odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Friday, 14th November 2025, ১৪th November ২০২৫

ইসলামে পারস্পরিক সুসম্পর্ক রক্ষাকারীর ‘বন্ধু’র মর্যাদা

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ২২ December ২০১৮ ১৩:৪৯

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ২২ December ২০১৮ ১৩:৪৯

আল্লাহ তাআলা মানুষকে পাস্পরিক সম্পর্ক রক্ষা করার কথা বলেছেন। আত্মীয়তার সম্পর্ক অটুট রাখার কথা। যারা সুসম্পর্ক নষ্ট করে, আত্মীয়তার সম্পর্ক নষ্ট করে তাদের দোয়া কবুল হয় না। তাদেরকে মহান আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করেন না।

পক্ষান্তরে যারা পারস্পরিক সুসম্পর্ক বজায় রাখে। আত্মীয়তার সম্পর্ক অটুট রাখে তাদের জন্য রয়েছে অনেক সুসংবাদ ও মর্যাদা। এ সম্পর্কে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক উপদেশ ও ফজিলত ঘোষণা করেছেন। হাদিসে এসেছে-

– হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন আল্লাহ বলবেন, যারা আমার মর্যাদার খাতিরে পরস্পরে ভালোবাসা স্থাপন করেছে, তারা কোথায়? আজ আমি তাদেরকে আমার বিশেষ ছায়ায় স্থান দিব। আজ এমন দিন, আমার ছায়া ব্যতিত আর কোনো ছায়া নেই।’ (মুসলিম, মিশকাত)

– হজরত আবু মুসা আশআরি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘ভাল এবং মন্দ লোকের সাথে বন্ধুত্বের দৃষ্টান্ত যথাক্রমে আতর বিক্রেতা ও কামারের হাঁপরে ফুঁক দানকারীর মতো। আতর বিক্রেতা হয়তো তোমাকে এমনিতেই কিছু আতর দিতে পারে অথবা তুমি তার কাছ থেকে কিছু কিনে নিতে পার, অন্যথা তুমি তার (কাছে) সুঘ্রাণ পাবেই। আর কামারের হাঁপরের ফুলকি তোমার জামা-কাপড় জ্বালিয়ে দিতে পারে। এটা না হলেও তুমি তার ধোঁয়ার গন্ধ পাবেই।’ (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত)

– হজরত মুয়াজ ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন- যারা আমার সন্তুষ্টির উদ্দেশে পরস্পরকে ভালোবাসে, আমার উদ্দেশে দ্বীনি মজলিসে মিলিত হয়, আমার উদ্দেশে পরস্পরে সাক্ষাৎ করে এবং আমার উদ্দেশ্যেই নিজেদের মাল-সম্পদ ব্যয় করে, আমার ভালোবাসা তাদের জন্য সুনিশ্চিত।’ (মুয়াত্তা মালেক, মিশকাত)

সুতরাং মুসলিম উম্মাহর উচিত কাউকে ভালোবাসলে তা আল্লাহর জন্য ভালোবাসা। আবার কাউকে ঘৃণা করলেও আল্লাহর জন্য ঘৃণা করা। মানুষ যখনই কাউকে আল্লাহর জন্য ভালোবাসবে, আল্লাহ তাআলা ওই বান্দার বন্ধুত্বে রূপান্তরিত হয়।

পরিশেষে…

বন্ধুত্বের মর্যাদা ও ভালোবাসার কথা প্রকাশ করতে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপদেশ প্রদান করেছেন। আর তাহলো-

হজরত মিকদাদ ইবনে মাদিকারাব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন কোনো ব্যক্তি অপর কোনো (মুসলমান) ভাইকে মহব্বত করে, তখন তাকে যেন জানিয়ে দেয় যে, সে তাকে মহব্বত করে।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি, মিশকাত)

ভালোবাসার কথা জানিয়ে দেয়ার মাধ্যমে মানুষের পাস্পরিক সুসম্পর্ক আরো বেশি মজবুত হয়। সৃষ্টি হয় ফেতনা-ফাসাদমুক্ত সমাজ। বন্ধু হিসেবে কাউকে গ্রহণ করার সময় প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ হাদিসটিও স্মরণ রাখতে হবে।

হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছেন, ‘ঈমানদার ব্যতিত কাউকেও বন্ধু হিসেবে গ্রহণ কর না। আর পরহেযগার ব্যতিত অন্য কেউ যেন তোমার খাদ্য না খায়।’ (আবু দাউদ, মিশকাত)
হাদিসে ঘোষিত ফজিলত লাভে বন্ধু নির্বাচনে তাকওয়া ও পরহেজগারির প্রতি লক্ষ্য রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: