারা বিদেশে চলে যান। দেশত্যাগ করে সুস্থভাবে বেঁচে থাকেন এবং ভোগ করেন।’

সরকারের উদ্দেশে ড. কামাল বলেন, ‘দ্রুত ক্ষমতা থেকে বিদায় হোন। বিদেশে গিয়ে ভোগ করেন। দেশকে দেউলিয়া করে ছেড়ে দেওয়ার কোনও অধিকার আপনাদের নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ছাগল মনে করবেন না, আমাদের ঘোল খাওয়ানোর চেষ্টা করা হয়।’ তিনি বলেন, ‘দেশকে দেউলিয়া করে বেঁচে থাকা অর্থহীন। আমরা নিরব দর্শক হিসেবে দেখতে থাকব, আর দেশে গুম-খুন চলতে থাকবে। আমরা ভীত হয়ে থাকতাম, তাহলে কী দেশ স্বাধীন হতো নাকি?’

আন্তর্জাতিক এই আইন বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘জনগণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। নিজের কায়দায় করা সংসদ, তথাকথিত ক্ষমতা–একটাও থাকবে না। ১৫৩ জন তথাকথিত সাংসদদের মেনে নেওয়ার চেয়ে মরে যাওয়া ভালো।’ সংবিধান পড়ে দেখার আহ্বান জানিয়ে কামাল হোসেন বলেন, ‘সংবিধান পড়ে দেখুন, দেশের মালিক জনগণ। দেখার সময় না থাকলে অনুলিপি করে পাঠিয়ে দিচ্ছি।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম উল্লেখ না করে কামাল হোসেন বলেন, ‘আপনার উপলব্ধির ক্ষমতা আছে। জনগণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।’

বক্তব্যের শুরুতেই কামাল হোসেন জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আসা রাজনৈতিক নেতাদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘আমি স্বপ্নে ভেবেছি, এটা হওয়া উচিত। এরচেয়ে মূল্যবান আর কিছু হতে পারে না। আল্লাহর কাছে আমি কৃতজ্ঞ।’

অনুষ্ঠানে সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী গণতন্ত্র, দুর্নীতি, লুটপাট নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে সৎ নেতৃত্বের প্রয়োজন। সৎ নেতৃত্ব ছাড়া এদেশের কিছু হবে না।’

কৃষক শ্রমিক জনতা পার্টির সভাপতি আবদুল কাদের সিদ্দিকী খালেদা জিয়ার জেল হওয়ার সমালোচনা করেন। সংশ্লিষ্ট বিচারকের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এই বিচারকের বিচার হবে। ওই টাকা তছরুফ হয়নি। অব্যবহৃত হয়ে পড়ে আছে। খালেদা জিয়াকে এই মামলায় আসামি করা অন্যায়।’ যাদের অ্যাকাউন্টে টাকা, তাদের ধরার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি জনগণকে রাস্তায় মেনে সংগ্রামের আহ্বান জানান। বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর সমালোচনা করেন কাদের সিদ্দিকী।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন বলেন, ‘শুধু নির্বাচনের কথা বললে হবে না। স্থায়ী প্রধানমন্ত্রী, স্থায়ী রাজনীতি, স্থায়ী নেতৃত্বের রাজনীতি চলবে না, এটাও বলতে হবে। এগুলো জনগণকে বলতে হবে।’

বিকাল ৪টায় নাগরিক সংলাপ শুরু হয়ে শেষ সন্ধ্যা ৭টায়। এতে আরও বক্তব্য রাখেন সুলতান মুনসুর আহমদ, বাম নেতা খালেকুজ্জামান, সাইফুল হক প্রমুখ।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: